আমাদের জীবনের সঙ্গে ‘মশা’ এবং মশাবাহিত রোগ জড়িয়ে গেছে। ‘মশা মারতে কামান দাগা’- এ শুধু এখন আর কথার কথা নয়। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচতে আমরা লড়াই করছি। শত চেষ্টা করেও মশার হাত থেকে রেহাই মিলছে না। তবে আশ্চর্য হলেও সত্য, পৃথিবীতে এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে মশা নেই। শুধু মশা নয়, অনেক পোকামাকড়ও সেখানে দেখা যায় না।
মশামুক্ত দেশটির নাম আইসল্যান্ড। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে অবস্থিত এটি একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। প্রশ্ন হলো- দেশটিতে নানা প্রজাতির প্রায় ৩০০ কীটপতঙ্গ থাকলেও মশা নেই কেন?
এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। সেসব তথ্য থেকে জানা যায়, মশা সাধারণত জমা পানিতে ডিম পাড়ে এবং সেই পানি অবশ্যই স্থির হতে হবে। যেমন টবের পানি, বাসার ছাঁদে জমা পানি ইত্যাদি। সেই ডিম থেকে লার্ভা জন্মায় এবং সেই লার্ভা নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় থাকার পর সেই পানিতে মশা জন্ম নেয়। আইসল্যান্ডে এমন কোনো স্থির পানি নেই যেখানে মশা জন্ম নিতে পারে।
আইসল্যান্ডের শীতল পরিবেশ মশা না-জন্মানোর আরেকটি কারণ। দেশটিতে তীব্র ঠান্ডা। ফলে পানি দ্রুত জমাট বেঁধে যায়। সেখানে তাপমাত্রা কখনো মাইনাস ৩৮-৪০ ডিগ্রি হয়ে থাকে। সবসময় পরিবেশ ঠান্ডা থাকে এবং তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে মাইনাস থাকায় মশা ডিম কিংবা বাচ্চা ফুটাতে পারে না।
আইসল্যান্ডে শুধু মশা নয়, এখানে সাপ বা অন্য অনেক কীটপতঙ্গেরও দেখা মেলে না। কারণ ওই একটাই। আবহাওয়া। আইসল্যান্ডের ঠান্ডা আবহাওয়া পোকামাকড় বা সাপের জন্য উপযোগী নয়। তবে সেখানে মশার মতো দেখতে এক ধরনের পোকা দেখা যায়, যার নাম মিজ। এই মিজ পোকা অবশ্য মশার মতো রোগ ছড়ায় না।
উল্লেখ্য যে, আইসল্যান্ডে মশা না থাকলেও পাশের দেশ গ্রীনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও স্কটল্যান্ডে মশা আছে।
তথ্যসূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, আইসল্যান্ড ম্যাগাজিন, ইন্ডিয়া ট্যুডে