শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ভারত ভ্রমণ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

অনেকদিনের স্বপ্ন ছিলো। সত্যি করতে ব্যস্ত হয়ে উঠলাম শেষে আমার মতোই একজন পেয়ে গেলাম , নাম মিজান অত্যন্ত ভদ্র ছেলে বয়সে ছোট হলেও দারুণ সব মিল ছিলো দুজনের মধ্যে । সিদ্ধান্ত নিলাম দুজনেই যাব । ঢাকা থেকে দুটো টিকিট নিশ্চিত করলাম 22 তারিখ 17:30 শিয়ালদহ টু দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস আর 30তারিখ শ্রীনগর(কাশ্মীর) টু দিল্লি গো এয়ার।

21 তারিখ রাত 11টায় বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম, 22তারিখ তিনটায় শিয়ালদহ পৌঁছে গেলাম। খাওয়া সেরে নির্ধারিত ট্রেনে উঠলাম দিল্লির উদ্দেশ্যে সারারাত ট্রেনে 23 তারিখ সকাল 8টায় টুন্ডোলা স্টেশন পার হচ্ছে তখনই শুনলাম এখানে নামতে পারলে আগ্রা যেতে খুবই সহজ হবে। কিন্তু ট্রেন থামে না তবে ধীরে টুন্ডোলা পার হয় অপেক্ষায় থাকলাম সুযোগ বুঝে দুজনে লাফ দিলাম ।মাত্র 15 কি.মি. দুরেই স্বপ্নের তাজমহল ভাবতেই মন চঞ্চল হয়ে গেল যেন আর দেরি সহ্য হয় না । স্টেশনে ওয়াশরুমের সুন্দর ব্যবস্থা দেখে নিজেকে ফুল ফ্রেশ করে নিলাম সকাল 10টার মধ্যেই তাজমহল দর্শন চোখ জুড়িয়ে গেলো সে এক মুহূর্ত অনুভূতি ।

দেখতে দেখতে কখন চার ঘন্টা হয়ে গেছে খেয়াল করিনি তার পর আগ্রা ফোর্ট দেখে রাতে গাড়িতে, 24 তারিখ শুক্রবার সকাল 10টায় আজমির শরীফ,, জুম্মা নামাজ পরে বিখ্যাত সেই বাসমুতি চাউলের বিরিয়ানী খেয়ে জয়পুরের উদ্দেশ্যে,সন্ধ্যায় জয়পুর হোটেল নিলাম। 25 তারিখ সকাল 8 টা থেকে দুপুর 3টা বিরিলিয়া মন্দির , সিটি প্যালেস, হাওয়া মহল, জল মহল, আমের ফোর্ট, বিন্দাবন গার্ডেন, পিং সিটি ইত্যাদি দেখে সেই দিল্লি যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠলাম (আগ্রা থেকেই দিল্লি টু জম্মুর ট্রেনের টিকিট কেটে রাখেছিলাম) যথাসময়ই রাতে ট্রেনে উঠলাম 26 তারিখ সকাল 9টায় জম্মু পৌছালাম। জম্মু থেকে 26-30 তারিখের জন্য প্রাইভেট কার নিলাম

প্যাকেজটা ছিলো এরকম ঃ

26তারিখ পত্নীপট রাতে হোটেল । 27 তারিখ পেহেলগাম রাতে শ্রীনগর হোটেল। 28 তারিখ সোনমার্গ রাতে শ্রীনগর হোটেল।29 তারিখ গোলমার্গ রাতে শ্রীনগর হাউসবোট।30 তারিখ শ্রীনগর লোকাল যেমন ডাল লেক সিকারা রাইড , টিউলিপ গার্ডেন, মোগল গার্ডেন, নিশাদ গার্ডেন অবশেষে বিকালে শ্রীনগর এয়ার পোর্ট ড্রপ । কাশ্মীরের পেহেলগামে সেই বিখ্যাত বেতাব ভ্যালী , আরু ভ্যালী। সোনমার্গে মাইনাস 15 ডিগ্রি তাপমাত্রা রাস্তার দুপাশে কুড়ি ফুট উচু বরফ ফিসিং পয়েন্ট,স্লিজিং পয়েন্ট,, আর গোলমার্গে গোন্ডলায় চড়ে 12500 ফুট উপরে কন্গডোর পয়েন্টে বিশাল বরফে লিলাভূমি বরফে স্কিইং করার অভিজ্ঞতা এবং সৌন্দর্যে অভিভূত হয়েছি আর মনে হয়েছে প্রকৃতির এতো রূপ সত্যিই সৃষ্টিকর্তার মহিমা। 30তারিখ কাশ্মীরকে বিদায় জানিয়ে রাতে দিল্লি হোটেল 31তারিখ সারাদিন দিল্লি ঘুরে সন্ধ্যায় কলকাতার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠলাম । 1 তারিখ বিকালে পৌছালাম আমার সাথী মিজানকে দেশে ফেরার জন্য কলকাতা থেকেই বিদায় দিতে হলো কারণ আমার ভ্রমণ বাকি ছিলো তাই। আমার ইন্ডিয়ান এক বন্ধু বাড়ি মুর্শিদাবাদ 209 কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে শিয়ালদহ রেলস্টেশনে আগে থেকে অপেক্ষা করছিলো ওর বাড়িতে যাবো বলে, তাই হলো সোজা চলে গেলাম মুর্শিদাবাদ । 2 তারিখ থেকে 7 তারিখ বন্ধুর বাড়িতে ছিলাম 20 কি.মি দুরেই বেড়াতে গেলাম হাজারদোয়ারী, ইমামবারা, কাটরা মসজিদ , জগতশেঠের বাড়ি, নবাব সিরাজউদ্দৌলার সমাধি, মতিঝিল গার্ডেন আরো অনেক কিছু । আর একদিন চলে গেলাম বোলপুর কবি গুরুর শান্তিনিকেতনে ।

এবার বিদায় নিয়ে এলাম। বন্ধুর আতিথিয়তায় আমি মুগ্ধ। মুর্শিদাবাদ ছুটি পাস করতে পাঁচদিন লাগলো এই পাঁচদিনে ওর কাছে আত্মীয়দের কাছ থেকে ফোন আসতে থাকলো বেড়াতে হবে শেষে তাই হলো আর যেখানেই গেলাম আদর ভালোবাসার দারুন এক সুখকর অনুভূতি ছিল।

7 তারিখ বিদায় নেবার পালা আমি বললাম বাড়ি থেকে বিদায় দেন আমি ঠিক যেতে পারবো কিন্তু নাছোড় বান্দা সেই 209 কি.মি এসে কলকাতা থেকে ঢাকার বাসে বসিয়ে দিয়ে তারপর চলে গেল

বিদায় বেলার সেই মুহূর্তের কথা প্রকাশ করতে পারলাম না এইটুকু মনের মধ্যেই থাক ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com