বাইরে থেকে দেখলে এই জীবনটা খুব আকর্ষণীয় মনে হয় — নতুন দেশ, উন্নত শিক্ষা, স্বাধীনতা, আর বিদেশি জীবনযাত্রার রঙিন ছবি। কিন্তু বাস্তবতা অনেক বেশি কঠিন, অনেক বেশি নিঃসঙ্গ।
পরিবারের সবার চোখে আমরা “সফল হচ্ছি”, “ভাগ্যবান”, “বিদেশে গিয়ে নিশ্চয়ই মজা করছে”— কিন্তু সত্যি বলতে কী, এই সফলতার পেছনে আছে হাজারো অনিদ্রার রাত, একাকীত্ব, মানসিক চাপ আর নিরব কান্না।
প্রিয় পরিবার এবং বন্ধুদের ছেড়ে একা থাকতে হয় অচেনা এক শহরে, একা একা জীবন গুছিয়ে নিতে হয়। ছোট-ছোট জিনিস— যেমন বাসার চাবি হারিয়ে যাওয়া, হঠাৎ অসুস্থ হওয়া, কারো সাথে না বলে মনের কথা শেয়ার করতে না পারা— এগুলো যখন ঘটে, তখন মনে হয়, “ইস! যদি এখন মা পাশে থাকতো…”
প্রতিদিন নিজের রান্না, বাসন ধোয়া, ঘর পরিষ্কার করা, জামা কাপড় ধোয়া, পড়াশোনার চাপ— সব একসাথে সামলাতে হয়। কারো জন্য কিছু থেমে থাকে না এখানে। শরীর খারাপ থাকলেও উঠতেই হয়, রান্না করতেই হয়, কাজে যেতেই হয়, পরীক্ষা দিতেই হয়।
ক্লাসে পিছিয়ে পড়ার ভয়, ভালো রেজাল্টের চাপ, ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা— এই চিন্তাগুলো সবসময় মাথায় ঘুরে। অনেক সময় নিজের সাথে লড়াই করতে হয় — “আমি পারবো তো?”, “সব ঠিকঠাক চলছে তো?”
এই অভিজ্ঞতা শেখায় কীভাবে জীবনকে একা সামলাতে হয়, কীভাবে নিজের দায়িত্ব নিতে হয়, কীভাবে কাঁদতে-কাঁদতেও এগিয়ে যেতে হয়।
এ জীবন মোটেই সহজ নয়। এটা ঝলমলে নয়, বরং প্রতিদিন এক নতুন লড়াই।
যারা বিদেশে থাকে, তাদের কষ্টটা যেন আমরা বুঝি। তাদের শুধু “বিদেশে আছে বলে নিশ্চয়ই ভালো আছে” না ভেবে মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করি— “তুই কেমন আছিস?”, “তোর মন খারাপ লাগছে না তো?”, “কাউকে দরকার হলে আমাকে বলিস।” এই কথাগুলো ওদের জন্য অনেক বড় সাপোর্ট।
স্যালুট জানাই সব বিদেশে থাকা ছাত্রছাত্রীদের— তোমরা সত্যিকারের সাহসী।