পাকিস্তানের বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার খাদিজা শাহকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। ৯ মে ইমরান খানের গ্রেফতারের দিনে লাহরো কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে হামলার মাস্টার মাইন্ড। ভাঙচুর মামলার প্রধান সন্দেহভাজন। গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
খাদিজাকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে স্বামী জেহানজেব আমিনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জেহানজেবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি পুলিশ গুলবার্গের একটি অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালায়।
কিন্তু অভিযানকারী দলের পৌঁছানোর কয়েক মিনিট আগে খাদিজা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে সিসিটিভি ফুটেজে তাকে বেজমেন্ট পার্কিং এরিয়া দিয়ে বিল্ডিং থেকে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে।
মঙ্গলবার দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , নিজেকে নির্দোষ ঘোষণা করে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অডিও বার্তা প্রকাশ করে এই নারী দাবি করেছেন, ইমরানকে গ্রেফতারের পর তিনি কেবল লাহোরের কর্পস কমান্ডারের বাড়ির বাইরে উপস্থিত ছিলেন এবং লুটপাটের কোনো কাজে অংশ নেননি।
পৃথক এক প্রতিবেদনে জিও নিউজ জানিয়েছে, লাহোরের জিন্নাহ হাউজে হামলার প্রধান সন্দেহভাজন খাদিজা শাহ হচ্ছেন ড. সালমান শাহের মেয়ে। সালমান পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের অর্থবিষয়ক দলের সদস্য ছিলেন।
খাদিজা শাহের বিরুদ্ধে ৯ মে হামলার সময় লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউজে হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রোববার পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের হেফাজতে নেওয়ার পর তিনি আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেন।
যদিও পুলিশ যখন তার বাড়িতে অভিযান চালায় তখন তিনি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান এবং আত্মসমর্পণের ঘোষণা দিলেও এখনো সেটি করেননি।
১৬ মিনিটেরও বেশি দীর্ঘ এক অডিও বার্তায় খাদিজা শাহ স্বীকার করেছেন, তিনি পিটিআই সমর্থক এবং লাহোর কর্পস কমান্ডার হাউজের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। তবে মানুষকে সেখানে সহিংসতায় প্ররোচিত করাসহ কোনো ধরনের অন্যায় কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
অডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছি। আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ গত ৫ দিন আমার জন্য খুব কঠিন ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (কর্তৃপক্ষ) মধ্যরাতে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে এবং আমার স্বামী ও বাবাকে অপহরণ করে। তারা আমাদের সন্তানদের সামনে আমার স্বামীকে মারধর করেছে… আমার গৃহকর্মীরাও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’
পিটিআইয়ের এই সমর্থক কোনো আইন লঙ্ঘন করেননি জানিয়ে বলেছেন, তিনি গত এক বছরে পিটিআইয়ের অনেক বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
দ্বৈত নাগরিক হওয়ার কথা জানিয়ে খাদিজা বলেছেন, তিনি মার্কিন দূতাবাস থেকে সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এই বিষয়ে আরও বিশদ বিবরণ দেননি তিনি।
খাদিজা বলেন, ‘পাঞ্জাব সরকার আমার বিরুদ্ধে বলছে আমি নাকি ৯ মে ভাঙচুরের প্রধান সন্দেহভাজন এবং মাস্টার মাইন্ড। আমি পিটিআইয়ের কোনো নেতা বা কর্মী নই। আমি ইমরান খানের সমর্থক হিসাবে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিবাদ করেছিলাম।’