চলন্ত ফ্লাইটে যাত্রীরা ব্যবহার করতে পারবেন ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কিংবা ৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় বসে উপভোগ করতে পারবেন লাইভ ক্রিকেট ম্যাচ। এমন সব নতুন অফার নিয়ে হাজির হবে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ভারতীয় সহযোগী বিমানসংস্থা ভিস্তারা।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান স্ট্র্যাটেজি কর্মকর্তা ভিনোদ কান্নান জানান, শীঘ্রই এই সেবা নিয়ে গ্রাহকদের সামনে হাজির হচ্ছেন তারা, যার মূল্য নির্ধারিত হতে পারে সামনের যে কোন সপ্তাহে।
এর মাধ্যমে প্রথম কোন ভারতীয় বিমান সংস্থা হিসেবে ইন-ফ্লাইট ওয়াই-ফাই এবং স্ট্রিমিং সার্ভিসেস চালুর দাবীদার হবে ভিস্তারা।
তাদের নতুন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারে এই সেবা চালু করা হবে। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বের একটি প্রিমিয়াম এয়ারলাইনে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে তারা আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।
ক্রিকেট ভারতের একটি জনপ্রিয় খেলা যেটির লাইভ স্ট্রিম দেখার জন্য অনেক যাত্রীই আগ্রহী হবে। এতে অনেক ডাটা খরচ হলেও যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স আশা করছে, এই সেবা চালুর মধ্য দিয়ে ভিস্তারা ভারত থেকে ইউরোপ ও আমেরিকা যাওয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ রুটে এমিরেটস এবং ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজের একতফরকা প্রভাব কাটাতে পারবে। এর মাধ্যমে তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও বিষয়টি নিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স উদ্বেগ প্রকাশ করে সতর্ক করেছে। তারা জানিয়েছে এক্ষেত্রে বিমান সংস্থাটিকে “উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ” মোকাবেলা করতে হবে। এর কারণ হিসেবে তারা করোভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তাদের এ সপ্তাহে বাতিল করা অসংখ্য ফ্লাইটের কথা উল্লেখ করেছ।
গত জানুয়ারিতে ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, এই মাসের শেষেই ভিস্তারা তাদের ছয়টি ড্রিমলাইনার অর্ডারের প্রথমটি বুঝে পাবে। তারা বিদেশি বাজারে তাদের কর্মকান্ড বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আরো নতুন নতুন উড়োজাহাজ কেনারও পরিকল্পনা করছে বলেও জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স এবং টাটা গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে এই সংস্থাটি ২০১৫ সালে তাদের যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে তাদের বহরে রয়েছে ৩২ টি এয়ারবাস A320 এবং সাতটি বোয়িং 737।
ভারতের এভিয়শেন বাজার মূলত ইন্ডিগোর মত কম খরচের বিমান সংস্থার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ভিসতারা তাদের সেবাকে প্রিমিয়াম সেবা হিসেবে দাবী করে থাকে। যদিও তারা তাদের বিজনেস ক্লাস আসন কমিয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম সেবার ব্যতয় ঘটিয়েছে বাজারে টিকে ঠেকেছে।
প্যানাসনিক এবং এভিয়োনিক্স কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যেগে ভারতের আকাশপথের যাত্রীদের জন্য স্যাটেলাইট সংযোগ সেবা চালু করেছে। এই সেবার প্রথম গ্রাহক হতে যাচ্ছে ভিসতারা। ড্রিমলাইনারের পাশাপাশি তারা তাদের অর্ডারে থাকা এয়ারবাস এস ই A321 গুলোতেও ওয়াইফাই চালু করবে বলে জানিয়েছে কান্নান।
ভারত ২০১৬ সালেও একবার ইন-ফ্লাইট ওয়াই ফাই অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় তা অনুমোদন পায়নি।