বিশেষজ্ঞরা ঠিকই বলেন, প্রতিটি সম্পর্কে একে অপরের মধ্যে ভলোবাসা, পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকা খুবই জরুরি। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি একেবারেই ঘটেনি। আমি শুধু দুটি মানুষের মনই ভাঙেনি, পাশাপাশি নিজেও সেই মূল্য চুকিয়েছি। আসলে আমি নিজের স্বপ্নের চাকরি নিয়ে খুবে বেশি ভেবেছি। এই কাজটা যখনই পেয়েছি, ঠিক তখন থেকেই আমার মধ্যে ছিল আনন্দের অনুভূতি। আমি অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে যাই। যদিও আমি বেশি খুশি হই নিজের বসকে দেখে। তিনি ছিলেন একেবারেই হ্যান্ডসাম হাঙ্ক। আমার মন কেড়ে নেনে তিনি।
তিনি এমন একজন মানুষ যাঁর মধ্যে আত্মবিশ্বাস (Confidence) অনেক বেশি। এমনকী তাঁকে দেখতেও সুন্দর। যে কোনও নারী তাঁকে মন দিয়ে দেবে। আমার ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটেছে। আসলে আমি যখনই সেখানে কাজ শুরু করি তখনই বস আমার দিকে চেয়ে দেখেন। উনি প্রায়ই আমার দিকে তাকাতেন। এমনকী উনি আমার সঙ্গে ফ্লার্ট (Flirt) করার চেষ্টাও করেছেন। এই কারণে অফিসের অন্যান্যদের তুলানায় আমার দিকে নজর ছিল বেশি।
আমরা কাছে চলে আসি
আমরা দুজনেই অনেক রাত পর্যন্ত অফিসে কাজ করেছি। এই কারণে সম্পর্ক (Relation) আরও শক্ত হয়ে গিয়েছিল। এবার একদিন আমরা দুজনেই অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করছি। হঠাৎ বস বলল বাইরে ডিনার করার কথা। আমি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। আমি জানতাম উনি পছন্দ করেন আমায়। এই সময়টায় আমরা অনেক কথা বলি। এই ডেটের (Date) পর আমার প্রথম প্রোমোশন হয় ২০১৮ সালে। যদিও আমি চুটিয়ে কাজও করেছি ওই সময়ে।
নতুন পুরুষ
এর মাঝেই সময় পেরিয়ে যেতে থাকে। আমরা দুজনেই চলে যাই সম্পর্কে। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক নিয়ে অফিসে কেউ কিচ্ছুটি জানতেন না। আসলে আমরা একে অপরকে চুমুও (Kiss) খেয়েছি। এটা সত্যিই একেবারে ম্যাজিকের মতো ছিল। এই সব চলার মাঝেই দ্বিতীয় পদন্নতিও হয়ে যায়। খুবই আনন্দ হচ্ছিল। অবশ্যই এর মাঝেই এক নতুন ব্যক্তি জয়েন করেন আমাদের দলে। আমি তাঁকে নিয়েও ভীষণ খুশি ছিলাম। আসলে এই নতুন ব্যক্তিকে দেখেই আমার ভালো লেগে যায়। কিন্তু বসের সঙ্গে আমার জীবন কিন্তু এগিয়ে যেতে থাকে। এদিকে নতুন এই ব্যক্তিকে নিয়েও আমি ভাবতে শুরু করে দিই। আমরা দুজনে মিলে কিছু প্রোজেক্টে কাজ শুরু করি। আমরা ডিনারেও চলে যাই। আমার ওঁর উপস্থিতি ভালো লাগতে শুরু করে দেয়।
২০২০-তে সব বদলে যায়
আসলে এত কিছু চলার সময় এসে যায় ২০২০ সালের করোনা। এই সময় আমাদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম শুরু হয়। এই প্রথমবার আমরা সবাই আলাদা হয়ে যাই। এই সময়ও মেসেজ-এ সকলের সঙ্গেই যোগাযোগ ছিল। অবশ্য এসবের মাঝে নতুন ব্যক্তিটির সঙ্গে আমার কথাবার্তা বেড়ে যায়। আমরা একে অপরের সঙ্গে বেশি করে কথা বলেছি। এই সময় বস আমায় কম মেসেজ করেন। উনি আমায় মাঝেমাঝে মেসেজ করেছন। কিন্তু ওই নতুন ব্যক্তিটি কিন্তু আমার পাশে ছিল। ওর সঙ্গেই নিজের ফিলিং শেয়ার করেছি। এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আমরা সকলেই আসি অফিসে। আমি খুব খুশি ছিলাম। এই সময়ে নতুন মানুষটির সঙ্গে আমার জীবন এগিয়ে যায়। আর ওদিকে বস তখনও ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এ ব্যস্ত।
বস জানতে পারে বিষয়টি
আমি ও আমার সহকর্মী খুবই কাছে চলে আসি। যদিও আমার বসের সঙ্গে সম্পর্কের কথা কেউ জানত না। কিন্তু এই সম্পর্কের কথা সকলেই জেন ফেলল। এমনকী বসের কাছেও পৌঁছে গেল খবর। এবার বসের কাছে খবর গিয়েছে জেনেই আমার খুব ভয় হয়। কারণ এই সবের জন্য আমার চাকরি পর্যন্ত যেতে পারত। আর ভাগ্যের পরিহাসে হলও তাই। বস আমায় কিছু ছবি পাঠায়। এরপর তিনি লেখেন, তুমি রিজাইন করো। না হলে আমি তোমার জন্য পরিস্থিতি খারাপ করে দেব।
জীবন বরবাদ
এই ঘটনার পর আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। এরই মাঝে অন্যান্যরা বসের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথাও জানতে পারে। এমনকী ও খুব রেগে যায়। আমি কেন কিছু জানাইনি এই বিষয়টি জিজ্ঞেস করে ও। এরপর সম্পর্ক হয় শেষ। আমিই ওকে প্রতারণা করেছি। আমি ওর কাছে ক্ষমা চাই। একবার সুযোগ চাই। কিন্তু ও আমায় ছেড়ে দেয়। এরপর মনের দুঃখে রেজিগনেশন দিই। আমার চাকরি গেল। গেল আমার সম্মান। একটি খারাপ সিদ্ধান্ত জীবন খারাপ করে দিল। কোনওভাবেই বিষয়টাকে আমি মেনে নিতে পারছি না।
নবভারত টাইমস