বিদেশী নাগরিকদের ব্যবসায়িক উদ্যোগ সহজ করতে পরিকল্পনা নিয়েছে জাপান। পাশাপাশি এসব উদ্যোক্তার জন্য দেশটিতে বসবাসের শর্ত সহজ হচ্ছে। অবশ্য বিদেশী পেশাদারদের আকৃষ্ট করার কৌশলগত এ পরিকল্পনায় কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কারণ ন্যূনতম মূলধনের শর্ত পূরণ করতে উদ্যোক্তাদের বড় অংকের তহবিল গঠন করতে হবে।
জাপানের ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস এজেন্সি (আইএসএ) এক বার্তায় জানিয়েছে, এপ্রিল নাগাদ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের আবাসনের শর্তগুলো সংস্কার করা হবে। সম্প্রতি জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সরকারকে বিদেশী উদ্যোক্তাদের জন্য বসবাসের নিয়মগুলো পর্যালোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে।
২০২৩ সালে আনুমানিক ৩৭ হাজার ব্যক্তি জাপানে বিজনেস ম্যানেজার রেসিডেন্সি স্ট্যাটাসের অধীনে বসবাস করছিলেন। নীতি সংস্কারের কারণে সামনে এ সংখ্যা বাড়তে পারে।
দেশটিতে প্রাথমিকভাবে আবেদনকারীকে এক বছরের জন্য বসবাসের অনুমোদন দেয়া হয়। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করার পরই অনির্দিষ্টকালের জন্য অনুমোদন পুনরায় নবায়ন করা যায়।
এছাড়া দুটি প্রধান মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে বিজনেস ম্যানেজার স্ট্যাটাসের জন্য আবেদনকারীকে মূল্যায়ন করে আইএসএ। এগুলো হলো কোম্পানি সফলভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবে কিনা ও আবেদনকারী সক্রিয়ভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নিযুক্ত কিনা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত গঠন ও অন্তত দুজন পূর্ণকালীন কর্মীর নিয়োগ বিবেচনা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পাশাপাশি নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য ন্যূনতম ৩৩ হাজার ডলার বিনিয়োগের শর্ত রয়েছে।
নতুন নিয়মের অধীনে উদ্যোক্তাদের একা হাতে তহবিল দিয়ে মূলধনের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে হবে না। তারা কিছু শর্তে অন্য উৎসগুলো থেকে তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে জে-কিস তহবিলের মাধ্যমেও বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারবেন বিদেশী উদ্যোক্তারা।
মূলত স্টক অধিগ্রহণের অধিকার ক্রয় করে স্টার্টআপকে তহবিল দেয় জে-কিস প্রতিষ্ঠানগুলো। এক্ষেত্রে ঋণের বিপরীতে তহবিল ফেরত দেয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকে না। প্রাথমিক তহবিল সংগ্রহের দ্রুত উপায় হিসেবে স্টার্টআপগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে জে-কিসের দিকে ঝুঁকছে।
নিয়ম সংস্কারের মাধ্যমে জাপান সরকার বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশী পেশাদারদের আকৃষ্ট করতে চাইছে। দক্ষ পেশাদারদের আকর্ষণে বিশ্বব্যাপী চলমান প্রতিযোগিতার মধ্যে নীতি সংস্কারে আগ্রহী হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ২০২২ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘যেহেতু বিশ্বজুড়ে মানবসম্পদের জন্য প্রতিযোগিতা তীব্র হচ্ছে, তাই অত্যন্ত দক্ষ প্রতিভা আনার জন্য সংস্কার প্রয়োজন।’
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) ২০১৯ সালের র্যাংকিংয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিভা আকর্ষণে ৩৫টি দেশের মধ্যে জাপান ২৫তম স্থান অর্জন করেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জাপানে আনুমানিক ছয় লাখ উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশী পেশাদার ছিলেন। ২০১৮ সালের তুলনায় এটি দ্বিগুণেরও বেশি।