বিমানভাড়া দিন দিন বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লাগেজের চার্জ। এ ছাড়া আছে সিট নির্বাচনের জন্য ফি, এমনকি খাবার-পানীয়ের জন্য অতিরিক্ত খরচ। বিমানের বিজ্ঞাপনে দেখানো ভাড়ার সঙ্গে অতিরিক্ত চার্জ যোগ করার বিষয়টি বিমানযাত্রীদের জন্য বিশাল এক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ভ্রমণে যাওয়ার সময় বাজেট ঠিক রাখতে কিছু কৌশল মাথায় রাখতে হবে।
বুকিং ও শপিং কৌশল
প্রথমে ভ্রমনের খরচগুলোর বিষয়ে সবদিক পরীক্ষা করুন। টিকিট বুক করার সময় ভালোভাবে দেখুন খাবার, পানীয় বা লাগেজ টিকিটের মূল্যে অন্তর্ভুক্ত কি না। একটি সস্তা টিকিট শেষ পর্যন্ত বেশি খরচের কারণ হতে পারে। এয়ারপোর্ট যাচাই করুন। কারণ, কিছু শহরে একাধিক বিমানবন্দর থাকে। এদের মধ্যে কোনো একটিতে উড়ান তুলনামূলকভাবে সস্তা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন এয়ারলাইনস মিলিয়ে টিকিট বুক করেও খরচ কমানো সম্ভব। চেষ্টা করুন সরাসরি বুকিং করতে। থার্ড-পার্টি সরবরাহকারীর পরিবর্তে এয়ারলাইনসের মাধ্যমে সরাসরি বুকিং দিন। এতে বাতিল করা বা রিফান্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং দীর্ঘ মেয়াদে খরচ বাঁচে। অনলাইনে চেক-ইন না করলে অনেক এয়ারলাইনস এখন বিমানবন্দরে অতিরিক্ত চার্জ নেয়। তাই অনলাইনে চেক-ইন করা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি এয়ারমাইলস, লয়্যালটি প্রোগ্রাম এবং ক্রেডিট কার্ডের অফারগুলো দেখে নিন
লাগেজের ফি কমানোর টিপস
গোপন খরচগুলো মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো লাগেজ ফি। আর এই ফি এড়াতে সবার আগে লাগেজের ওজন ও আকার নিয়ে ধারণা রাখা জরুরি। লাগেজের সঠিক মাপ অনলাইনে দেখে নিন। পারলে একটি লাগেজ স্কেল কিনে ওজন পরীক্ষা করে নিন। অথবা কোনো ওজন মাপার যন্ত্রও ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে একেবারে সঠিক ওজন আসাটা অনিশ্চিত। ব্যক্তিগত ব্যাগ একটিই রাখা উচিত; যা মূলত ছোট ব্যাকপ্যাকের মতো হবে, যা সামনের সিটের নিচে রাখা যায়। আর এটি সব সময় ফ্রি থাকে। ছোট ব্যাগের মধ্যে বেশি জিনিস ভরতে ভ্যাকুয়াম বা কম্প্রেসন ব্যাগ ব্যবহার করুন। এতে জিনিসপত্রের আয়তন কমে যায়। বর্তমানে এই হ্যাক অনেক বেশি জনপ্রিয়।
লাগেজের ওজন কমাতে বিকল্প
একটি নেক পিল সঙ্গে নিতে পারেন। বেআইনি কিছু না থাকলে এটি ভেতরে কী ভরা আছে, তা কেউ জানতে চাইবে না। তাই এর ভেতরে হালকা কাপড় ভরে নিতে পারেন। বিমানবন্দরে কেনা জিনিসপত্রের ব্যাগ হাতে নিয়ে বিমানে উঠতে দেওয়া হয়। এই ব্যাগের মধ্যে যদি আপনার লাগেজে না-আঁটা কোনো ভারী বুটও থাকে, তবে তা কেউ জানতে চাইবে না। সে ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ব্যাগ ব্যবহারটা তুলনামূলক খরচ সাশ্রয় করতে পারে। যদি আপনার হাতে এবং চেক-ইন উভয় লাগেজ থাকে, তবে সবচেয়ে ভারী জিনিসপত্র হাতে নেওয়া লাগেজে রাখুন। কারণ, হাতে নেওয়া লাগেজ সাধারণত ওজন করা হয় না। সবচেয়ে ভারী কাপড়; যেমন জ্যাকেট, বুট, টুপি এবং স্কার্ফ পরিধান করে বিমানবন্দরে যান। পাসপোর্ট, ফোন ও মানিব্যাগ হাতে রাখার জন্য একটি ফ্যানি প্যাক বা কোমরের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন।
সিট এবং অনবোর্ড খরচ এড়ানো
আপনাকে সিট নির্বাচনের জন্য টাকা দিতে বলা হবে। সিটের জন্য টাকা দেবেন না। কারণ, এটি বাধ্যতামূলক নয়। চেষ্টা করুন সময় হাতে নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করার। বোর্ডিংয়ের প্রথম দিকে এসে এয়ারলাইনস স্টাফকে অনুরোধ করুন, যদি কোনো ভালো সিট ফাঁকা থাকে, তবে সেটি পেতে পারেন কি না। অনবোর্ড খাবার প্রায়ই দামি হয়। তাই নিজের স্ন্যাকস, এমনকি টি-ব্যাগ সঙ্গে নিন। বিমানবন্দরগুলোতে রিফিলের ব্যবস্থা থাকে। নিজের বোতল সঙ্গে নিয়ে গেলে অর্থ সাশ্রয় হয় এবং আপনি হাইড্রেটেড থাকতে পারবেন। ব্লুটুথ হেডফোন সব বিমানে কাজ না-ও করতে পারে। তাই পুরোনো দিনের তারযুক্ত হেডফোন সঙ্গে রাখুন। ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্টের জন্য চার্জ লাগতে পারে। তাই মিউজিক, ম্যাপ এবং সিনেমা আগে থেকে ডাউনলোড করে রাখুন।
সূত্র: দ্য ট্রাভেল