শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

যুক্তরাজ্যের অ্যাসাইলাম আইনে আসছে বড় পরিবর্তন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক, জাতিগত, ধর্মীয় বা ভিন্নমত প্রকাশের কারণে নিপীড়নের শিকার এবং নিজ দেশে প্রাণ ঝুঁকির মুখে-এমন ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চান। এটি অ্যাসাইলাম আবেদন নামে পরিচিত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাক্ষাৎকার এবং আবেদনের সঙ্গে দেয়া প্রমাণাদির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়ার নিয়ম।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আলাদা হওয়ার পর নানাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি অভিবাসী ও অ্যাসাইলাম আইনে বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিতি প্যাটেল। এই প্রস্তাব পাস হলে দেশটিতে বিদেশিদের আশ্রয় পাওয়া এবং অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের দেশটিতে থাকার অধিকার পাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।

ইতোমধ্যে হোম অফিস মার্টন হল ডিটেনশন সেন্টারটি বন্ধ করে দিয়েছে। নর্দার্ন ফ্রান্স থেকে ছোট নৌকায় আসা ইমিগ্র্যান্টদের অ্যাসাইলাম আবেদনের পূর্ব পর্যন্ত ইয়ার্লস উড সেন্টারে রেখেছে হোম অফিস।

এছাড়া অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়া আরও অনেক আবেদনকারীকে হোটেলে রেখেছে হোম অফিস। এসব অ্যাসাইলামদের জন্যই হোম অফিস এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অভিবাসীদের বিষয়ে দশকের মধ্যে এটিকে বৃহত্তম পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে অনেকগুলো পরিবর্তনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-

১. অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে আগত আশ্রয়প্রার্থীদের আর আইনি অধিকারের মাধ্যমে দেশে আগতদের মতো অধিকার থাকবে না। তাদের দাবি সফল হলেও, তাদের অস্থায়ী শরণার্থী মর্যাদা দেয়া হবে এবং যে কোনো সময়ে অপসারণের ক্ষমতা থাকবে।

২. আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয় দাবি বা আপিল বিচারাধীন অবস্থায় তাদেরকে অপসারণ করা যাবে।

৩. যারা অবৈধভাবে আগত বলে মনে করা হয় তাদের জন্য পারিবারিক পুনর্মিলনের অধিকার সীমিত হতে পারে। যাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তাদের অপসারণ দ্রুত করার জন্য আপিল ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হবে।

৪. স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক বিপদে পড়া এবং তাদের দেশে ঝুঁকির মধ্যে থাকা লোকদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবেন। ধারণা করা হচ্ছে এটি অল্প সংখ্যক লোককে সহায়তা করতে ব্যবহৃত হবে।

৫. অসমর্থিত দাবির ভিত্তিতে শরণার্থী মর্যাদা দেয়া লোকদের পক্ষে অনেক কঠিন করা হবে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের সন্তান হওয়ার নকল তথ্য এড়াতে ‘বয়সের মূল্যায়ন’ কঠোর করা হবে। বয়স নির্ধারণের জন্য সরকার হাড় স্ক্যানার ব্যবহারের বিবেচনা করছে।

৬. মানবপাচারকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন সাজা আনা হবে।

৭. বিদেশি অপরাধীরা যারা নির্বাসন আদেশ অমান্য করে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসে তাদের বর্তমান ছয় মাসের পরিবর্তে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

৮. একটি নতুন ওয়ান-স্টপ আইনি প্রক্রিয়া প্রস্তাব করা হয়েছে যাতে আশ্রয়, মানবাধিকার দাবি এবং অন্যান্য যে কোনো সুরক্ষা বিষয়ক আপিল শুনানির আগে একত্র হয়ে বিবেচনা করা যাবে।

তবে বিরোধী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রস্তাবিত আইনটিকে ‘শরণার্থী বিরোধী বিল’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের দাবি, যাদের সবচেয়ে বেশি সহায়তা প্রয়োজন এটির মাধ্যমে তাদের দণ্ডিত করা হবে।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিবাসীসের আশ্রয়ের ক্ষেত্রে দ্বিস্তর নীতি চালু করা হবে। নতুন নিয়মে বৈধ এবং অবৈধ পথে আশ্রয়ের খোঁজে ব্রিটেনে প্রবেশকারীদের সঙ্গে একই ধরনের আচরণ করা হবে না। যারা অপরাধীদের অর্থ দিয়ে অবৈধপথে দেশটিতে প্রবেশ করবেন, তারা আশ্রয় পাবেন না।

যারা প্রকৃতপক্ষেই বিপদগ্রস্ত শুধু তাদের প্রবেশের জন্যই নতুন বৈধ রুট চালু করা হবে। বিদেশি অপরাধী এবং যেসব আশ্রয়প্রার্থী ঝুঁকিতে নেই, তাদের ফেরত পাঠানো হবে।

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) আবেদন করে সফল হওয়াটা অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। কারণ, আবেদন প্রত্যাখ্যান করার (রিফিউজ) আগাম মনোভাব নিয়েই দেশটির স্বরাষ্ট্র দফতরের (হোম অফিস) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবেদনগুলো বিবেচনা করেন। পরিস্থিতি এমন যে, কখনো কাউকে অ্যাসাইলাম দেননি এমন কর্মকর্তারা সেখানে গর্ববোধ করেন।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com