মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য সম্ভাবনার দেশ ছিল, যেখানে তারা বিশ্বমানের শিক্ষা ও উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে সেই আমেরিকান স্বপ্ন এখন এক কঠিন পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার ভয়ে দলে দলে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ভিসা প্রত্যাখ্যানের সংখ্যা বৃদ্ধি, কর্মস্থলে কঠোর তদারকি এবং ওয়ার্ক পারমিটের অনিশ্চয়তার কারণে অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য এফ-১ শিক্ষার্থী ভিসা প্রদান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ৬৪ হাজার ৮টি ভিসা প্রদান করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম। কোভিড-১৯ মহামারির পর শিক্ষার্থী ভর্তি বৃদ্ধির ধারার এটি প্রথম বড় পতন।
এছাড়া, সংকুচিত কর্মসংস্থানের বাজারেও ভারতীয় শিক্ষার্থীরা বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। মার্কিন বাজারে এখন স্থানীয় কর্মীদের বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং নতুন অভিবাসন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা প্রান্তিক অবস্থানে চলে যাচ্ছে।
অনেক শিক্ষার্থী মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তাঁর ‘স্থানীয়করণ’ নীতির কারণে নিয়োগকর্তাদের পক্ষে ভিসা স্পনসর করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। সাই অপর্ণা, যিনি ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে বসবাস করছেন, জানান, “চাকরি পাওয়া এখন সত্যিই কঠিন হয়ে গেছে। কখনো ভাবিনি পরিস্থিতি এত খারাপ হবে।” অপর্ণা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চাকরি খুঁজছেন, কিন্তু এখনও সফল হননি।
বিশেষ করে ‘অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং’ (OPT) আওতায় কাজ করা শিক্ষার্থীরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। এই প্রশিক্ষণটি এক বছরের জন্য অনুমোদিত হয়, তবে অনেক শিক্ষার্থী এই সীমাবদ্ধতা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত উপার্জনের চেষ্টা করেন, যা এখন কঠোর নজরদারির মুখে।
সোর্স: এনডিটিভি