রোমানিয়া থেকে ৪ মাসে ৭৯ বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক ফেরত

২০২৩ সালের প্রথম চার মাসে ২৯৬ জন বিদেশি নাগরিককে নিজ দেশে ‘ডিপোর্ট’ বা জোরপূর্বক ফেরত পাঠিয়েছে রোমানিয়া। এই অভিবাসীদের মধ্যে ৭৯ জন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির অভিবাসন দপ্তর।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালনা করে রোমানিয়া পুলিশের জেন্ডারমেরি শাখা, অভিবাসন দপ্তর ও সীমান্ত পুলিশের কর্মকর্তারা।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোমানিয়া জেনারেল ইনস্পেক্টরেট ফর ইমিগ্রেশন জানায়, ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্যে ২৭৩ জনকে রোমানিয়ার বিমানবন্দর থেকে বিমানযোগে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া, ২৩ অভিবাসীকে ফ্রন্টেক্স অথবা রোমানিয়া পুলিশের তত্ত্ববধানে নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে।

ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের বেশিরভাগই অবৈধ উপায়ে রোমানিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করে শেনজেন জোনে প্রবেশের চেষ্টা করে পুলিশের হাতে আটক হন। এছাড়াও অনিয়মিত উপায়ে দেশটিতে অবস্থান ও কাজে নিয়োজিতদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান থেকেও অনেককে আটক করা হয়।

তাদের একটি অংশকে স্বেচ্ছায় ১৫ দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এই আইনি নোটিশ না মানায় সংশ্লিষ্টদের জোরপূর্বক তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ফেরত পাঠানোদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৯ জন বাংলাদেশের। এছাড়া পাকিস্তানের রয়েছেন ৩৭ জন। বাকিরা অন্যান্য দেশের নাগরিক বলে জানিয়েছে জেনারেল ইনস্পেক্টরেট ফর ইমিগ্রেশন (আইজিআই)।

বছরের প্রথম চার মাসে সংগঠিত এসব ‘ডিপোর্ট’ কার্যক্রম কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয় বলে জানিয়েছে বুখারেস্ট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গত মাসের ২২ এপ্রিল অভিবাসন কেন্দ্রে আটক থাকা ২১ জন বিদেশি নাগরিককে একটি বিশেষ চার্টার বিমানে ফেরত পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি, ছয় জন পাকিস্তানি এবং একজন তুরস্কের নাগরিক ছিলেন।

তাদের বয়স ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ১৯ জন বেআইনি উপায়ে সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েন।

দেশটির সীমান্তবর্তী আরাদ, আলবা, ক্লুজ এবং হুনেডোয়ারা কাউন্টির স্থানীয় জেন্ডারমেরি ইন্সপেক্টরেটের পুলিশদের সহায়তায় অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে বুখারেস্টে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগকেই ক্লুজ-নাপোকা বিমানবন্দর বর্ডার ক্রসিং পয়েন্ট দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়।

যেসব অভিবাসীর কাছে আটকের সময় কোনো পাসপোর্ট বা নথি পাওয়া যায়নি তাদের ক্ষেত্রে স্বীকৃত রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশন বা কনস্যুলার অফিসের সহায়তায় বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

অনিয়মিত অভিবাসীদের অনেকেই শেনজেন সীমান্তে প্রবেশের সময় তাদের সাথে থাকা সব নথিপত্র ফেলে দেন।

চলতি বছরের মার্চে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বিতাড়িত ৬৪ জন বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে অনেকের ক্ষেত্রেই দেশগুলোতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ফেরত পাঠানো হয়।

রোমানিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করা ও দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের যাবতীয় আইনি কাঠামো একটি বিশেষ অধ্যাদেশ বা ওইউজির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই অধ্যাদেশের ১৯৪/২০০২ ধারার সংশোধিত বিধান অনুযায়ী বিদেশিদের প্রবেশ, থাকার অধিকার এবং বাধ্যবাধকতাগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়।

সূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: