শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘কনফারেন্স ডিপ্লোম্যাসি’

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশের কাছে সবসময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত নিকটতম প্রতিবেশী এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব রাখতে সক্ষম। অন্যদিকে অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সব জায়গায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এই দুটি দেশের সঙ্গে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে নিউ ইয়র্কে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন একান্ত বৈঠক এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠক নতুন সরকারের জন্য শুভ সূচনা হিসেবে বিবেচনা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করতে চাই।’

ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে টেলিফোন আলাপ হয়েছে। একটি মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে। ফলে উভয় দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে বাংলাদেশ, তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘তবে মুখোমুখি আলাপের গুরুত্ব সবসময় রয়েছে এবং নিউ ইয়র্কে কনফারেন্স ডিপ্লোম্যাসির সুযোগ নিয়েছি আমরা।’

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ‘শিডিউল অমিলের’ কারণে বৈঠক হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুজনের মধ্যে বৈঠকও গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে দুই দেশ তাদের সহযোগিতা ও উদ্বেগের বিষয়গুলো একে অপরকে সরাসরি জানানোর সুযোগ পেয়েছে।’

বাংলাদেশ কী জানিয়েছে

যেকোনও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একটি অনিশ্চিত পরিবেশ তৈরি হয়। এটি কারও জন্য উদ্বেগের বিষয় হতে পারে, আবার কেউ এটিকে সহযোগিতার নতুন সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করে। জুলাই আন্দোলনের কারণে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর একটি অনিশ্চিত পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

ভারতের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করা যায় সেটি মূল্যায়নের জন্য।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুই দেশের কাছে বাংলাদেশের চাওয়া-পাওয়া ভিন্ন। ফলে দুই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ভিন্ন হবে– এটি খুব স্বাভাবিক।’

ভারতের নিরাপত্তা ও অন্যান্য যে উদ্বেগ রয়েছে– সেগুলো নতুন সরকার কীভাবে মূল্যায়ন করে, সে বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্যই বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থান তুলে ধরবে। ভারতকে বাংলাদেশ ভালো একটি প্রতিবেশী হিসেবে চায়। সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায় সরকার।’

ভারতের ‘অহেতুক উদ্বেগ’ প্রশমিত করার মার্কিন প্রশাসনের সহায়তা পেলে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েরই উদ্বেগ হচ্ছে চীন। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যেন চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে না পড়ে সেটি হয়তো উভয় দেশই চাইবে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ভারতকে এ বিষয়ে সতর্ক করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু অগ্রাধিকার আছে। এর মধ্যে বিভিন্ন খাতে সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। এজন্য বৈদেশিক সহযোগিতা প্রয়োজন হবে সরকারের। ফলে সবার সঙ্গে একটি ভালো সম্পর্ক রাখার জন্য বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com