শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন

যে গ্রামে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ প্রবেশ নিষেধ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কোনো পুরুষ নেই তবে সন্তান আছে নারীদের। সে সন্তান কিভাবে গর্বে এলো তা তারা বলতে নারাজ। তবে সেসব সন্তানদের জন্য তারা কাজ করেন। পাশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আয় রোজগার করেন। আবার সেই প্রিয় সন্তান যদি ছেলে হয় তাহলে ১৮ বছর বয়স হলেই গ্রামে থেকে বের করে দেয়া হয়। প্রতিদিন অনেক নারী গ্রামে প্রবেশ করলেও কোনো পরুষ করতে পারে না। বসানো হয়ে শক্ত পাহারা।

নারী-পুরুষ মিলে গড়ে ওঠে সমাজ-সংসারসহ সবকিছু। নারী-পুরুষ একে অপরের সম্পূরক; কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারেন না। তবে আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলের উমোজা নামক গ্রামে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। যেখানের সব বাসিন্দাই নারী। ওই গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয় না কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষকে।

গ্রামটি ‘পুরুষবিহীন’ থাকার কারণ হলো ‘নির্যাতন’; এই গ্রামে যেসব নারী থাকেন তাদের কেউ কেউ যৌন নিগ্রহ, পরিবারের হাতে নির্যাতন, স্বামী পরিত্যক্ত, বাল্য বিয়ে অথবা যৌনাঙ্গের অঙ্গহানী থেকে বাঁচতে এই গ্রামে চলে এসেছেন। পুরুষ শাসিত সমাজের দ্বারা অত্যাচারের স্বীকার হওয়ায়— নিজেদের সঙ্গে আর পুরুষদের জায়গা দেন না তারা।

২০১৭ সালে গ্রামটি সম্পর্কে জানতে পারেন ঘানার ফটোগ্রাফার পল নিনসন। তখন সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামের নারীদের দেখতে যাবেন এবং তাদের গল্প তুলে আনবেন। কারণ তার মতে, ‘আফ্রিকান দিক থেকে এ ধরনের গল্প সবার মাঝে বলা উচিত।’

উমোজা গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এখানে নারীদের আগমন হয়েছিল সামবুরোর দুর্গম গ্রামগুলো থেকে। আর গ্রামটিকে নিজেদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করতেন তারা। বর্তমানে শুধুমাত্র নারীদের নিয়ে তৈরি ৫০টি পরিবার এখানে বাস করে। এসব পরিবারে শিশুও রয়েছে। তবে পুরুষ শিশুদের বয়স ১৮ বছর হলে তাদের সেখান থেকে চলে যেতে হয়।

ফটোগ্রাফার পল নিনসন শুধুমাত্র গ্রামটির অবস্থান সম্পর্কে জেনে ঘানা থেকে কেনিয়ায় যান। প্রথমে তাকে গ্রামের নারীরা ঢুকতে দিতে চাননি। কিন্তু আসার কারণ জানার পর তারা তাকে স্বাগত জানান।

ওই গ্রামে যেসব নারী বসবাস করেন তাদের জীবনযাত্রা বিনয়ী। তারা খাবার ও শিশুদের পড়ালেখার খরচ মেটানোর জন্য আয় করেন।

উমোজা গ্রামটি বিখ্যাত মাসাই মারা অভয়ারণ্যের কাছে অবস্থিত। ফলে এখানে অনেক পর্যটক ক্যাম্প স্থাপন করেন। পর্যটকরা খুবই অল্প ফি দিয়ে উমোজায় প্রবেশ করতে পারেন। পর্যটকদের কাছে বিক্রির জন্য গ্রামের নারীরা হাতে বিভিন্ন অলংকার তৈরি করেন।

সূত্র: সিএনএন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com