একটা সময় ছিল যখন ভ্রমণবিলাসীরা দী-পু-দা কেই ঘুরতে যাওয়ার একমাত্র ঠিকানা বলে মেনে নিয়েছিল। ভ্রমণের সবটুকু জুড়ে কেবল এই তিনটে জায়গারই যেন রাজত্ব! কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষের স্বাদের বদল ঘটেছে বেশ অনেকখানি। এখন অফবিট ভ্রমণেই আনন্দ খুঁজে পান বাঙালিরা। লম্বা ছুটির অপেক্ষাও তেমন নেই আর। কোনোমতে সপ্তাহের শেষে দু-তিন দিন ছুটি পেলেই মন করে ওঠে পালাই পালাই। চেনা ঘিঞ্জি পরিবেশ ছেড়ে কয়েকদিন প্রকৃতির কোলে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নেওয়াটাই এখন পর্যটকদের কাছে আরামদায়ক। এমনই একটা জায়গার হদিশ রয়েছে কলকাতা থেকে মাত্র ২০০ কিমি দূরত্বে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির কোলেই।
পাহাড়ের কোলে শান্ত নিরিবিলি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপহার নিয়ে রয়েছে ঢাঙ্গীকুসুম । বেলপাহাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সবুজে ঘেরা ছোট্ট গ্রাম। শুধু তাই নয়, সহজ সরল আদিবাসী মানুষের অনাড়ম্বর জীবনযাত্রা যেন আগলে রেখেছে এই গ্রামকে। তবে আজকের শান্ত স্নিগ্ধ চেনা পরিবেশটা কয়েক বছর আগেও অপরিচিত ছিল পর্যটকদের কাছে। কেন? আসলে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই গ্রামটি একসময় ছিল মাওবাদীদের ডেরা। তাই পা পড়ত না পর্যটকদের। কিন্তু পরিস্থিতি এখন বেশ স্বাভাবিক। সবুজ পাহাড় আর দু’পাশে ঘন সবুজ শাল-মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা ঢাঙ্গীকুসুমের পথ যেন হাতছানি দিয়ে চলেছে ভ্রমণবিলাসীদের। সঙ্গে টিলার চড়াই উতরাই তো রয়েইছে। এছাড়া নিস্তব্ধ এই গ্রামের মৌনতা ভাঙছে ডুংরি আর হুধহুদি ঝর্নার কুলুকুলু শব্দ। এককথায় প্রকৃতিকে মন ভরে উপভোগ করার দারুন এক ঠিকানা!
কী, এবার মনটা যাই যাই সুর তুলছে? হাওড়া থেকে ট্রেনে ঝাড়গ্রাম বা ঘাটশিলায় পৌঁছে যান। সেখান থেকে গাড়ি করে এক বা দেড় ঘণ্টায় বেলপাহাড়ি হয়ে পৌঁছে যান এই গ্রামে। কিংবা ঝাড়গ্রাম থেকে বাসে করে চলে আসুন ৩৭ কিলোমিটার দূরের বেলপাহাড়ি থেকে। এখান থেকেও গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারেন। থাকার জন্য পেয়ে যাবেন একাধিক হোম-স্টের সুবিধাও। তাহলে! সপ্তাহের শেষের দুদিনের ছুটির প্ল্যানে অবশ্যই রাখুন বেলপাহাড়ির ঢাঙ্গীকুসুমকে।