পাঁচ দিনের পুজোর প্রত্যেক সন্ধ্যায় অন্তত ঘণ্টাখানেক জমজমাট অনুষ্ঠান, খাওয়া দাওয়ার বৈচিত্র্যের আমেজ। বাংলা ও বাঙালির কাছে দুর্গোৎসবের আনন্দের কোনও বিকল্প নেই- সত্যিই সবচেয়ে বড় উৎসব। কিন্তু, দুর্গাপুজোই কি উৎসব-অর্থনীতিতে বিশ্ব-সেরা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই 2018 সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) পর্যটন দফতর। পুজো-অর্থনীতি নিয়ে সমীক্ষার রিপোর্টে ব্রিটিশ কাউন্সিল জানিয়েছে, বাংলার GDP-র প্রায় 2.5%-এর কাছাকাছি সৃষ্টি হয় থেকেই। যার পরিমাণ প্রায় ₹32,377 কোটি। যা একাধিক দেশের মূল অর্থনীতির থেকে বেশি বলে উল্লেখ ব্রিটিশ কাউন্সিলের ওই রিপোর্টে (British Council Report)।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের সমীক্ষায় জানা গেছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রায় 36 হাজারেরও বেশি পুজো সংগঠিত হয়। এর মধ্যে কলকাতার বিভিন্ন ক্লাব (সরকারি নথিভুক্ত) প্রায় 2500-এর কাছাকাছি পুজোর আয়োজন করে। এছাড়াও সোশ্যাইটিগুলিতেও বহু পুজোর আয়োজন হয়। শুধু মহিলাদের দ্বারা আয়োজিত পুজোর সংখ্যা প্রায় 1500-র কাছাকাছি।
এই ধরনের জটিল পদ্ধতির সমীক্ষা এর আগে দেশে হয়নি বলে দাবি ব্রিটিশ কাউন্সিলের। সমীক্ষার নেতৃত্বে ছিল লন্ডনের ম্যারি ইউনিভার্সিটি এবং সব ধরনের সাহায্যে পাওয়া গিয়েছিল IIT খড়গপুরকেও। বাংলার অর্থনীতিতে দুর্গাপুজোর প্রভাবকে উত্তর ভারতের দীপাবলি, দক্ষিণের পোঙ্গল, পশ্চিমের গণেশ পুজো এবং দেশের উত্তর-পূর্বের বিহু-র সঙ্গে তুলনা করে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু প্রতিমা প্রস্তুতিতেই ₹260-280 কোটির ব্যবসা। বিজ্ঞাপন বাবদ ₹504 কোটি এবং খাওয়াদাওয়ার বাজার প্রায় ₹2854 কোটির। এছাড়াও আলো, স্পনসরশিপ, পাবলিকেশনের মতো ক্ষেত্রের ব্যবসার তথ্যও জানানো হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে দুর্গাপুজোর সময় পর্যটন বাবদ ব্যবসার তথ্য। ফি বছর মা-দুর্গার আরাধনাতেই লক্ষ্মীর বাড়বাড়ন্ত হয়। কিন্তু, মা ঠিক কতটা কৃপাদৃষ্টি দিলেন, তার হিসাবই বোঝা যাবে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও পর্যটন দফতরের যৌথ রিপোর্টে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের রিপোর্ট