সর্বোচ্চ সুখী দেশের তালিকায় না থাকলেও দক্ষিণ ইউরোপীয় দেশগুলো ২০৫০ সালের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী জনসংখ্যায় পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই অঞ্চলের স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স এবং পর্তুগাল শীর্ষ দীর্ঘায়ু র্যাঙ্কিংয়ে ঠাঁই করে নিয়েছে। স্পেনের গড় আয়ু এখন ৮৫ বছর ৫ মাসে পৌঁছেছে।
সম্প্রতি ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের দীর্ঘায়ুতে অবদান রাখে এমন সাংস্কৃতিক এবং খাদ্যাভ্যাসের একটি অনন্য মিশ্রণ দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ ইউরোপীয় দেশগুলোতে। এই অঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘজীবনের কেন্দ্রবিন্দু হলো ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য। বিশেষ করে—মাছ, শস্য বীজ, তাজা ফল, শাকসবজি এবং জলপাই তেলের মতো খাদ্য উপাদান।
পাশাপাশি শারীরিক কার্যকলাপও দক্ষিণ ইউরোপীয়দের দীর্ঘায়ু পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উদাহরণ হিসেবে স্পেনের কথাই ধরা যাক। দেশটির মানুষেরা ইউরোপের সবচেয়ে সক্রিয় মানুষ হিসেবে স্বীকৃত। তাঁরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ হাজার কদম হাঁটেন। স্প্যানিশ শহরগুলোর নকশা এবং এসব শহরে উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণেই সাধারণ মানুষ হাঁটতে উৎসাহিত হন। এই ধরনের সক্রিয়তা মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক।
আরেকটি বিষয় হলো—শক্তিশালী সামাজিক সংযোগ। স্পেনের মতো দক্ষিণ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্টি থাকলেও দেখা গেছে, স্পেনের বেশির ভাগ মানুষ তাদের সম্প্রদায়ের যথেষ্ট সমর্থন উপভোগ করেন।
নর্ডিক দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলো কম সুখী এবং কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রবল থাকলেও ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধন এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া তাদের মানসিকভাবে শক্তিশালী করে। এই বিষয়টিও দীর্ঘ জীবন লাভের জন্য অবদান রাখছে।
দক্ষিণ ইউরোপীয়দের জীবনে লাতিন আমেরিকার সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে নিজস্ব সম্পদ এবং স্বাস্থ্যসেবা। এই বৈশিষ্ট্যগুলো সুখী জীবনযাপনের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং বন্ধুত্ব ও পারিবারিক বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে। এই সংমিশ্রণ শুধুমাত্র তাঁদের জীবনযাত্রার মানই বাড়ায় না বরং তাঁদের আয়ু বাড়াতে সাহায্য করছে। স্পেন, ইতালি, পর্তুগাল ছাড়াও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে গ্রিস, আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মালটা, সার্বিয়া, জিব্রলটার, অ্যান্ডোরা, স্যান মেরিনো, মন্টেনেগ্রো, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, কসোভো এ নর্থ মেসেডোনিয়া।