বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৩ অপরাহ্ন
Uncategorized

বৌদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব

  • আপডেট সময় শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব গৌতম বুদ্ধের জন্মোৎসব শুভ বৌদ্ধ পূর্ণিমা বঙ্গাব্দঃ বৈশাখ ৩০ (*চাঁদ দেখার উপরে নির্ভর)। গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই তিন ঘটনার স্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের সব স্থানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছেই বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। এ ধর্মমতে, আড়াই হাজারেরও বেশি বছর আগে বর্তমান নেপালের অন্তর্গত কপিলাবস্তু রাজ্যের শাক্যবংশীয় রাজা শুদ্ধোধনের ঔরসে রাণী মায়াদেবীর গর্ভে গৌতমের জন্ম হয়।

রাজপুত্র সিদ্ধার্থ মানুষের দুঃখে বেদনার্ত হয়ে মুক্তির উপায় খুঁজতে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন সত্যের সন্ধানে। বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ ও অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর অবশেষে ভারতের বিহার রাজ্যের গয়ায় ফল্গু নদীর তীরে অশ্বথ গাছের নিচে সাধনারত অবস্থায় তিনি যে সত্য উপলব্ধি করেন তা পরে চার আর্যসত্য হিসেবে পরিচিতি পায়। সাধনার মাধ্যমে পরম জ্ঞান তথা বোধিলাভ করেছিলেন বলে তার নাম হয় বুদ্ধ। তাঁর জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম দেওয়া হয় ‘বৌদ্ধ পূর্ণিমা’। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এ দেশের সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও আচার অনুষ্ঠানাদি অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে পালন করে আসছে। এটা বাংলাদেশের সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য।

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার সাথে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ গভীরভাবে সম্পৃক্ত। মহামতি বুদ্ধ ছিলেন জীবের মঙ্গল কামনায় সত্যসন্ধ। পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য তিনি নিরন্তর প্রয়াস চালান। বুদ্ধের চেতনায় ছিল দুঃখ জয়ের মাধ্যমে জীবের মুক্তি কামনা। ‘চতুরার্য সত্য’ তত্ত্বে তিনি জীবনে দুঃখ, দুঃখের উৎপত্তি, দুঃখ ভোগের কারণ এবং তা থেকে মুক্তির পথ দেখান। তাঁর মতে ‘নির্বাণ’ লাভের মাধ্যমে মানুষ জীবনের পরমার্থ অর্জন এবং সকল প্রকার দুঃখ থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। ভয়, ক্রোধ ও লোভ লালসাকে পরিহার করে গৌতম বুদ্ধ সারাজীবন মানুষের কল্যাণে এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংস, মৈত্রী ও করুণার বাণী প্রচার করেছেন। বর্তমান বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গৌতম বুদ্ধের জীবনাদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল থেকে এ দেশে প্রত্যেক ধর্মের লোক উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম নিবির্ঘ্নে পালন করে আসছে।

বিভিন্ন ধর্মের অনুসারিগণ পাশাপাশি বসবাস করে সৌহার্দ ও সম্প্রীতির অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা হল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম উৎসব। এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। এই পবিত্র তিথিতে বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বোধি বা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। এই দিনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীগণ স্নান করেন, শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকেন। ভক্তগণ প্রতিটি মন্দিরে বহু প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করেন, ফুলের মালা দিয়ে মন্দিরগৃহ সুশেভিত করে বুদ্ধের আরাধনায় নিমগ্ন হন। এছাড়া বুদ্ধগণ এই দিনে বুদ্ধ পূজার পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেদ প্রার্থনাও করে থাকেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com