বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন
Uncategorized

ব্লকচেইন হতে পারে বাংলাদেশের বিনিয়োগের অন্যতম একটি প্রযুক্তি খাত

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ অক্টোবর, ২০২১

ব্লকচেইন বাংলাদেশের বিনিয়োগের অন্যতম একটি প্রযুক্তি খাত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। আজ বুধবার (৬ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ার -এর বিসিসি অডিটরিয়ামে আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড (IBCOL)” সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের দেশের স্টার্টআপরা অনেক সফলতা পাচ্ছে এবং প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের উপরে বিদেশি বিনিয়োগ এনেছে গত ৫ বছরে।

পলক বলেন, ব্লকচেইনকে উৎসাহিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে এবং ব্লকচেইনকে তাদের কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। ব্লকচেইনের মত একটি ভবিষ্যতমূখী প্রযুক্তি সম্পর্কে যাতে এই দেশের কিশোর-কিশোরিরাও জানতে পারে সেই জন্য আমরা শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব আরো নতুন করে আরো ৫০০০ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি এবং পরবর্তী পর্যায়ে আরো ১০ হাজার পরিকল্পনা আছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের শিশু-কিশোরীদের ভবিষ্যতমুখী প্রযুক্তিতে সক্ষম করে গড়ে তুলতে দেশে অত্যাধুনিক শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। দেশে ইতিমধ্যে ৮,০০০টি “শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব” স্থাপন করা হয়েছে। আরো ৫০০০টি “শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব” ও ৩০০টি “স্কুল অব ফিউচার” স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও আগামীতে আরও ১০,০০০টি “শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব” স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে আরো ৫ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। যার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে।

পলক বলেন, আমরা ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে, ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দিষ্ট টার্গেট দিয়েছেন সেটা হল, এখন যে সাড়ে তিন শো বিলিয়ন ডলারের জিডিপি সাইজ এটা ২০৩১ সালে হবে ৭০০ বিলিয়ন ডলার এবং ২০৪১ সালে ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এখন আমাদের পোশাক শিল্প থেকে আয়, আমাদের প্রবাসী কর্মীদের আয়, কৃষি ও অন্যান্য যে সকল শ্রমনির্ভর অর্থনীতি শিল্প আছে সেগুলোর সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনা চান, একটি জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ ও একটি প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে। আর এ সকল কিছুর জন্য আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছি “ব্লকচেইন প্রযুক্তি”।

ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ফল এখন ১৭ কোটি মানুষ ভোগ করতে পারছে। বিগত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ এর নেতৃত্বে “আইসিটি খাত” এর চারটি পিলার শক্ত ভিত্তির উপর দাড়িয়েছে। সারাদেশে সফট্ওয়্যার, হার্ডওয়্যার, ও বিপিও সেক্টরে ১৫ লক্ষ তরুণ-তরুণীরা কাজ করে আইসিটি শিল্পের অবদান রাখছে। বিগত ১২ বছরে ১৫ লক্ষ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে, ১২ বছর আগের মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলারের আইসিটি শিল্প বর্তমানে ১.৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা বাংলাদেশকে এই “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড (IBCOL)” সফলভাবে আয়োজনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তিগত সমাধান পাওয়া সম্ভব বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

উক্ত সংবাদসম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ আব্দুল মান্নান, পিএএ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” এর চেয়ারম্যান এবং টেকনোহেভেন কোম্পানি লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম।

“অনুপ্রেরণামূলক ক্ষমতায়ন এবং উদ্ভাবন” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এবারের বাংলাদেশ পর্বে “ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২১” -এর বিজয়ী ১২ টি দল এই আয়োজনের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশ নিচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রতি বছরই বিশেষভাবে আয়োজিত হয় “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড (IBCOL)”। হংকং থেকে শুরু হওয়া বহুল প্রত্যাশিত এই অলিম্পিয়াড এবারই প্রথম হংকং এর বাইরে বাংলাদেশে আয়োজিত হতে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীরা এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে। বিজয়ীদের জন্য সর্বমোট ৪০ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ এই ইভেন্টে বিচারক এবং বক্তা হিসাবে সংযুক্ত হবেন। এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় মোট ১২ টি দেশ অংশগ্রহণ করছে: চীন, হংকং, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, নেদারল্যান্ড, নেপাল, মঙ্গোলিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ থেকে মোট ৫০ টিরও বেশি দল অংশগ্রহণ করছে।

মূলত শুক্রবার (৮ ই অক্টোবর) একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে “আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২১” এর যাত্রা শুরু হবে। ৩ দিনব্যাপী এই অলিম্পিয়াড চলবে রবিবার (১০ অক্টোবর) পর্যন্ত। এ বছর অন্যান্য আয়োজনের পাশাপাশি মোট ৪ টি সেমিনারের আয়োজন থাকছে। সেমিনারগুলি হবে সিবিডিসি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি, ই-গভর্নেন্স, আইডেন্টিটি অ্যান্ড প্রাইভেসি এবং ফিনটেক বিষয়ে। অনুষ্ঠানসহ সেমিনারগুলো IBCOL এর ওয়েবাইসাইট (https://ibcol2021.com) -এই ঠিকানায় বিশ্বব্যাপী সকল অংশগ্রহণকারী এবং দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ইত্তেফাক

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com