বান্দারবানে আকাশছোঁয়া পাহাড়ের ওপর যে নীল পানির সমুদ্র রয়েছে, সেই জায়গাটির নাম বগালেক। বগালেকের চারপাশ ঘিরে রয়েছে দুরন্ত সবুজ পাহাড়ের দেয়াল। সূর্য এখানে অনেক দেরি করে ওঠে, তাই এখানাকার মানুষ অনেক আরামপ্রিয়। বগালেকের পানি এতই স্বচ্ছ যে এর নিচের অনেকটা দেখা যায়। বগাপাড়ার মানুষজন এই লেকের পানি খাবার পানি হিসেবে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করে। এই লেক ঘিরে গড়ে উঠেছে অনেক আজব কথা, যেগুলোর মধ্যে ড্রাগন রাজার গল্পটা সর্বাধিক প্রচলিত।
এখানে রাত কাটানোর জন্য যে দোতলা কটেজগুলো রয়েছে, সেখানে ভোরবেলা চোখ খুলে অবাক হতে হবে। মনে হবে মেঘের মধ্যে বালিশ মাথার নিচে নিয়ে আপনি বিছানায় শুয়ে আছেন। দৃষ্টিসীমা আরেকটু বাড়ালে হতবিহŸল হয়ে যাবেন, যখন দেখবেন ভোরের আলোকে ছাপিয়ে বগালেকের ঠিক ওপরই হেলে-দুলে ভাসছে বিশাল এক রংধনু।
কীভাবে যাবেন?
বগালেকে দুভাবে যাওয়া যায়। বাসে ও চান্দের গাড়িতে করে। বান্দারবানের রুমা ষ্টেশন থেকে পাহাড়িকা বাস ছাড়ে সকাল সাড়ে আটটা, সাড়ে নয়টা ও ১০টায়। সেই বাস কাইক্ষ্যংঝিড়িতে পৌঁছালে আপনাকে দৌঁড়াতে হবে রুমা বাজারে নৌকা ঠিক করতে হবে ভাড়া মাথা পিছু ৩০ টাকা। রুমায় নেমে আপনাকে বগালেক যাওয়ার গাইড ঠিক করতে হবে, নাম লেখানো ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে মোলাকাত শেষে দুই হাজার ২০০ টাকায় একটা চান্দের গাড়ি ভাড়া করতে হবে বেলা দুইটার আগেই। দুইটা বেজে গেলে আপনাকে আর যেতে দেওয়া হবেনা। রুমাতেই ওই রাত থেকে যেতে হবে। পরের রাস্তাটুকু বেশ মজার, উথালপাতাল। যখন আপনাকে বগালেক পাহাড়ের গোড়াতে নামিয়ে দেবে, তখনই বুঝবেন বিশ্রাম কতটা আরামের। এই কথাটা আরেকবার মনে হবে, যখন আপনি এই পাহাড় ডিঙিয়ে বগালেকে উঠবেন। রুমা থেকে বগালেক যাওয়ার সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা হলো ঝিরিপথ। পাথুরে ঝরনার পানিতে পা চুবিয়ে চুবিয়ে সাত-আট ঘন্টা পার করে আপনি যখন বগালেকে উঠবেন, পাহাড়ি বুনো সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।