লন্ডনে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ‘বেস্ট বিজনেস ওমেন অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ পেয়েছেন হৃদমিক কেয়ার ইউকে লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিউলিপ সুলতানা। বেস্ট কনজিউমার ক্যাটাগরিতে চলতি বছর সিলভার অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন তিনি। গত ২২ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উইম্বলী হিলটন হোটেলে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আয়োজক প্রতিনিধি ডেবি গিলবার্ড।
অ্যাওয়ার্ড জয়ের পর মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) হৃদমিক কেয়ার ইউকের সব কর্মকর্তা ও কেয়ার ওয়ার্কারদের নিয়ে সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে টিউলিপ সুলতানা বলেন, ‘এই অর্জনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত, এই অর্জন ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটিতে নারী উদ্যোক্তাদের আরও উৎসাহিত করবে বলে মন করি। আমি বিশ্বাস করি, কষ্ট করলে সফলতা আসবেই, তাই কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।’
২০১৩ সালে নিবন্ধিত হলেও ২০১৪ সাল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক সেবা দেওয়া শুরু করে হৃদমিক কেয়ার ইউকে। শুরুতে প্রতি সপ্তাহে ১৭ ঘণ্টা কেয়ার সার্ভিস দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪০০ ক্লায়েন্টকে কেয়ার সার্ভিস দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। যাদের মধ্যে রয়েছেন বয়োজ্যেষ্ঠ ও ডিসঅ্যাবল ব্যক্তি, নারী ও শিশু।
মাত্র ১০ বছরের ব্যবধানে দ্রুত প্রসার লাভ করায় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে হৃদমিক কেয়ারকে এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য বিবেচনা করা হয়। সেইসঙ্গে হৃদমিক কেয়ারের প্যারেন্ট কোম্পানি হৃদমিক স্কিল, কেয়ার ওয়ার্কারদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করায় এ পেশায় অনেকের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কেয়ার সার্ভিসের পাশাপাশি হৃদমিক স্কিলের প্রশিক্ষণ সেন্টারের কার্যক্রমকেও বিবেচনায় নিয়েছে জুরিবোর্ড।
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড গ্রামে জন্ম ও বেড়ে ওঠা টিউলিপ সুলতানার। তিনি বাংলাদেশের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়ো-টেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে ২০০৮ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান। পরবর্তীতে টিউলিপ সুলতানার স্বামী লন্ডন প্রবাসী কুমিল্লার নাঙ্গল কোর্টের ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা রুহুল আমীনের উৎসাহে ইস্ট লন্ডন ইউনির্ভাসিটিতে বায়ো টেকনোলজিতে অধ্যয়ন করেন। শিক্ষাজীবন শেষে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালে বায়ো-মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন টিউলিপ সুলতানা।
অন্যের অধীনে কাজ করার বঞ্চনা থেকে নিজে কিছু করার স্বপ্ন দেখতে থাকেন টিউলিপ সুলতানা, বোনের সঙ্গে একদিন কেয়ার সার্ভিসের ক্লায়েন্টকে সেবা দিতে গিয়ে কেয়ার সেন্টার গড়ার আগ্রহ তৈরি হয় তার। এ কাজে স্বামী রুহুল আমীন সবসময় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন বলে জানালেন তিনি। পরবর্তীতে পারিবারিক অর্থায়নে পূর্ব লন্ডনের ইলফোর্ডে ছোট্ট একটি কক্ষে একজন স্টাফ ও একটি টেবিল দিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে হৃদমিক কেয়ারে কাজ করছেন প্রায় ৩ শতাধিক কর্মী।