শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৯ অপরাহ্ন
Uncategorized

যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছেন ৪ লাখ মানুষ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ জুন, ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় চার লাখ মানুষ। টেম্পোরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাস (টিপিএস) নিয়ে দেশটিতে এত দিন ধরে কাজ করে আসা এই লোকগুলো আর মার্কিন গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। সম্প্রতি এমন রায় দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। বার্তা সংস্থা এপির এক খবরে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এলিনা কাগান চলতি সপ্তাহে তার এক রায়ে বলেছেন, ফেডারেল ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী যদি কোনও ব্যক্তি এ দেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করে, তাহলে তারা গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করার জন্য অনুপযুক্ত।

খবরে বলা হয়েছে, এই স্ট্যাটসটি (টিপিএস) দেওয়া হয়েছিল যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত দেশ থেকে আসা লোকদের জন্য। ১৯৯০ সালে পাস হওয়া আইনে টিপিএস-এর এই সুবিধায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজ করার সুবিধা পেয়েছেন।
১৯৯৭ সালে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এল সালভাদরের এক নাগরিক। ২০০১ সালে তিনি টিপিএস সুবিধা পান। পরে ২০১৪ সালে তিনি দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার (গ্রিনকার্ড) জন্য আবেদন করেন। তার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তা চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন সেই নাগরিক। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে দেশটিতে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এমনকি দেশজুড়ে বিভিন্ন নিম্ন আদালতে এ সংক্রান্ত মামলায় ব্যাপক বিরোধমূলক সিদ্ধান্তও আসে। বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ালে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলো এ রায়ের মাধ্যমে।

লিখিত রুলিংয়ে কাগান লিখেছেন, এই টিপিএস সুবিধায় অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসাদের ‘মানবিক সুরক্ষা’ দেওয়া হয়েছিল। তবে এর মাধ্যমে অভিবাসন আইনে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কখনোই ‘স্বীকৃতি’ দেওয়া হয়নি।

অন্য দিকে অভিবাসী গ্রুপগুলো তাদের যুক্তিতে বলে যে, মানবিক কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আগত অনেক লোক অনেক বছর ধরে এ দেশে বসবাস করছে। তাদের অনেকেই এরই মধ্যে এ দেশে সন্তান জন্ম দিয়েছেন; যারা জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক, তারা তাদের শিকড় ছড়িয়েছেন।
টিপিএস সুবিধায় বিশ্বের ১২টি দেশ থেকে চার লাখ লোক যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। এল সালভাদোর ছাড়া অন্য ১১টি দেশ হলো- হাইতি, হন্ডুরাস, মিয়ানমার, নেপাল, নিকারাগুয়া, সোমালিয়া, সাউথ সুদান, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।

এপির খবরে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সুবিধা বাতিল করার চেষ্টা করেছিলেন। তারপর থেকেই এমন অভিবাসী প্রত্যাশীরা এমন আশঙ্কায় ছিলেন যে, তাদের হয়তো আবার এত বছর পর নিজের দেশে ফিরে যেতে হবে, যেখানে তারা দীর্ঘদিন ধরে থাকেন না। এই গ্রিনকার্ড প্রত্যাশীদের আইনি সহায়তা দিচ্ছে ন্যাশনাল ইমিগ্র্যান্ট জাস্টিস সেন্টার। তাদের নিয়োগ করা আইনজীবী লিসা কুপার বলেছেন, এই পরিবারগুলো যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত এবং আমাদের সঙ্গেই বসবাস করে আসছে। তারা কয়েক দশক ধরে সত্যিই খুব হুমকির মধ্যে রয়েছে।

তবে এসব টিপিএস সুবিধাধারীদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিতে একটি বিলও পাস করেছে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষে (প্রতিনিধি পরিষদ)। রুলিংয়ে সেই তথ্যও উল্লেখ করে বিচারপতি কাগন লিখেছেন, তবে বিলটি সিনেটে ‘অনিশ্চিত সম্ভাবনার’ মুখোমুখি।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নিজেও আইনটি পরিবর্তনের পক্ষে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের মতোই তার প্রশাসনও এতে আপত্তি জানিয়ে বলেছে, বর্তমান ইমিগ্র্যান্ট আইন অবৈধভাবে দেশে প্রবেশকারীদের কোনোভাবেই স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়াকে বৈধতা দেয় না।

তবে যারা বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে টিপিএস সুবিধা নিয়ে কাজ করছেন এবং তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছেন, তাদের জন্য এই রায় কোন সঙ্কট সৃষ্টি করবে না বলে বিচারপতি নিজেই তার রায়ে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, কারণ এই লোকেরা বৈধভাবে দেশে প্রবেশ করেছেন এবং পরে তাদের মানবিক সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তারা স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করতে পারেন।

মোহাম্মদ এন মজুমদার

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com