শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

রূপসী বাংলা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩
আমাদের এই দেশ, বাংলাদেশ সীমাহীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। বিচিত্র রূপের লীলাভূমি এই দেশ। যারা এই বিশ্ব-প্রকৃতির অনন্তময় বিচিত্রার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেতে চায়, তাদের জন্য রয়েছে এদেশের নির্মল আকাশ, পুষ্প-পল্লব, নদী-কান্তার, বটকৃক্ষ ছায়া এবং সুশীতল পল্লী বীথিকায় আছে এক অপূর্ব আবেদন।
ভূমির সৌন্দর্যঃ বাংলাদেশের আয়তন প্রায় ১৪৪ বর্গ কিলােমিটার। এ দেশের মোট আয়তনের ১৭ শতাংশ বনভূমি। এর সমগ্র ভূমিই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। বিরাট এলাকা জুড়ে রয়েছে এর সমতল ভূমি, যা দেখেতে মনমুগ্ধকর। অন্যদিকে ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা, চট্রগ্রাম ও পার্বত্য চট্রগ্রামে রয়েছে সুউচ্চ পাহাড়। এছাড়াও রয়েছে ঘন বন। যার মধ্যে খুলনাতে অবস্থিত সুন্দরবন বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। এটি সারাবিশ্বের কাছে “Mangrove Forest /লবণাক্ত বনভূমি” নামেও পরিচিত। বিশ্ব বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার এই সুন্দরবনেই বাস করে। আমাদের দেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৃশ্যাবলী শুধুমাত্র এদেশের মানুষের জন্যেই নয়; বরং সমগ্র বিশ্বের পর্যটকদের জন্য অত্যান্ত আকর্ষনীয়। নানা দেশ হতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক পর্যটক আমাদের দেশে আসেন এই সকল সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।
প্রকৃতি এবং পরিবেশঃ বাংলাদেশের প্রকৃতি বড়ই বৈচিত্র্যময়। এদেশের উত্তরে রয়েছে ভাওয়াল ও মধুপুর গড় এবং তার গেরুয়া মাটিতে রয়েছে অসংখ্য সারি সারি গজারি গাছ। দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবন। আমাদের দেশের পূর্ব দিকেই রয়েছে পাহাড়ের কোলঘেঁষে সাজানো অতিসবুজ চা-বাগান, এরই মাঝে আবার বিশাল ছায়াবৃক্ষ। এদেশের পশ্চিমে ধু-ধু প্রান্তরে রুক্ষতার মাঝেও দেখা যায় সারি সারি আম্রকানন অর্থাৎ আমের বাগান, আখের খেত কিংবা পানের বরজ। কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল সমগ্র বিশ্বের সর্ববৃহৎ সৈকত। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে এক সীমাহীন সৌন্দর্যের সমাবেশ।
নদ-নদীর সৌন্দর্যঃ বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অসংখ্য নদ-নদী প্রবাহিত হয়েছে। পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা বাংলাদেশের বড় বড় নদীসমূহ। সমতল ভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত নদীর পানি ও পলিমাটি, মাটিকে গাছপালা বৃদ্ধির জন্য অত্যান্ত উর্বর করে তুলে। এ নদীগুলাের এই অপরিসীম অবদানের ফলেই বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাগান বলে অভিহিত করা যায়।
বিভিন্ন ঋতুর সৌন্দর্যঃ এদেশে বারো মাস ধরেই চলে ষড় ঋতুর বৈচিত্রাবলী। যখন গ্রীষ্মকালে সুর্য উত্তপ্ত হয়ে উঠে এবং মাটিতে আনে তীব্র আঘাত তখন সূর্যের এই দগ্ধ তাপে মানুষ হয়ে উঠে ক্লান্ত। কিন্তু, গ্রীষ্মকালীন আম, কাঁঠাল এবং লিচু কিন্তু আবার অবসন্নতা দূর করে দেয়।
এর পরই আকাশ হয়ে উঠে মেঘাচ্ছন্ন। আর প্রবল বৃষ্টিতে প্রকৃতি ঠান্ডা হয়ে হয়ে যায়। এ যেন নতুন এক সতেজ প্রাণবন্ত অনুভূতি। বর্ষাকালের বিদায় লগ্নেই আবার অগমন হয় শরতের। হেমন্ত আবার শরতের অগ্রদূত। এ ঋতু আমাদের দেশের কৃষকদের জন্য খুবই আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কেননা তখন তারা নতুন ধান কেটে বাড়ি নেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে। এরই পরে কনকনে ঠান্ডা নিয়ে হাজির হয় শীতকাল। প্রকৃতিকে দেখা যায় নির্জীব এবং নিরলস। শীতের পর পরেই চলে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছে গাছে ফোটে ফুল, আর আমাদের দেয় মিষ্টি সুভাস।
উপসংহারঃ বাংলাদেশের বুকে সারা বছরই বিরাজ করে সীমাহীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। মানুষের মন ও চরিত্রের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এ সম্পদ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com