ভিয়েতনামে প্রতিবছরই প্রচুর বৃষ্টি হয়। এমনকি অনেক অঞ্চল প্লাবিতও হয়। কিন্তু তারপরও তাদের কাছে বৃষ্টি খুবই শুভ। তারা মনে করেন বৃষ্টি মানেই দেশে ড্রাগন ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভিয়েতনামি রূপকথা অনুযায়ী ড্রাগনই হল সৃষ্টির উৎস এবং তারা ড্রাগনের বংশধর। মানচিত্রে দেশটি দেখতে অনেকটা ড্রাগন আকৃতির। তাই ভিয়েতনামবাসীর বিশ্বাস একদিন তারা এশিয়া মহাদেশে ড্রাগনের মতো সর্বশক্তিমান হবে।
প্রাকৃতি সৌন্দর্যে ঘেরা শহর হ্যালং এর নাম ঘুনেছেন? হ্যানয় থেকে ১৮২ কিলোমিটার দূরে কুইং লিন প্রদেশে হ্যালং উপসাগরের তীরে এর অবস্থান। টং কিং উপসাগরেরই অংশবিশেষ হল হ্যালং উপসাগর। ছোটবড় প্রায় ২ হাজারটি মনোলিথিক দ্বীপ নিয়েই এই উপসাগর। এর মধ্যে মাত্র ৯৮৯টি দ্বীপের নাম রয়েছে, বাকিগুলো নামহীন। দ্বীপের নামগুলিও অদ্ভুত। যেমন, হন গা চই, হন মই না, হন ভই (হাতি দ্বীপ) ইত্যাদি।
‘টি-টপ’ ছাড়া বাকি দ্বীপগুলোই আকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৬২ সালে টি-টপ দ্বীপে হো চি মিন-এর সঙ্গে এসেছিলেন সোভিয়েত মহাকাশচারী গ্যেরম্যান টিটভ। হো চি মিন তখন এই দ্বীপের নামকরণ করেছিলেন। ইউনেস্কো-র ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় জায়গা করে নেয়া হ্যালং উপসাগরের এই দ্বীপগুলোর কয়েকটিতে রয়েছে স্ট্যালাগমাইট এবং স্ট্যালাগটাইট-এর আশ্চর্য গুহা।
হ্যালং শহরের জেটি থেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রুজ নির্বাচন করে দেখে নিতে হয় নৈসর্গিক শোভা। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি ২ রাত-৩ দিনের ক্রুজ নির্বাচন করেন। হ্যালং শহর থেকে হ্যালং বে-র সৌন্দর্য চাক্ষুষ করতে উঠতেই হবে ‘বাই থো’ পাহাড়ে। হালকা চড়াই পথে উঠতে কমবেশি আধ ঘণ্টা সময় লাগবে। এই পাহাড়েই নিওলিথিক যুগের শেষ পর্বের ভিয়েতনামী সংস্কৃতির নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। হ্যালং বে-র সৌন্দর্য চাক্ষুষ করবেন সূর্যাস্ত কিংবা সূর্যোদয়ের সময়।
জেনে রাখুন
মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর হ্যালং-বে ভ্রমণের আদর্শ সময়। হার্বস ও মুরগির মাংস মেশানো ভিয়েতনামীদের প্রিয় খাদ্য ‘ফো’ মিস করবেন না। রোদ চশমা, সানস্ক্রিন, ওষুধপত্র, ছাতা, ডং (ভিয়েতনামের মুদ্রা) বা খুচরা ডলার সঙ্গে রাখুন।