যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি উগ্র ডানপন্থীদের দাঙ্গার কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মুসলিমরা। চলমান এ দাঙ্গার পূর্বে মাত্র ১৬ শতাংশ মুসলিম নাগরিক যুক্তরাজ্যে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানাতেন। ২০ শতাংশ মুসলিম জানান তারা জুলাইয়ের শেষ দিকে সাউথপোর্টে একটি ক্লাবে একটি ছুরিকাঘাতের ঘটনার আগে হিংসার শিকার হয়েছিলেন। মুসলিম ওমেন’স নেটওয়ার্ক নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জরিপে এসব চিত্র উঠে আসে।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মুসলিম ওমেন’স নেটওয়ার্কের জরিপে বলা হয় বর্তমানে অন্তত ৭৫ শতাংশ মুসলিম ব্রিটিশ মনে করছেন তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্ট শহরে একটি নাচের কর্মশালায় ছুরিকাঘাতে তিন শিশু নিহত হয়। ওই হামলার জন্য এক মুসলিম শরণার্থী দায়ী, অনলাইনে এমন গুজব ছড়িয়ে দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটানো হয়েছিল। যদিও ওই হামলার পেছনে ১৭ বছর বয়সী অ্যালেক্স রুদাকুবানা নামে একজনকে অভিযুক্ত করা হয়। সে কারডিফে জন্মগ্রহণ করে।
যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার পর, অনেক স্থানে মসজিদকে কেন্দ্র করে হামলা চালানো হয়। স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে দুই মুসলিম নারী লিভারপুলে অবস্থিত আব্দুল্লাহ কুয়াইলিয়াম মসজিদে দাঙ্গাকারীদের হামলার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। মুসলিম উইমেনস নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী ব্যারোনেস শাইস্তা যহীর স্কাই নিউজকে বলেন, গত এক দশক ধরে মুসল্লিদের ওপর বিদ্বেষ বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল পুলিশ চিফস কাউন্সিল জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে চলা দাঙ্গায় সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার পাশাপাশি মুসলিম ও অভিবাসীদের লক্ষ্য করে বর্ণবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছে, এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত হাজারেও বেশি দাঙ্গাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে তারা জানায়, পুরো যুক্তরাজ্যজুড়ে ১০২৪ জনকে গ্রেফতার করে এদের মধ্যে ৫৭৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৬৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ থেকে শুরু করে ১১ বছরের বালক পর্যন্ত আছে। ভাঙচুরের অভিযোগে ওই বৃদ্ধকে লিভারপুল থেকে এবং শিশুটিকে বেলফাস্ট থেকে আটক করা হয়।