নাইজেরিয়ার উত্তরে একটি শহরের নাম ‘কানো’। শহরটি বিবাহবিচ্ছেদের শহর হিসেবে মানুষের কাছে বেশি পরিচিত। কারণ, এখানে কারও বিয়ে বেশি দিন টেকে না। অনেকেই বহুবিবাহ করেন। কিন্তু সেখানেই এক জুটি একসঙ্গে ৫০ বছর পার করে সবার নজর কেড়েছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি তারদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি ৫০তম বিবাহবার্ষিকী পালন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারকা হয়ে গেছেন মাহমুদ কবির ইউসুফ ও তার স্ত্রী রাবিয়াতু তাহির।
বিবিসির খবরে বলা হয়, নাইজেরিয়ার কানো অঞ্চলে এতে বেশি বিয়ে বিচ্ছেদ হয় যে, শহরের প্রকৃত নাম ঢাকা পড়ে বিবাহ বিচ্ছেদের শহর নামেই পরিচিতি পেয়েছে। কারণ এখানে কারও বিয়ে বেশি দিন টেকে না।
খবরে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ৫০ বছর একসঙ্গে সংসার জীবন পার করায় সবার নজর কেড়েছেন এই দম্পতি। নিজেদের জীবনের কাহিনী বিবিসিকে শুনিয়েছেন ইউসুফ ও রাবিয়া। নিজের স্ত্রীর প্রশংসা করে ৭৬ বছর বয়সি ইউসুফ বলেন, ‘তিনি খুবই নিঃস্বার্থ ব্যক্তি। আমাদের এই সুখী দাম্পত্য জীবনের পেছনে তার অবদান অনেক।’
স্বামী ইউসুফের কথায় খুশি রাবিয়াতু তাহির। এই দম্পতির ১৩ সন্তান। তিনি স্বামী ইউসুফের প্রশংসা করে বলেন, সংসার জীবনের কঠিন সময়েও তার স্বামী ধৈর্য রেখেছেন ও শান্ত থেকেছেন। আমি মনে করি, এটাই আমাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র।’ সংসার জীবনে ইউসুফ ও তাহিরের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সম্মান রয়েছে। এজন্য তারা দীর্ঘসময় একসঙ্গে থাকতে পেরেছেন।
অন্যদিকে, হাসানা মাহমুদ নামে এক নারী বাসিন্দা নিজের জীবনের ভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ৩৯ বছর বয়সে পাঁচবার বিয়ে হয়েছে। কিন্তু কোনো বিয়ে টেকেনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিবাহিত জীবনে শুধু একজনের সঙ্গে চার বছর সংসার করতে পেরেছি। তাই এ দম্পতিকে একসঙ্গে ৫০ বছর উদ্যাপন করতে দেখাটা অনেক আনন্দদায়ক।’
শহরটিতে নব্বইয়ের দশক থেকে বিবাহবিচ্ছেদ বাড়তে শুরু করে। এই বদনাম আর ঘোচাতে পারেনি শহরটি। এ শহরে প্রতি মাসে কয়েকশ’ বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে বিবিসি ২০২২ সালে এক গবেষণা করে। এতে দেখা গেছে, শহরটিতে ৩২ শতাংশ বিয়ে তিন থেকে ছয় মাস টেকে। সেখানে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে তৃতীয়বার বিয়ে সেরে ফেলেছেন।