উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতীয় শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দ ব্রিটেন। প্রত্যেক বছর সেদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান বহু ছাত্রছাত্রী। কিন্তু ব্রিটেনের কঠোর অভিবাসন নীতির জেরে এবার ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে সেদেশে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম এনেছে কিয়ের স্টারমারের সরকার। যে কারণে ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ব্রিটেনে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের স্পনসরড স্টাডি ভিসা দেয়ায় ২৩ শতাংশ পতন ঘটেছে।
এক রিপোর্ট মোতাবেক, গত বছর ব্রিটেনে ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৬৯৩ জন ভারতীয় শিক্ষার্থীকে স্পনসরড স্টাডি ভিসা দেয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালের জুন মাস সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার ৬ জন। অর্থাৎ প্রায় ৩৩ হাজার শিক্ষার্থীকে ভিসা দেয়া হয়নি। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রেকর্ড হারে ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ব্রিটেনে। পাশাপাশি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে অভিবাসীদের সংখ্যাও। ফলে কড়াকড়ি করা হয়েছে অভিবাসন নীতিতে। শিক্ষার্থী-সহ বিদেশিদের ব্রিটিশ ভিসা পেতে পড়তে হচ্ছে কঠিন নিয়মের গেরোয়। যার জেরে চলতি বছরে বহু ভারতীয় ছাত্রছাত্রীই আর ব্রিটেনে পা রাখেননি।
তবে শুধু ভারতীয় নয়, ব্রিটেনে ভিসা প্রদান কমে গিয়েছে নাইজেরিয়ার শিক্ষার্থীদেরও। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ৪৬% হারে হ্রাস ঘটেছে নাইজেরিয়ান ছাত্রছাত্রীদের ভিসায়। কিন্তু, রাজার দেশে থাকা শিক্ষার্থীদের নিরিখে নাইজেরিয়াকে পিছনে ফেলে দিয়েছে পাকিস্তান। বিগত বছরে ব্রিটেনে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকায় প্রথমে ছিল ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান। কিন্তু এই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ইসলামাবাদ।
উল্লেখ্য, সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য ব্রিটিশদের মধ্যে খুবই ক্ষোভ রয়েছে। তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান-সহ বিশ্বের বহু দেশ থেকে অভিবাসীদের চাপের কারণে বিপাকে পড়তে হয়েছে সেদেশের মানুষকে। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্রিটেনের অর্থনীতিতেও। দাম বেড়েছে জিনিসপত্রের। যে কারণে রোষের মুখে পড়েছিলেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও। চলতি বছরের নির্বাচনে তার গদিচ্যুত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে অনেকে এই অভিবাসন নীতিকেও মনে করেন। এখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। ক্ষমতায় এসে তিনি অভিবাসন নীতি নিয়ে বেশ কিছু কড়াকড়ি করেছেন।