বিপুলা এই পৃথিবীতে আমাদের বসবাস। বিশ্বজুড়ে ছোট বড় কত দেশের কথা আমরা জানি! প্রতিটি দেশই নিজ নিজ সৌন্দর্যে অপরূপ। কিন্তু কোনো দেশের আয়তন যে মাত্র এক বর্গকিলোমিটার হওয়া সম্ভব এবং সেখানে পুরোদস্তুর সরকার, প্রথা-সংস্কৃতিও রয়েছে, সেকথা আমাদের অনেকেরই অজানা।
তাহলে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম কিছু দেশ সম্পর্কে। হয়তো একদিন আপনার ভ্রমণ তালিকায়ও উঠে আসতে পারে এসব দেশের নাম!
১। ভ্যাটিকান সিটি
ছোটবেলা থেকে সাধারণ জ্ঞানের বই কিংবা পাঠ্যবইয়ে হয়তো অনেকবার আমরা পড়েছি যে ভ্যাটিক্যান সিটিই বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ। তাই বলাই বাহুল্য, তালিকার একেবারে শীর্ষেই থাকবে ভ্যাটিকান সিটি। ১১০ একর বা ০.৪৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ১০০০! কিন্তু তা সত্ত্বেও, ভ্যাটিকান সিটির গুরুত্ব ও আবেদন কম নয়। সারা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র শহর হিসেবে বিবেচিত ভ্যাটিকান সিটি। শুধু তাই নয়, জগদ্বিখ্যাত শিল্পী মাইকেল এঞ্জেলো এবং লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সঙ্গেও ঐতিহাসিকভাবে জড়িয়ে আছে এই শহর। আর ভ্যাটিকান সিটিতেই যে পোপের অবস্থান, তা তো সকলেরই জানা।
২। মোনাকো
কবে কেউ একজন বলেছিলেন, “ভালো জিনিস স্বল্প পরিমাণেই আসে’; একথা অস্বীকার করার উপায় নেই বটে! বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ মোনাকোর আয়তন মাত্র ২ বর্গকিলোমিটার। কিন্তু ছোট্ট এই দেশটির সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য! বিশেষত, মন্টে কার্লো ক্যাসিনো এবং গ্র্যান্ড পিক্স মোটর রেসিং ইভেন্টের জন্য এই দেশটি বেশি খ্যাত। এছাড়াও মোনাকো ক্যাথেড্রাল, ওশানোগ্রাফি মিউজিয়াম অব মোনাকো এবং মিউজিয়াম অব অ্যান্টিক অটোমোবাইলস ইত্যাদি স্থানও পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত।
৩। নাউরু
নাউরুর পূর্ব নাম প্লেজ্যান্ট আইল্যান্ড, যার আয়তন বর্তমানে ২১ বর্গকিলোমিটার। অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে অবস্থিত দেশটিতে ১৩,০০০ মানুষের বসবাস। শান্তিপূর্ণ এই দেশটি লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও, নজড়কাড়া সৌন্দর্য কিন্তু এখানেও কম নেই।
অ্যানিবেয়ার বে, সেন্ট্রাল প্লাতো, জাপানিজ গানস, মকুয়া ওয়েল ইত্যাদি নাউরুর দর্শনীয় স্থান।
৪। টুভালু
ওশেনিয়া মহাদেশের এই চমৎকার দেশটি বিশ্বের চতুর্থ ক্ষুদ্রতম দেশ। টুভালুর সাবেক নাম ইলিস আইল্যান্ড। ছোট্ট এই দ্বীপ রাষ্ট্রটির আয়তন ২৫.৯ বর্গকিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ১১,০০০। দুর্গম-প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে পর্যটকদের আনাগোনা কমই দেখা যায়। তাই নির্জনে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরাই শুধু এখানে ঘুরতে আসেন।
ফুনাফুতি মেরিন কনজারভেশন এরিয়া, টুভালু ফিলাটেলিক ব্যুরো ইত্যাদি এই দেশটির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
৫। সান মারিনো
সান মারিনোর আয়তন ৬১.২ বর্গকিলোমিটার। এই মুহূর্তে দেশটির জনসংখ্যা ৩৩,০০০। শিল্প-বাণিজ্য, সামাজিক সেবা ও পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে সান মারিনোর অর্থনীতি। সমুদ্রের তীরবর্তী সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত দুর্গগুলো সান মারিনোকে ‘জাদুর শহরে’ রূপ দিয়েছে।
এর বাইরে আজকাল গুয়াইতা টাওয়ার, পিয়াজ্জা দেল্লা লিবার্তা, মাউন্ট টিটান পালাজ্জো পাবলিকো ইত্যাদি স্থান ভ্রমণপ্রেমীদের গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া