ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৪০ পেরিয়ে ৪১ ছুঁয়েছেন গত সপ্তাহে। এ বয়সে পা রাখার আগেই অনেকে বুট তুলে রাখেন, কিন্তু রোনালদো ব্যতিক্রম। এখনো খেলে যাচ্ছেন, নিয়মিতই গোল করছেন, ৯২৫ গোল হয়ে গেছে। সামনে এখন হাজার গোলের হাতছানি। এরই মধ্যে আরেকটি অর্জনেরও দেখা পেলেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি।
খেলাধুলার আর্থিক বিষয়ের সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্টিকো’র হিসাবে এবারও বিশ্বের সর্বোচ্চ আয়কারী অ্যাথলেটের সিংহাসনটি রোনালদোর। টানা দ্বিতীয়বার আয়ে সবার ওপরে আল নাসর তারকা।
গত বছর রোনালদোর মোট আয় ২৬ কোটি ডলার বা প্রায় ৩১৫০ কোটি টাকা। সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল নাসর থেকে শুধু পারিশ্রমিক বাবদই পেয়েছেন ২১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বিভিন্ন স্পনসর চুক্তি থেকে পেয়েছেন আরও সাড়ে চার কোটি ডলার।
পেশাদার খেলাধুলা অপেক্ষাকৃত তরুণদের জন্য হলেও এবার স্পোর্টিকোর তালিকায় শীর্ষ আট আয়কারী ক্রীড়াবিদের মধ্যে শুধু নেইমারের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। বাকি সাতজন ৩৫ পার করেছেন।
৩৬ বছর বয়সী বাস্কেটবল কিংবদন্তি স্টিভেন কারি সর্বোচ্চ আয়ের এই তালিকায় দ্বিতীয়। গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্সের এই তারকা গত বছর পারিশ্রমিক বাবদ পেয়েছেন ৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। বিভিন্ন স্পনসর থেকে আয় করেছেন ১০ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে গত বছর কারির মোট আয় ১৫ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। অর্থাৎ শীর্ষ আয়কারী অ্যাথলেটদের মধ্যে রোনালদোর আয় বছরে অন্তত ২০ কোটি ডলার ছুঁয়েছে। রোনালদো এ নিয়ে টানা আট বছর অন্তত ১০ কোটি ডলার আয় করলেন। গত বছরও তাঁর ২০ কোটি ডলার ছুঁয়েছিল। ২০০২ সালে স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেকের পর এ পর্যন্ত ক্যারিয়ারে রোনালদোর মোট আয় ১৮০ কোটি ডলার।
ব্রিটেনের ৩৬ বছর বয়সী সাবেক বক্সার টাইসন ফিউরি ১৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার আয় করে এই তালিকার তিনে। গত বছর পারিশ্রমিক বাবদ আয় করেছেন ১৪ কোটি ডলার। বাকি ৭০ লাখ ডলার আয় করেছেন স্পনসর চুক্তি থেকে। ৩৭ বছর বয়সী ইন্টার মায়ামি তারকা লিওনেল মেসি গত বছর মোট ১৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয় করে তালিকার চারে। পারিশ্রমিক বাবদ ৬ কোটি ডলার এবং স্পনসর চুক্তি থেকে সাড়ে ৭ কোটি ডলার আয় করেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। ১৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার আয় করে পাঁচে বাস্কেটবল কিংবদন্তি ৪০ বছর বয়সী লেব্রন জেমস।
শীর্ষ পাঁচজনের মধ্যে ফুটবলার ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় দুজন করে, অন্যজন বক্সার। শীর্ষ দশ আয়কারীর মধ্যে ফুটবলারই সবচেয়ে বেশি—পাঁচজন। বক্সার ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় দুজন করে ও গলফার একজন।
সান্তোসে ফেরা নেইমার গত বছর ১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার আয় করে তালিকার ছয়ে। আল ইত্তিহাদের ফরাসি তারকা করিম বেনজেমা ১১ কোটি ৬০ লাখ ডলার আয় করে আটে। ১১ কোটি ডলার আয় করে নয়ে রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে।
সব মিলিয়ে শীর্ষ ১০০ আয়কারী অ্যাথলেটদের মোট আয় ৬২০ কোটি ডলার। গত বছরের তুলনায় যা বেড়েছে শতকরা ১৪ শতাংশ। অবাক করা বিষয়, শীর্ষ ১০০ আয়কারী অ্যাথলেটের তালিকায় গত বছরের মতো এবারও কোনো নারী অ্যাথলেট জায়গা করে নিতে পারেননি। এই তালিকার ১০০তম ক্রীড়াবিদটি এনএফএলের দল মিনেসোটা ভাইকিংসের কোয়ার্টারব্যাক ড্যানিয়েল জেমস। ৩ কোটি ৭৫ লাখ ডলার গত বছর আয় করেন জেমস। গত বছরের তালিকায় শততম অবস্থানে থাকা অ্যাথলেটের আয় ছিল ৩ কোটি ২৫ লাখ ডলার। আর গত বছর ৩ কোটি ৪ লাখ ডলার আয় করে নারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ আয়কারী অ্যাথলেট হয়েছিলেন টেনিস তারকা কোকো গফ।
স্পোর্টিকোর এবারের তালিকায় মোট ৮টি খেলার ২৭টি দেশের অ্যাথলেটরা জায়গা করে নিয়েছেন। বেতন, বোনাস ও প্রাইজমানি মিলিয়ে এই তালিকায় অ্যাথলেটদের মোট আয় ৪৮০ কোটি ডলার। স্পনসর ও অন্যান্য খাত থেকে অ্যাথলেটদের মোট আয় ১৪০ কোটি ডলার।