মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন

ব্রিটেনে নতুন সরকার, উদ্বিগ্ন হাজারো আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশি

  • আপডেট সময় বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪

ব্রিটেনের নতুন লেবার সরকার বহুল আলোচিত রুয়ান্ডা প্রকল্প বাতিল করেছে। তবে কনজারভেটিভ সরকার গত ১৬ মে ব্রিটেনে আশ্রয় অনুমোদিত না হওয়া বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় এসওপি চুক্তি করেছিল। নতুন সরকারের আমলে সেই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানোর শঙ্কায় হাজারো বাংলাদেশি ও তাদের স্বজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে লন্ডনে ব্রিটিশ হোম অফিসের স্বরাষ্ট্র-বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকেই প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়।

এ চুক্তির ব্যাপারে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, সুসংবাদ হলো যুক্তরাজ্যে অনথিভুক্ত নাগরিকদের সংখ্যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যেও নেই। তবুও ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা প্রয়োজন ছিল। তাই এই সমঝোতা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, নতুন চুক্তি ছাড়াও এতদিন নাগরিকদের ফেরত পাঠানো যেত। এর আগে আলবেনিয়া সরকারের সঙ্গেও প্রত্যাবাসন চুক্তি করেছে ব্রিটেন।

ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে এসেছেন ছাত্র, কর্মী কিংবা ভ্রমণ ভিসা নিয়ে। এরপর তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করে ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের চেষ্টা করছেন। যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন তাদের মাত্র পাঁচ শতাংশের আবেদন সফল হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাখ্যাতদের ব্যাপারে নতুন সরকার কী করতে পারে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ক্রয়েডন কাউন্সিলে লেবার গ্রুপের চেয়ার কাউন্সিলর মো. ইসলাম সোমবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আগের সরকারের সঙ্গে লিখিতভাবে সম্পন্ন হওয়া চুক্তির ক্ষেত্রে নতুন সরকারের কোনও পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা দেখি না।

লন্ডনের লিংকন্স চ্যাম্বারস সলিসিটরসের প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার নাজির আহমদ বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এখন বাংলাদেশ হাইকমিশন দ্রুতগতিতে সংশ্লিষ্টদের ইমারজেন্সি ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়ে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবে। অনেক ক্ষেত্রে শুক্রবার ধরে রবিবার ফ্লাইটে তুলে দেওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। হোম অফিস উইকএন্ডের সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। এই চুক্তির ফলে অনেক প্রকৃত আবেদনকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে লন্ডনের চ্যান্সেরি সলিসিটরসের প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, নতুন সরকার যদি বাংলাদেশি ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠাতে নতুন করে ফাস্ট ট্র্যাক চালু করে তাহলে সেটি বাংলাদেশিদের জন্য খুব ভয়াবহ হবে।

সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রায় লক্ষাধিক বাংলাদেশি বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আশ্রয় আবেদন করে ব্রিটেনে বসবাস করছেন। অনেকেই কাজের অনুমতিও পেয়েছেন। স্থানীয় কমিউনিটির অনেকের মতে, নতুন জনশক্তি না এনে পুরোনো বৈধতাহীনদের বৈধতা দিলে অর্থনীতি লাভবান হবে। তাদেরকে ব্রিটিশ অর্থনীতির মূলধারায় যুক্ত করে কর আদায় করতে পারত সরকার।

এ ব্যাপারে লুটনের লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা মাহবুবুল করীম সুয়েদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা তো দূরের কথা নতুন নতুন কড়াকড়ি আরোপের কথা বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। কেয়ার ভিসাসহ বিভিন্ন কাজের ভিসায় আসা হাজার হাজার মানুষ রয়েছেন বেকার অবস্থায়। সব মিলিয়ে গত এক দশকের মধ্যে ব্রিটেনে সবচেয়ে বড় দুঃসময় পার করছেন অভিবাসীসহ সাধারণ মানুষ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com