রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

মাচুপিচুর দেখা পান হিরাম বিংহ্যাম

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

পেরুর মাচুপিচুকে বিবেচনা করা হয় ইনকা সাম্রাজ্যের সবচেয়ে পরিচিত নিদর্শন হিসেবে। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পর্যটক আকৃষ্ট করা গন্তব্যগুলোর একটিও এটি। আজকের এই দিনে, অর্থাৎ ১৯১১ সালের ২৪ জুলাই মার্কিন ইতিহাসবিদ ও অভিযাত্রী হিরাম বিংহ্যাম প্রথম মাচুপিচুর ধ্বংসাবশেষ দেখেন।

পেরুর শহর কাসকোর উত্তর-পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকায় লুকিয়ে ছিল ইনকা ধ্বংসাবশেষটি। ধারণা করা হয়, ইনকা নেতাদের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ যাপন এলাকা ছিল এটি। ষোলো শতকের দিকে স্পেনীয় দখলদারদের আক্রমণে ধ্বংস হয়ে যায় ইনকা সভ্যতা। কয়েক শ বছর ধরে কেবল আশপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বাস করা মানুষ ছাড়া এর কথা জানত না কেউ।

তবে সবকিছু বদলে গেল ১৯১১-এর গ্রীষ্মে। ওই সময় অভিযাত্রীদের ছোট্ট একটি দল নিয়ে হিরাম বিংহ্যাম ওই এলাকায় হাজির হন ইনাকাদের বিখ্যাত ‘হারানো’ শহরের খোঁজে।

কাসকো থেকে পায়ে হেঁটে ও খচ্চরের (ঘোড়া ও গাধার সংকর) পিঠে চড়ে উরুবামবা উপত্যকা ধরে রওনা হন তাঁরা। এ সময়ই স্থানীয় একজন কৃষক তাঁদের জানান, কাছের একটি পর্বতের চূড়ায় কিছু প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ আছে। কৃষক পর্বতটিকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মাচুপিচু নামে। স্থানীয় কুয়েচুয়া ভাষায় এর অর্থ ‘ওল্ড পিক’ বা ‘পুরোনো চূড়া’।

পরদিন ২৪ জুলাই আবহাওয়া ছিল শীতল। সেই সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছিল। দুরারোহ পার্বত্য পথ ধরে বৈরী আবহাওয়ায় বেশ কসরত করে ভ্রমণের পর কৃষকদের একটি ছোট দলের দেখা পান। তাঁরা বাকি পথটা চিনিয়ে দেন বিংহ্যামদের। আর সঙ্গে দিয়ে দেন এগারো বছরের এক বালককে। এই বালকের নেতৃত্বে মাচুপিচুর প্রবেশপথ চিহ্নিত করা অসাধারণ শৈলীর পাথুরে তাকগুলোর আভাস পান প্রথম বিংহ্যাম ও তাঁর সহযাত্রীরা।

মাচুপিচু আবিষ্কারই বিখ্যাত করে দেয় বিংহ্যামকে। বিশেষ করে এই আবিষ্কার নিয়ে তাঁর লেখা একটি বই মাচুপিচু এবং তাঁকে পরিচিত করে তুলতে বড় ভূমিকা রাখে। কৌতূহলী পর্যটকেরা পেরুতে হাজির হতে থাকেন প্রাচীন ইনকার নগরীর ধ্বংসাবশেষটি এক ঝলক দেখার জন্য। তারপর বিংহ্যামের পথ অনুসরণ করে হাজির হতে থাকেন মাচুপিচুতে।

প্রাচীন নগরীটি ছড়িয়ে আছে পাঁচ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে। এর নানা অংশকে সংযুক্ত করেছে তিন হাজার পাথরের সিঁড়ি। এখন ৩ লাখের বেশি পর্যটক মাচুপিচু ভ্রমণ করেন প্রতিবছর। ‘পবিত্র শহর’-এর উঁচু উঁচু পাথুরে স্থাপনার ওপাশে সূর্যাস্তের দৃশ্য এবং মানুষের তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত ও আশ্চর্যজনক স্থানগুলোর একটির নানা বিস্ময়কর, রহস্যময় কীর্তি দেখে মুগ্ধ হন।

সূত্র:হিস্ট্রি ডট কম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com