শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

ভারতের দর্শনীয় যত স্থান

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩

ঘোরাঘুরি করে সময় কাটাতে কার না ভালো লাগে। ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়ে নিজের পছন্দ মতো কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে সকলেরই ইচ্ছা করে। অসাধারণ সুন্দর কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে হাতের নাগালেই। পাশের দেশ ভারতেই দেখতে পাবেন অতুলনীয় সুন্দর দর্শনীয় অনেক স্থান। সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম ও ভূসংস্থানের বৈচির্ত্র্যের সঙ্গে সমৃদ্ধময় ভূমি ভারতবর্ষ, পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ গন্তব্যস্থল হিসাবে এক বিশিষ্ট স্থান অর্জন করে রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত ভারতবর্ষ, আকর্ষণীয় স্থানের একটি প্রাচুর্য্যে পরিপূর্ণ রয়েছে।

ভারতের ৩২টি বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের মধ্যে ২৫টি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং অবশিষ্ট ৭টি প্রাকৃতিক কেন্দ্র। এছাড়াও আরো ৫০টি কেন্দ্রের নাম ভারত সম্ভাব্য বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে। আজকের প্রতিবেদনে দেখব এমনই কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকা।

কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান

ভারতের অসম রাজ্যের গোলাঘাট ও নগাঁও জেলায় অবস্থিত কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান। এটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। বিশ্বের একশৃঙ্গ গণ্ডারের দুই-তৃতীয়াংশ এই জাতীয় অরণ্যে বাস করে। কাজিরাঙায় একটি সংরক্ষিত অঞ্চল আছে। এখানে বেঙ্গল টাইগারের ঘনত্ব বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।

ইন্ডিয়া গেট

ভারতের নয়াদিল্লীতে অবস্থিত ‘ইন্ডিয়া গেট’ ভারতের অন্যতম প্রধান একটি স্মৃতিস্তম্ভ। মূলত এটি নয়াদিল্লীর কেন্দ্রে একটি যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এটি ১৯২১-১৯৩১ সালের মধ্যে নির্মিত করা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে নিহত প্রায় ৯০,০০০ ভারতীয় বীর সেনার স্মৃতি রক্ষার্থে এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কলকাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দর স্থান। মনুম্যান্ট কলকাতা (পূর্বে ক্যালকাটা নামে পরিচিত) ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯১১ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ভারতের রাজধানী ছিল।

বারাণসী

ভারতের বারাণসীর পবিত্রতম ঘাট বেনারস নামেও অভিহিত, বারাণসী আজকের দিনে বিশ্বের সবচেয়ে এক অন্যতম পবিত্রময় শহর। মার্ক টোয়েন সুখ্যাতিভাবে এটিকে ‘ইতিহাসের চেয়েও প্রাচীন’ বলে বর্ণিত করেছেন।

রেড ফোর্ট বা লাল কেল্লা

লাল কেল্লা ভারতের অন্যতম বৃহত্তম স্মৃতিস্তম্ভ। দিল্লীর হাজারো পর্যটকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানের মধ্যে একটি এটি। এটি প্রায় দীর্ঘ ২০০ বছর ধরে মুঘল সম্রাটদের আবাস ছিল।

হারমন্দির সাহিব

ভারতের সেরা পর্যটক তালিকার পরবর্তী স্থানটি হল পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবস্থিত হারমন্দির সাহিব। এটি অত্যন্ত পবিত্র একটি ধর্মীয় স্থান।

সায়েন্স সিটি

কলকাতায় সায়েন্স সিটি ১৯৯৬ সাল নাগাদ ধারণাতীত হয়েছিল এবং ১৯৯৭ সালের মাঝামাঝি নাগাদ এটি সর্বসাধারণের জন্য সম্পূর্ণরূপে উন্মুক্ত করা হয়। ১৯৯৩ সালের প্রাক্কালে স্পিলবার্গের সুপার-হিট চলচ্চিত্র জুরাসিক পার্ক, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর পুনর্নবীকরণের এক আগ্রহদীপ্ত আলোড়ন তৈরি করেছিল।

তাজমহল

মুঘল স্থাপত্যশৈলীর এই নিদর্শনটি বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম। শাহজাহান-মুমতাজের প্রেমের এই স্মৃতিসৌধটি দেখতে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক উত্তর ভারতের আগ্রা শহরে যান। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত তাজ মহল দেখার সর্বশ্রেষ্ঠ সময় হলো শীতের মাস।

কুতুব মিনার

ইটের তৈরি বিশ্বের সর্বোচ্চ এই মিনার দেখতে গেলে যেতে হবে রাজধানী দিল্লীতে৷ ভারতের প্রথম মুসলমান শাসক, কুতুবুদ্দিন আইবকের নির্দেশে তৈরি হয়েছিল এই মিনার।

স্বর্ণ মন্দির

শিখ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উপাসনালয় পাঞ্জাবের অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দির। শিখ ধর্মে মানবসেবার গুরুত্ব অসীম বলেই ১৬২ কিলোগ্রাম সোনায় মোড়া এই মন্দিরে প্রতিদিন প্রায় ৫০,০০০ লোককে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়।

রাজস্থানের মরুভূমি

ভারতের রাজস্থানে রয়েছে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম মরুভূমি, থর মরুভূমির একটি অংশ, যা জয়সলমীর শহর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে। মরুভূমিতে সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়ের দুশ্য যতটা আকর্ষণীয়, ঠিক ততটাই অভিনব এখানকার স্থানীয় নৃত্য-সংগীত। রাজস্থানকে পুরোদমে উপভোগ করতে অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে যাওয়া ভালো, কারণ, অন্য সময়ে খুব বেশি গরম থাকে।

গোয়া

পশ্চিম ভারতের এই রাজ্যে পাবেন সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, মান্ডোভি নদীর জিভে-জল-আনা সুস্বাদু সামুদ্রিক মাছ ও পর্তুগিজ ইতিহাসসমৃদ্ধ বহু উল্লেখযোগ্য স্থান। ভারতের ‘পার্টি টাউন’ হিসাবে খ্যাত গোয়ায় ভিড় জমান সারা বিশ্বের তরুণরাও।

ভূস্বর্গ কাশ্মীর

‘মর্ত্যের স্বর্গ’ নামে খ্যাত কাশ্মীরে বেড়াতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় মার্চ থেকে আগস্ট, অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে৷ শ্রীনগর, গুলমার্গ, লেহ, সোনমার্গে যাবার আগে খেয়াল রাখতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা। সীমান্ত অঞ্চল হবার কারণে কাশ্মীরে ভারতের অন্যান্য জায়গার তুলনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বেশি কঠোর।

অজন্তা-ইলোরা

ভারতের মহারাষ্ট্রের প্রায় দু’হাজার বছরের পুরোনো এই গুহাগুলি তৈরি হয়েছিলো পাহাড় কেটে। গৌতম বুদ্ধের জীবনকাহিনী বর্ণিত এই গুহাগুলি বহুকাল জঙ্গলের আড়ালে হারিয়ে থাকার পর ১৮১৯ সালে নতুন করে আবিষ্কৃত হয়।

কন্যাকুমারী

ভারতীয় উপমহাদেশের দক্ষিণতম বিন্দু, কন্যাকুমারী৷ তামিল নাড়ু রাজ্যের এই শহরে মিলিত হয় আরব সাগর, ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর৷ ঐতিহ্যপূর্ণ ‘বিবেকানন্দ রক স্মৃতিসৌধ’ ছাড়াও এখানে রয়েছে স্থানীয় দেবী কুমারী আম্মানের মন্দির, যাঁর নামেই এই শহরের নামকরণ।

আজমের শরীফ

রাজস্থানে মরুভূমি ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ধর্মীয় স্থান, যার মধ্যে অন্যতম আজমের শহরে সুফি সাধক খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগা, যা আজমের শরীফ নামেই খ্যাত।

শান্তিনিকেতন

পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরে ১৮৬৩ ষালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘শান্তিনিকেতন’ নামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ সেখানে একটি স্কুল চালু করেন, যা পরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নেয়।

কেরল

‘ঈশ্বরের নিজভূমি’ হিসাবে পরিচিত ভারতের রাজ্য কেরলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। একদিকে আছে বিখ্যাত ব্যাকওয়াটার বা আবদ্ধ জলাভূমি, যা উপভোগ করার জন্য ‘হাউজবোট’-এ চড়তে হবে।

বেনারস-লখনৌ

পৌরাণিক মতে, বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন শহর বেনারস বা বারাণসী না দেখলে ভারতভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়৷ স্থানীয় মন্দির ও গঙ্গার ঘাট দেখা হয়ে গেলে দেখতে পারেন বৌদ্ধ ধর্মের জন্মস্থান সারনাথ। হাতে সময় থাকলে চলে যেতে পারেন পাশের শহর লখনৌ। সেখানে রয়েছে বিখ্যাত ইমামবড়া ও গোলকধাঁধা ‘ভুলভুলাইয়া’। লখনৌ শহরের খাবারও খুব জনপ্রিয়।

দার্জিলিং

বাঙালির প্রিয় দার্জিলিং শহর পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় বেড়ানোর জায়গা। সূর্যোদয়ের সময় কাঞ্চনজঙ্ঘার অতুলনীয় দৃশ্য দেখতে হলে অবশ্যই যেতে হবে দার্জিলিং।

নিক্কো পার্ক

ভূমি, জল ও ভারতের সেরা এয়্যার রাইড প্রদান করে নিক্কো পার্ককে প্রায়ই পশ্চিমবঙ্গের ডিজনিল্যান্ড নামে অভিহিত করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com