উড়োজাহাজের একটি নতুন ইঞ্জিন তৈরি করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এই ইঞ্জিনের সাহায্যে মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যেই পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে পৌঁছে যাবে উড়োজাহাজ। ইঞ্জিনটি ব্যবহার করলে শব্দের গতির চেয়েও ১৬ গুণ দ্রুত যাবে বিমান উড়োজাহাজ। এই আবিষ্কারে বিশ্ববাসীকে আবার চমকে দিতে চলেছে চীন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেইজিং টানেলে ট্রায়াল চলার সময়ে এই ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা রীতিমতো নজর কেড়েছে। জেট ইঞ্জিনটি টানেলের মধ্যে সর্বাধিক গতিতে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের কথায়, ফুয়েল এফিসিয়েন্সি হোক বা অপারেশনাল স্টেবিলিটি, প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স দুর্দান্ত।
চিনের Journal of Aeronautics-এ প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে এই ইঞ্জিন তৈরির সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা জানিয়েছেন, রি-ইউজেবল ট্রান্স অ্যাটমোস্ফেরিক প্লেনে পরিষেবা দিতে পারে এই ইঞ্জিন। তারা এই হাইপারসোনিক জেট ইঞ্জিনের নাম দিয়েছেন সোড্রামজেট।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই ইঞ্জিনটি রানওয়ে থেকে ওঠানামা করা বিমানগুলোতেও ইনস্টল করা যেতে পারে। এরপর, পৃথিবীর একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথ ধরে যাত্রা শুরু করে বিমানটি। এবং যথাসময়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অবতরণ করে। এই বিজ্ঞানীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন চীনের সায়েন্স অ্যাকাডেমি ইনস্টিটিউট অফ মেকানিকসের প্রফেসর জিয়াং জংলিন।
তার কথায়, এই ইঞ্জিনে একটি হাইড্রোজেন ফুয়েল ইনজেক্টর সিংগল-স্টেজ এয়ার ইনলেট ও একটি কম্বাসসান চেম্বার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যখন দ্রুত গতির বাতাস এয়ার ইনলেটকে ধাক্কা দেয়, তখন একটি শক ওয়েভ তৈরি হয়। এবার কম্বাসটরের মধ্যে হাইড্রোজেন ফুয়েলের সংস্পর্শে আসে এই শক ওয়েভ বা তরঙ্গ। আর এর জেরে সামনের দিকে এগিয়ে চলে ইঞ্জিন।
ইঞ্জিন প্রস্তুতকারকদের দাবি, এই হাইপারসোনিক জেট ইঞ্জিন বিমানে লাগালে, শব্দের গতির চেয়ে ১৬ গুণ দ্রুত যাবে বিমান। এ ক্ষেত্রে শব্দের গতি ১২৩৪.৮ কিমি/ঘণ্টা। চীনের কূটনীতিকদের একাংশের মতে, আরও বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় সফল হলে ইঞ্জিনটিকে সামরিক বাহিনীতেও ব্যবহার করা যাবে।