ভ্রমণ বা ব্যবসার জন্য উপমহাদেশের দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা যেতে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা বাধ্যতামূলক নয়। শ্রীলঙ্কা গিয়েই ৩০ দিনের অন এরাইভাল ভিসা নেয়া যায়। তবে ঢাকাস্থ শ্রীলঙ্কা দূতাবাসে গিয়ে আগে থেকেই ভিসা সংগ্রহ করে নেয়া শ্রেয়, কারণ শ্রীলঙ্কা গিয়ে ভিসা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যায় না।
ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- যথাযথভাবে পূরণ কৃত ভিসা আবেদন ফরম,
- অন্তত ছয় মাস মেয়াদ আছে এমন বৈধ পাসপোর্ট,
- পাসপোর্টের প্রথম পাঁচ পৃষ্ঠার ফটোকপি,
- ফিরতি বিমান টিকেট এবং তার ফটোকপি,
- শ্রীলঙ্কা থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্র বা অফার লেটার এবং
- সাম্প্রতিক তোলা দুই কপি রঙিন ছবি।
ভিসা ফি: ২,১০০ টাকা
এন্ডোর্সমেন্ট:
৩০ দিনের ভ্রমণের জন্য ১০০০ ডলারের এন্ডোর্সমেন্ট এবং দুই সপ্তাহের ভ্রমণের জন্য ৫০০ ডলারের এন্ডোর্সমেন্ট বা এন্ডোর্সমেন্টের রসিদ জমা দিতে হবে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে পর্যাপ্ত ব্যাল্যান্স থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে দেয়া সনদ জমা দিতে হবে। তবে ভিসা আবেদনকারীর স্পন্সর থাকলে এন্ডোর্সমেন্ট প্রয়োজন হবে না।
বিজনেস ভিসা
বিজনেস ভিসার ক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রদেয় সব কাগজপত্রই প্রয়োজন হবে এবং সাথে আরও কিছু কাগজপত্র দিতে হবে:
- সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বা চাকুরিদাতার তরফ থেকে লেখা একটি চিঠি জমা দিতে হবে। এই চিঠিতে ভ্রমণের উদ্দেশ্য, ভ্রমণের তারিখসহ বিস্তারিত উল্লেখ থাকতে হবে।
- শ্রীলঙ্কার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো আমন্ত্রণ পত্র।
বিনামূল্যের অফিসিয়াল ভিসা (Gratis Visa)
আন্তর্জাতিক সংস্থা বা সরকারি কর্মকর্তারা বিনামূল্যের ভিসায় শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ করতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রের সাথে অতিরিক্ত আরও কিছু কাগজপত্র দিতে হবে:
- কূটনীতিক বা অফিসিয়াল পাসপোর্ট,
- সরকারি অনুমতিপত্র,
- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ থেকে লেখা অনুরোধ পত্র (Note Verbale)।
রেসিডেন্স ভিসা
শ্রীলঙ্কার যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য রেসিডেন্স ভিসার জন্য আবেদন করা হচ্ছে সে প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ভিসা ইস্যু করার অনুরোধ জানিয়ে শ্রীলঙ্কার ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি পাঠাতে হবে। এখানে ভিসা আবেদনকারীর নাম, জাতীয়তা, শ্রীলঙ্কায় অবস্থানের মেয়াদ, কাজের ধরন ইত্যাদি উল্লেখ করেতে হবে। এছাড়া মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুপারিশও প্রয়োজন হবে।
শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের পর এক মাসের অনএরাইভাল ভিসা দেয়া হয় এবং পর্যালোচনার পর সেটাকে রেসিডেন্স ভিসায় রূপান্তরিত করা হয়। অন্য কোন ধরনের ভিসাকে রেসিডেন্স ভিসায় রূপান্তরিত করা যায় না।
সাংবাদিকদের জন্য ভিসা
- ক্যামেরা বা অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে প্রবেশের জন্য বিশেষ ডকুমেন্ট ‘কার্নে’ (carnet) জমা দিতে হবে।
- এই বিশেষ ডকুমেন্ট জমা দেয়া সম্ভব না হলে ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জামের জন্য ব্যাংক গ্যারান্টি প্রয়োজন হবে।
- কোন সরকারি সংস্থার আমন্ত্রণে সফর করলে সে সংস্থার পক্ষ থেকে একটি একটি পত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত করে জানাতে হবে যে ক্যামেরাসহ সরঞ্জামগুলো শ্রীলঙ্কা থেকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
- স্যাটেলাইট ফোনের মত সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হলে শ্রীলঙ্কার টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের অনুমতি বা লাইসেন্স আগে থেকেই নিতে হবে।
- ব্যক্তিগত ক্যামেরার ক্ষেত্রে অনুমতির প্রয়োজন নেই।
অন্যান্য ভিসা (সেমিনার/বৃত্তি ইত্যাদি)
এ ধরনের ভিসা আগে থেকে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো আমন্ত্রণ পত্র,
- বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুরোধপত্র।
ভিসা আবেদনপত্র:
শ্রীলঙ্কা দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে ভিসা আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে নেয়া যায়। আবার শ্রীলঙ্কা দূতাবাসে গিয়েও ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করা যাবে।
ডাউনলোড লিংক: http://www.slhcdhaka.org/dl_visa.php
ভিসা ইস্যু
আবেদনপত্র জমা দেয়ার পরদিন বিকাল ৩:৩০ টা থেকে ৪:৩০টা মধ্যে ভিসা ইস্যু করা হয়।
আরও জানতে
আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য শ্রীলঙ্কা দূতাবাসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
কনস্যুলার এসিস্ট্যান্ট/এটাশে/ফার্স্ট সেক্রেটারি: 02-9896353
আরও দেখুন: