শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
Uncategorized

রাঙামাটির জুরাছড়ি ভ্রমণ

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

যাদের ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য , থাইল্যান্ড, বা মালদ্বীপের বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত কিংবা পাহাড় ঘেরা মনোমুগ্ধকর জলরাশি দেখার সুযোগ হয়নি তারা সেই সৌন্দর্য দেখতে পাবেন রাঙামাটির গহীনের সৌন্দর্য জুরাছড়িতে। পাহাড় তলায় জলের শরীরে বুক পর্যন্ত ডুবে থাকা জুরাছড়ির অপরূপ রূপ অনেক পর্যটকদের চোখের আড়ালেই রয়ে গেছে। অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ স্থানটি না দেখলে আপনার রাঙামাটি ভ্রমণ হবে অসম্পূর্ণ। রাঙামাটি সদর থেকে ৫৭ কিলোমিটার দূরে জুরাছড়ির অবস্থান। জুরাছড়ি নামের ঝর্ণা থেকে এই উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে। এই এলাকার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হলো নৌপথ। প্রায় ২৭ হাজার লোকের বসতি এই জুরাছড়ি উপজেলায়। এদের অধিকাংশই চাকমা সম্প্রদায়ের। এ ছাড়া রয়েছে মুসলমান, হিন্দু, রাখাইন, মারমা, তংচ্যাংগা, প্যাংকো, ত্রিপুরা, কিয়াং, মরুং ও বোম সম্প্রদায়ের বসবাস। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি জুরাছড়ির সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ।

জুরাছড়ি ভ্রমণ

পাহাড় কন্যা জুরাছড়ি সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য তার রূপের পসরা সাজিয়ে বসে আছে কাপ্তাই হ্রদের কোলজুড়ে। পুরো জুড়াছড়ির অকৃত্রিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে মায়াময় এক প্রকৃতির ঘোরে। এখানে প্রকৃতি নিজেকে মেলে ধরে এক ভিন্ন আমেজে। নান্দনিকতা আর নীল-সবুজের মাখামাখিতে পাহাড়ি সৌন্দর্যের অবাক করা মেলবন্ধন জুড়াছড়ির পরতে পরতে। জুরাছড়ির এক পাশে দূর পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃক্ষরাজি। অন্যপাশে কাপ্তাই হ্রদের নীরব জলে ঝিরি ঝিরি বাতাসের মিতালী আপনার সৌন্দর্য বোধকে করে তুলবে আরো তীক্ষ্ণ। কোথায় যেন হারিয়ে যেতে চাইবে মন।

জুরাছড়ি ভ্রমণ

জুরাছড়ির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য যে টিলার ওপর উপজেলা কমপ্লেক্স তার আশেপাশে ঘুরে দেখলেই আপনার মন ভরে উঠবে। কাপ্তাই লেকের পানির তোড় থেকে টিলার পাড় শাসনের জন্য কংক্রিটের তৈরি রাস্তা আর রাস্তার পাড়ে লাগানো সারি সারি নারিকেল গাছ জুরাছড়িকে দিয়েছে মোহনীয় সৌন্দর্য। উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে থানা কমপ্লেক্সের সংযোগ সড়কে সারিবদ্ধ নারিকেল, গর্জন ও জারুল গাছের অপার্থিব সৌন্দর্য আপনাকে আটকে ফেলবে জুরাছড়ির মায়ার বাঁধনে। এছাড়া জুরাছড়িতে রয়েছে ছোট বড় বেশ কয়েকটি বৌদ্ধবিহার, ঝর্ণা ও দিঘী। চাইলে এগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন। জুরাছড়ির সৌন্দর্যে এ স্থানগুলো যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

কিভাবে যাবেন জুরাছড়িতে: ঢাকার ফকিরাপুল মোড় ও সায়দাবাদে রাঙামাটিগামী অসংখ্য এসি ও নন-এসি বাস রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে হানিফ, শ্যামলী, এস আলম, ইউনিক, সৌদিয়া ইত্যাদি। এসকল বাসে ভাড়া পড়বে ৬০০-৯০০ টাকার মধ্যে। এই বাসগুলো সাধারণত সকাল ৮ টা থেকে ৯ টা এবং রাত ৮ টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১১ টার মধ্যে রাঙামাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার থেকে লঞ্চে করে যেতে পারেন জুরাছড়ি। সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে একটি লঞ্চ এবং দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে আরেকটি লঞ্চ জুরাছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৭০ থেকে ২০০ টাকা। সারাদিনে মাত্র দুটি লঞ্চ জুরাছড়ি আসা-যাওয়া করে। সময় লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা। পথে শুভলং, নতুন বাজারসহ তিন চারটি ঘাটে বোট থামে। চাইলে স্পিডবোট বা ট্রলার ভাড়া করেও যেতে পারেন। ট্রলার তিনদিনের জন্য নেবে দশ থেকে এগারো হাজার টাকা।

কোথায় থাকবেন: জুরাছড়িতে পর্যটক থাকার কোনো হোটেল নেই। যেহেতু থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই, সেহেতু দিনে যেয়ে আপনাকে দিনেই ফিরে আসতে হবে রাঙামাটি শহরে। এ জন্য দুপুর দেড়টা ও রাত সাড়ে আট টায় ফিরতি বোট ধরতে হবে। এছাড়া যদি জুরাছড়িতে রাত কাটাতে চান তাহলে আপনাকে থাকতে হবে ট্রলারে। সেক্ষেত্রে রান্নার ব্যবস্থা করে এমন প্রস্তুতি নিয়েই উঠতে হবে।

ভ্রমণ টিপস: • লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নেবেন। • সম্ভব হলে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে যাবেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com