শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

রেমিট্যান্স পাঠাতে কুয়েতে একচেঞ্জহাউজে প্রবাসীদের ভিড়

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪

বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সবচেয়ে বড় অবদান প্রবাসীদের। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে প্রতিনিয়ত। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ব্যাংক ও ইন্টারনেট বন্ধসহ বেশ কিছু কারণে ধস নেমেছিল রেমিট্যান্সে।

ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ‘রেমিট্যান্স শাটডাউন’ নামক কর্মসূচি দিয়েছিলেন প্রবাসীরা। কেউ টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন আবার কেউ বেছে নিয়েছিলেন হুন্ডির পথ। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর দেশ পুনর্গঠনের জন্য কুয়েতের বিভিন্ন রেমিট্যান্স হাউজে প্রবাসী বাংলাদেশির ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৯১ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও তার আগের মাস জুনে এসেছিল ২.৫ বিলিয়ন ডলার।

রেমিট্যান্স হাউজে কাজ করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং ছাত্র জনতার বিজয়ের পর আবারও রেমিট্যান্স পাঠাতে একচেঞ্জগুলোতে ভিড় করছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশিরা খুব আনন্দের সঙ্গে দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাচ্ছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে এবং একদিন পর পর্যন্ত অর্থাৎ ১ থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৯৫.৬৫ মিলিয়ন ডলার। পতনের পর ৭ থেকে ১০ আগস্ট রেমিট্যান্স এসেছে ৩৮৭.১২ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে চলতি (আগস্ট) মাসের প্রথম ১০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৮২.৭৭ মিলিয়ন ডলার।দেশকে নতুনভাবে গড়ার অঙ্গীকার কুয়েত প্রবাসীদের। দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে অর্থ দেশে পাঠাচ্ছে সেটা যেন পাচার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জোর দাবি জানান এসব রেমিট্যান্সযোদ্ধা।

কুয়েত প্রবাসী জাহিদ হাসান জনি বলেন, ‘ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি ছিল কোটা আন্দোলন এবং এতে পুরো বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন ছিল কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সেটা সমাধান না করে আরও উসকে দেয় এবং শান্তিপ্রিয় নিরস্ত্র ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান।

এগুলো একজন সচেতন প্রবাসী হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। তাই আমরা প্রবাসীরাও এই আন্দোলনকে যৌক্তিক মনে করে সমর্থন জানাই এবং এর প্রতিবাদ হিসেবে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধের ডাক দেই, কারণ আমাদের রেমিট্যান্সে সরকারের অর্থনৈতিক চাকা সচল থাকলেও আমরা সবসময় বৈষম্যের শিকার হই।’

তিনি বলেন, আন্দোলন চলাকালীন বাংলাদেশের ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ায় পরিবারের সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় এতে প্রবাসী হিসেবে নিজেকে বেশি অসহায় মনে হতো। আমার টাকার ইন্টারনেট কিনে আমার পরিবার যদি সেবা না পায় তাহলে এ ধরনের সরকার চাই না, প্রতিবাদস্বরূপ আমরা রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করি। পাশাপাশি অন্যদের এটা সতর্ক করি যেন হুন্ডিতে টাকা না পাঠিয়ে আন্দোলন সফল হলে বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠায় এবং সর্বশেষ আন্দোলন সফল হলে প্রবাসী রেমিট্যান্স হিসেবে আমরা আবারও বৈধপথে টাকা পাঠাতে শুরু করি।

আরেক প্রবাসী আল মামুন বলেন, ‘আমি একজন রেমিট্যান্সযোদ্ধা। আমার দেশপ্রেম ও দায়বদ্ধতা থেকে ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে স্বৈরাচার সরকার যেন দেশকে রসাতলের শেষ সীমানায় নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য রেমিট্যান্স পাঠানো থেকে বিরত ছিলাম। যেহেতু ছাত্রদের বিজয় হয়েছে তাই আবারো দেশের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা থেকেই দেশকে ভালোবেসে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে দেশের রেমিট্যান্সে অবদান রাখতে চাই এবং ব্যাংকের মাধ্যমে নিজে টাকা পাঠাচ্ছি অন্যদেরও উৎসাহিত করছি।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com