বর্তমানে পৃথিবীতে ১৯৬ টি স্বাধীন দেশ রয়েছে। যার প্রত্যেকটিরই রয়েছে নিজস্ব নিজস্ব পাসপোর্ট। তেমনি বাংলাদেশের জন্য আছে একটি পাসপোর্ট যা দিয়ে আপনি বহির্বিশ্বে ভ্রমণ করতে পারবেন। কিন্তু ভ্রমণের জন্য অবশ্যই আপনার ভিসা লাগবে। কিন্তু তারপরেও কিছু কিছু দেশ রয়েছে যেখানে ভ্রমণ করতে হলে আপনার কোন ভিসা লাগবে না অথবা এরাইভাল ভিসাতে ভ্রমণ করতে পারবেন। সেটা অবশ্য নির্ভর করে আপনার দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী তার ওপর। যেমন ধরুন সিঙ্গাপুরের পাসপোর্ট পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট। এই পাসওয়ার্ডটি দিয়ে প্রায় ১৮৮ টি দেশে ভিসা ফ্রি ভ্রমণ করা যায়। বাংলাদেশের অবস্থান অবশ্য প্রায় শেষের দিকে (৯৭ তম), বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে আপনি ৪১ টি দেশে ভিসা ফ্রি ভ্রমণ করতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের ১০ টি দেশ সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি যেখানে বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। ল্যাটিন শব্দ ইন্ডাস থেকে ইন্দোনেশিয়া শব্দটি এসেছে যার অর্থ হলো দ্বীপ। প্রায় পাঁচ হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত তাছাড়া ইন্দোনেশিয়ার পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দৃশ্য ও বিভিন্ন কারণে ইন্দোনেশিয়া পর্যটকদের কাছে সব সময় প্রাধান্য পায়। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা এবং এখানকার সরকারী ভাষা ইন্দোনেশিয়ান এবং প্রচলিত মুদ্রা হল রুপিয়া।
কেন ইন্দোনেশিয়া যাবেন?
হাজার দ্বীপের সমারোহের কারণে সারা বছরই ইন্দোনেশিয়ায় হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দেশ থেকে এসে ভিড় জমায়। দ্বীপ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার ৫৭ শতাংশ ভূমি জুড়েই রয়েছে ক্রান্তীয় বনাঞ্চল। এছাড়াও এখানে রয়েছে অনেক পর্বত ও আগ্নেয়গিরি। সবচেয়ে বড় কথা ইন্দোনেশিয়া মূলত পর্যটকদের কাছে স্বর্গতুল্য। তাছাড়া এখানে ঘুরে আসতে বাংলাদেশীদের ভিসা লাগবে না। তাই চাইলে যে কোন ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন ইন্দোনেশিয়া থেকে।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
প্রথমেই বলে রাখি যদি বাস অথবা ট্রেনে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে সেটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিন। কারণ আমি যে দেশগুলোর সম্পর্কে আজ বলছি তার ভেতর শুধু ভুটানই বাংলাদেশের কাছাকাছি একটি রাষ্ট্র, তাই ভুটানে ছাড়া কোথাও বাস অথবা ট্রেনে যাওয়া সম্ভব নয়। সবগুলোতেই আপনাকে আকাশপথে ভ্রমণ করতে হবে। এবার মূল কথায় আসি, বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়ার সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই। ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে মালয়েশিয়া যেতে হবে। ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর এর টিকিট করে নিবেন এবং তারপর কুয়ালালামপুরে ৩-৪ ঘন্টা ট্রানজিট করার পর কুয়ালালামপুর– জাকার্তা বিমান টিকিট করে নিবেন। পুরো ভ্রমণটা ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা স্থায়ী হবে। আর অবশ্যই আগে থেকে টিকিট কেটে রাখার চেষ্টা করবেন। রাউন্ড ট্রিপ এর জন্য ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে।
ওশেনিয়া মহাদেশের মাতানিতু কো ভিতি অর্থাৎ ফিজি প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই দেশটি অস্ট্রেলিয়া থেকে ৩১৩০ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে অবস্থিত। যার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট লক্ষের মত। এখানেও প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমায় দেশটির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। ফিজির রাজধানী হল সুভা এবং এখানকার প্রচলিত মুদ্রার নাম হল ফিজিয়ান ডলার। ফিজিতে তিনটি ভাষার প্রচলন রয়েছে ইংরেজি, ফিজিয়ান এবং ফিজি হিন্দি। বাংলাদেশীরা ছয় মাসের জন্য ফিজিতে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারে।
ফিজিতে কেনো যাবেন?
৩৩২ টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপের সমন্বয়ে ফিজি দেশটি গঠিত। যার ১০৬ টি দ্বীপেই বিভিন্ন অধিবাসীরা বাস করেন। যার জন্য ফিজিকে মূলত দ্বীপ রাষ্ট্র বলা হয়। সমুদ্রের সৌন্দর্য আর দ্বীপের প্রবাল ও শ্যাওলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ফিজি থেকে। শুধু আপনার বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে।
ফিজির দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
ফিজিতে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই। কিন্তু নিম্নোক্ত রুটগুলোতে আপনি আকাশপথে ফিজিতে যেতে পারেন, যেখানে আপনার এক লক্ষ বিশ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
★ঢাকা – সিঙ্গাপুর – নাদী
★ঢাকা-ব্যাংকক-সিডনী-নাদী
★ঢাকা-চায়না সাউদার্ণ-সিডনী-নাদী
★ঢাকা-ব্যাংকক-অকল্যান্ড-নাদী
কম্বোডিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় একটি দেশ। এটির রাজধানী ফনম পেন। এটির জনসংখ্যা ১৫ কোটির মতো। দেশটি একদম সাদামাটা, এটির সৌন্দর্যে কোনো জটিলতা নেই। কম্বোডিয়ার মুদ্রা হলো রিয়াল এবং এখানকার প্রচলিত ভাষা খমের ও ফরাসি।
কেনো কম্বোডিয়া যাবেন?
সিয়েম রিপের ঠিক বাইরে অবস্থিত আঙ্গকর ওয়াটের আতঙ্ককর প্রাচীন মন্দিরগুলি এখানকার প্রধান আকর্ষণ। আঙ্গকর ওয়াট বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় স্মৃতিস্তম্ভ, এবং এটি বিশ্বের প্রাচীন সপ্ত আশ্চর্যের একটি। মন্দিরের উপর সূর্যোদয় দেখার সময় আপনার নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হবে !
ভ্রমণকারীদের জন্য আরেকটি জনপ্রিয় স্থান দক্ষিণ কম্বোডিয়ায় অবস্থিত কাম্পট শহর। ছোট ঘুমন্ত শহরটি নিমেষেই আপনার মনে জায়গা করে নেবে। এটি বিশাল ল্যান্ডস্কেপ এবং পর্বত দ্বারা বেষ্টিত একটি শহর । কয়েক দিনের ভালো একটা সময় কাটানোর জন্য ঘুরে আসতে পারেন কম্বোডিয়া থেকে।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়া সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। এক্ষেত্রে আপনাকে মালয়েশিয়া ট্রানজিট করতে হবে। যদিও এক্ষেত্রে কোন ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হবে না। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার পর কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট থেকে আপনি সরাসরি কম্বোডিয়া যেতে পারবেন, যাতে সময় লাগবে মাত্র দেড় ঘন্টা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাহামা দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত। এটি প্রায় ৭০০ দ্বীপ এবং ১০০০ “কি” এর সমন্বয়ে গঠিত। দেশটির রাজধানী নাসাউ এবং এর প্রশাসনিক ভাষা হল ইংরেজি। দেশটিতে বাহামিয়ান ডলার ও আমেরিকান ডলার এই দুই ধরনের মুদ্রা চালু আছে। আপনার বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকলে বিনা ভিসায় 30 দিনের জন্য বাহামাস থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
বাহামাস কেনো যাবেনঃ
নীল সমুদ্রের সৌন্দর্য কে না উপভোগ করতে চাই। কিন্তু এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দরকার সঠিক জায়গা নির্বাচন, বাহামাস গেলেই আপনি সেটি বুঝতে পারবেন। বাহামা দ্বীপপুঞ্জে রয়েছে অসংখ্য দ্বীপ আর রয়েছে অসংখ্য বিচ। এইসব বিচ গুলোর নীল সৌন্দর্য আপনার চোখে পড়লেই নীল জলে গা ভাসিয়ে দিতে ইচ্ছে করবে। তাছাড়া এখানকার আবহাওয়া খুবই মৃদু প্রকৃতির। এখানকার ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ুর অনুকূলতার জন্যই প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক দেশটিতে ভিড় জমায়। এছাড়াও এখানকার খাবার-দাবার, জাদুঘর, ডাউনটাউন, কলোনিয়াল বাড়ি, ডলফিন ও পশুপাখি সবকিছুই আপনার মন কাড়বে।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
বাহামাসে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই কিন্তু নিম্নোক্ত রুটগুলোতে আপনি আকাশপথে বাহামাসে যেতে পারেন। যেখানে আপনার ১৯০০ থেকে ৫০০০ ইউএস ডলার খরচ হতে পারে।
★ঢাকা- কুনমিং,চায়না- বেইজিং,চায়না- নিউইয়র্ক,আমেরিকা- নাসাও,বাহামাস।
★ঢাকা- গাংজোউ,চায়না- টরোন্টো,কানাডা- নাসাও,বাহামাস।
★ঢাকা- দোহা,কাতার- মিয়ামি,আমেরিকা- নাসাও,বাহামাস।
★ঢাকা- দোহা,কাতার- লন্ডন,ইংল্যান্ড- মিয়ামি,আমেরিকা- নাসাও,বাহামাস।
★ঢাকা- কুনমিং,চায়না- সাংহাই,চায়না- অ্যাটলান্টা, আমেরিকা- নাসাও,বাহামাস।
বজ্র ড্রাগনের নামে পরিচিত ভুটান হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত। ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম জনসংখ্যার একটি রাষ্ট্র এবং এছাড়াও এটি সার্কভুক্ত একটি রাষ্ট্র সবচেয়ে বড় শহর এবং রাজধানী থিম্পু। এখানকার প্রশাসনিক ভাষা সংখ্যা এবং প্রচলিত মুদ্রার নাম গুলট্রাম। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা বিনা ভিসাতে ভুটানের যতদিন ইচ্ছা ততদিন থাকতে পারে।
কেনো যাবেন?
হিমালয়ের পূর্ব প্রান্তের বৌদ্ধ রাজত্ব ভুটান, এটির মঠ, দুর্গ এবং নাটকীয় ল্যান্ডস্কেপের জন্য সুপরিচিত। এখানে সমভূমি থেকে শুরু করে খাড়া পাহাড় এবং উপত্যকা সবকিছুই আছে। তাছাড়া সাধারণত ভ্রমণ প্রিয় মানুষরা ভ্রমণ করে দুঃসাহসী কোনো কিছু আবিষ্কারের জন্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অথবা সেই এলাকার সংস্কৃতি, মানুষের জীবন-জীবিকার ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য। এসব দিক বিবেচনা করলে ভুটান সবসময়ই পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই থাকে। কারণ ভুটানের প্রত্যেকটি জিনিসই আপনাকে আকর্ষণ করবে এখানকার পাহাড়-পর্বত, নদী, সবুজ বন সবকিছুতেই কেমন জানি একটা সৌন্দর্যের স্পর্শ লেগে আছে। যেগুলো আপনাকে অভিভূত করবে। প্রতিবছর সারা পৃথিবী থেকে হাজার হাজার মানুষ ভুটান ভ্রমণ করতে আসে। তাহলে বাংলাদেশের এত কাছে হওয়ার শর্তেও আমরা কেন যাব না? তাও আবার যেতে কোন ভিসা লাগে না। তাই যদি সময় পান ব্যাগ গুছিয়ে নিন, আর ঘুরে আসুন এই অপরূপ সুন্দর প্রতিবেশী দেশটি থেকে।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
বাংলাদেশ থেকে ভুটানে আপনি সড়কপথে এবং আকাশপথে দুইভাবেই ভ্রমণ করতে পারবেন। সড়ক পথে যেতে হলে আপনাকে প্রথম ইন্ডিয়ায় যেতে হবে। এর জন্য আপনার ইন্ডিয়ার ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হবে। ইন্ডিয়া যাওয়ার পর তারপর আপনি ইন্ডিয়া –ভুটান বর্ডার ক্রস করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার খরচ সাত থেকে দশ হাজার এর মত আসবে। আর বিমানে যেতে চাইলে আপনি সরাসরি ঢাকা থেকে ভুটানের পারো বিমানবন্দর যেতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনার কোন ট্রানজিট ভিসা দরকার হবে না অর্থাৎ একদম ঝামেলা মুক্ত ভ্রমণ। আপনি ইকোনমিক ক্লাসে গেলে ১২ হাজার এবং বিজনেস ক্লাসে গেলে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ আসবে।
জ্যামাইকা ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র, যেটি মধ্য আমেরিকা থেকে ৬২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত। দেশটির রাজধানী হল কিংস্টন এবং এখানকার প্রশাসনিক ভাষা ইংরেজি। এখানকার প্রচলিত মুদ্রা জ্যামাইকান ডলার। শুধুমাত্র বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে আপনি এক মাসের জন্য অন এ্যারাইভাল’ ভিসা দিয়ে এখান থেকে ভ্রমণ করে আসতে পারেন।
কেনো যাবেন?
ক্যারিবিয়ান সাগরের একটি দ্বীপ হিসেবে জ্যামাইকা আপনাকে উপহার দেবে সাদা বালিযুক্ত বিস্তৃত সমুদ্র সৈকতের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।
কৃষ্টাল নীল রঙের পানি, প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সূর্যাস্তের আভা এ সবকিছুর একটা কম্বিনেশন প্রত্যেকটা দ্বীপকে আরো সুন্দর করে তুলেছে। ছোট ছোট পাহাড় ও টিলাগুলোর মাঝখানে সবুজে ঘেরা ছোট ছোট বনগুলোর দিকে তাকালেই আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে। এছাড়াও উপকূলীয় আবহাওয়া আপনাকে জামাইকা ভ্রমণের জন্য উৎসাহ দেবে।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
মালদ্বীপ দক্ষিণ এশিয়ার ভারত মহাসাগরীয় একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। যার জনসংখ্যা মাত্র ৩ লক্ষ। দেশটির রাজধানীর নাম মালে এবং এখানকার সরকারি ভাষা দিভেহি। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু দেশ যার, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা মাত্র ২.৩ মিটার। আপনার যদি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকে তাহলে ৩০ দিনের জন্য আপনি অন এ্যারাইভাল’ ভিসা দিয়ে মালদ্বীপ ঘুরে আসতে পারেন।
কেনো যাবেন?
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মালদ্বীপ প্রায় বারোশোটি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। যার মাত্র ১৮৫ টি দ্বীপে স্থানীয় লোকজন বসবাস করে এবং বাকি দ্বীপগুলোতে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। দেশটির মূল অর্থনীতি হলো পর্যটন শিল্প।
মালদ্বীপ যেহেতু দ্বীপ রাষ্ট্র সেহেতু এখানে পর্যটন এর মূল আকর্ষণ হলো সমুদ্র, দ্বীপ, প্রবাল এবং মৎস্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিবছর প্রায় ছয় লক্ষের অধিক পর্যটক বিভিন্ন জায়গা থেকে মালদ্বীপ ঘুরতে আসে। তাছাড়া মালদ্বীপে আসা পর্যটকদের অন এ্যারাইভাল’ ভিসা দেওয়া হয়। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গুলোতে ল্যান্ডিং করার পর সেখান থেকে ভিসা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়, তাই সময় হলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র মালদ্বীপ থেকে ঘুরে আসতে ভুলবেন না।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
নিম্নোক্ত রুটগুলোতে ঢাকা থেকে মালদ্বীপ বিমানযাত্রা করতে পারবেন। তাতে আপনার খরচ আসবে ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
★ঢাকা–কলকাতা,ইন্ডিয়া –কোচিন,ইন্ডিয়া–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–ব্যাংকক–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–চেন্নাই–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–কলোম্বো–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–সিঙ্গাপুর–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–কুয়ালালামপুর–কলোম্বো–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–সিঙ্গাপুর–কলোম্বো–মেল,মালদ্বীপ।
★ঢাকা–দুবাই–মেল,মালদ্বীপ।
ভানুয়াতু দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ, যা প্রায় ৮০ টি দ্বীপপুঞ্জ গঠিত, এবং ১৩০০ কিলোমিটার প্রশস্ত। হারবারসাইড পোর্ট ভিলা হলো দেশের রাজধানী এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র যেটি ইফতে দ্বীপে অবস্থিত। ২ লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশটিতে প্রায় ১১০ টি ভাষাভাষি লোক বাস করে। দেশটির মুদ্রার নাম ভানুয়াতু ভাতু। আপনি যদি বাংলাদেশি হন তাহলে কোনো ভিসা ছাড়াই ৩০ দিনের জন্য ভানুয়াতু ঘুরে আসতে পারেন।
কেনো যাবেন?
সরল সোজা সৌন্দর্যের দেশ ভানুয়াতু। মূলত দেশটা অনেক সিমসাম একটা দেশ। ভানুয়াতুর রাস্তা দিয়ে হাটার সময় মাঝে মাঝে আপনার চোখে সুন্দর সুন্দর ফুল বাগান পড়বে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এখানে এখনো আদিবাসীরা বাস করে, অনেকেই এদেরকে মানুষ খেকো ভেবে ভুল করেন। ভানুয়াতুতে এখনো একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এখানকার মানুষের সরলতা ও সংস্কৃতি সম্বন্ধে বিস্তর ধারণা পেতে ঘুরে আসতে পারেন ভানুয়াতু থেকে। নীল জলে সাঁতার কাটা থেকে শুরু করে এডেন নদীর উপর দিয়ে হাটার মজা আপনি এখান থেকে পেয়ে যাবেন। মূলত দ্বীপ রাষ্ট্র হওয়ার কারণে প্রবাল, সমুদ্র সৈকত এবং সাদা বালুকাময় পরিবেশের আনন্দ আপনি সহজে এখান থেকে উপভোগ করতে পারবেন। তাই যদি কখনো সময় পান এখান থেকে ঘুরে আসতে ভুলবেন না।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
নিম্নোক্ত রুটগুলোতে ঢাকা থেকে ভানুয়াতু বিমানযাত্রা করতে পারবেন। তাতে আপনার খরচ আসবে আড়াই লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
ঢাকা–কুয়ালালামপুর–সিডনি–নাদি–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
ঢাকা–সিঙ্গাপুর–সিডনি–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
ঢাকা–গুয়াঙজো,চায়না–সিডনি–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
ঢাকা–কলকাতা–হংকং–ব্রিজবেন–পোর্ট ভিলা,ভানুয়াতু।
বার্বাডোস একটি পূর্ব ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র এবং একটি স্বাধীন ব্রিটিশ কমনওয়েলথ জাতি। এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ আইল্যান্ডের পূর্ব দিকে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত। রাজধানী ব্রিজটাটাউন দেশটির প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু ও সর্ববৃহৎ শহর। এখানকার প্রশাসনিক ভাষা ইংরেজি এবং প্রচলিত মুদ্রা হল বার্বাডিয়ান ডলার। সুন্দর এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়াই ৪ মাস ভ্রমণ করতে পারবে।
কেনো যাবেন?
বার্বাডোসে যাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো হ্যারিসন এর গুহা, বার্বাডোসের গরমের দিনগুলোতেও এটির নিচে ঠাণ্ডা থাকে, যা একটি চমৎকার বৃষ্টির দিনের বিকল্প হতে পারে। এখানে খুব সহজেই সুন্দর সুন্দর বোটানিক্যাল গার্ডেন এর দেখা মেলে। বার্বাডোসকে নীল দেশ বললে কোনে ভুল হবে না। যেদিকেই তাকান নীল সাগর নাহলে নীল আকাশ। সমুদ্র সৈকতের দিকে তাকালে মনে হবে সাদা বালুর কার্পেট কেউ যেন খুব যত্ন করে বিছিয়ে রেখেছে। তাছাড়া কিছুদিনের জন্য লাক্সারি জীবনযাপন করতে চাইলেও বারবাডোস থেকে ঘুরে আসতে পারেন। বার্বাডোসের মানুষরা খুব বন্ধুত্বসুলভ, এখানে গেলেই আপনি সেটা বুঝতে পারবেন। সমুদ্রে ডাইভিং, সাঁতার ও ফিশিং সবকিছুই করতে পারবেন এখানে। এসব মিস না করতে চাইলে সময় করে ঘুরে আসুন বার্বাডোস থেকে। সত্যিই অনেক ভালো লাগবে।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
দেড় লক্ষ থেকে শুরু করে ৮ লক্ষ টাকার বিমান টিকেটে আপনি ঢাকা থেকে বার্বাডোস যেতে পারবেন। যার মাঝে দুই থেকে তিনটা স্টপে আপনাকে থামতে হবে। সাধারণত নিম্নোক্ত রুটগুলোতে বার্বাডোস যাওয়া যায়ঃ
★ঢাকা–ইস্তাম্বুল–নিউ ইয়র্ক –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–গুয়াঙজো,চায়না–নিউ ইয়র্ক –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট,কাতার–নিউ ইয়র্ক –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট,কাতার–লন্ডন –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–কুনমিং–বেইজিং –টরোন্টো–ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–সিঙ্গাপুর–লন্ডন –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–কুয়ালালামপুর–লন্ডন –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
★ঢাকা–ব্যাংকক–লন্ডন –ব্রিজটাউন,বার্বাডোস।
ক্যারিবিয়ান সাগরে অবস্থিত পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের একটি পাহাড়ি দ্বীপরাষ্ট্র হল ডোমিনিকা। ঘন ক্রান্তীয় বনাঞ্চলে ঘেরা দেশটির রাজধানী হল রোজো। এখানকার প্রশাসনিক ভাষা ইংরেজি হলেও এখানকার বেশির ভাগ লোকজনই ফ্রেন্স থেকে উদ্ভূত ভাষা ক্রেওলে কথা বলে। ডোমিনিকার প্রচলিত মুদ্রা হলো ইস্ট ক্যারাবিয়ান ডলার। এখানকার অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্ভর করে মূলত এখানে প্রচুর পরিমাণে কলা চাষ হয়। বাংলাদেশীদের ডোমিনিকা ভ্রমণের জন্য কোনো ভিসা প্রয়োজন হয় না। আপনার যদি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকে তাহলে এক মাসের জন্য অন এ্যারাইভাল’ ভিসা দিয়ে আপনি ডোমিনিকা ভ্রমণ করতে পারবেন।
কেনো যাবেন?
ডোমিনিকা হল ক্যারাবিয়ান অঞ্চলের সিক্রেট বিউটি। এর বিশাল পর্বতমালার, প্রচুর সবুজ বন এবং নদীগুলির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এটা সত্য যে, এখানে ততটা ভালো কোনো রিসর্ট নেই, কিন্তু ব্যাপারটা হলো আপনি তো আর ডোমিনিকাতে ঘুমাতে যাবেন না। সাহসী পর্যটকদের জন্য ডোমিনিকা একটা ভালো চয়েজ, কারন তারা এখানে গিয়ে পর্বত আরোহন, ডাইভিং, সাতারসহ অনেক কিছু ডিসকভার করতে পারবেন। সর্বোপরি ডোমিনিকার ছোট ছোট দ্বীপ, প্রবাল প্রাচীর, ঘন অরণ্য, অন্যরকম প্রজাতির জীববৈচিত্র্য ও ছোট ছোট পাহাড়, টিলা সবকিছুই আপনাকে অভিভূত করবে। তাছাড়া ডোমিনিকাতে পর্যটকেরা খুব ফ্রি ভাবেই চলাফেরা করতে পারে, আসলে এখানে চোর, ছিনতাইকারীদের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
যেভাবে যাবেনঃ
বাংলাদেশ থেকে সাধারনত একটা রুটেই ডোমিনিকা যাওয়া যায় সেটা হলোঃ ঢাকা–দোহা,কাতার–লন্ডন–এন্টিগুয়া–ডোমিনিকা।
কাতার এয়ারলাইন্স এই রুটে সার্ভিস দিয়ে থাকে, যাতে খরচ আসে দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা।