করোনা মহামারির কারণে অনেক স্টুডেন্ট ঘরে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছে। পরিবারে অসুস্থতার ভয়াবহতা অনেকেই চোখে দেখেছে। গত এক বছর ধরে তারা স্কুলের ইনপারসন যেতে পারছে না। সব মিলিয়ে বলা যায় অনেকটাই ঘরবন্দি। টেবিলে চেয়ারে বসে, কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে বসেই যাদের দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময় কাটে, ওইসব মেধাবী স্টুডেন্টদের এবার অনেকেই পেছনে ফেলে আইভী লীগ বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশিপ নিয়ে আন্ডারগ্রেডে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। স্কলারশিপ হিসাবে কেউ কেউ পেয়েছেন প্রতি বছরের জন্য ৭৫-৮০ হাজার ডলার করে কিংবা এরও বেশি। ফুল স্কলারশিপ পাওয়াতে স্টুডেন্টদের মুখে ফুটেছে বিজয়ের হাসি, আর ওইসব পরিবারের বাবা-মা অভিভাবকরাও ভীষণ খুশি।
সব মিলিয়ে এই খুশিতে সন্তুষ্ট মামুন টিউটোরিয়ালের কর্ণধার শেখ আল মামুনও। তার মামুন’স টিউটোরিয়াল থেকে এবার ৫০জন স্টুডেন্ট কর্নেল ইউনিভারসিটি, কলাম্বিয়া ইউনিভারসিটির বার্নাড কলেজ, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, বোস্টন ইউনিভার্সিটি, মিশিগান এনআরবার ইউনিভার্সিটি, বিংহামটন, হফস্ট্রা ইউনিভারসিটি, ফোর্ডহাম ইউনিভার্সিটি, রচেস্টার ইন্সটিউট অব টেকনোলজি (আরআইটি)-সহ বিভিন্ন ইউনিভারসিটিতে চান্স পেয়েছে। বেশিরভাগ স্টুডেন্ট ফুলই স্কলারশিপ পেয়েছেন। এই বছর স্টুডেন্টরা ঘরে বসেই এই বিজয়ের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করছে।
নুজহাত মুকুল চান্স পেয়েছেন কর্নেল ইউনিভারসিটিতে। তিনি ব্রঙ্কস সায়েন্সের স্টুডেন্ট। পাশাপাশি মামুন’স টিউটোরিয়াল থেকে স্যাট টিউটোরিং করেছেন। তিনি মেডিসিনে সুযোগ পেয়েছেন।
সুমাইয়া কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির বার্নাড কলেজে (যেটি মেয়েদের আইভীলীগ হিসাবে পরিচিত) সেখানে ফুল স্কলারশিপ নিয়ে চান্স পেয়েছেন।
সামিরা ইসলাম কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশিপ নিয়ে চান্স পেয়েছে। তিনি ১৪৭০ পেয়েছিলেন স্যাটে। তার বোনও সাত বছর আগে কর্নেলে চান্স পেয়েছিলেন। তার বাবা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। এই অসুস্থতার কারণে তারা একটি বারের জন্য মনোবল হারাননি। তারা দুইবোন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তাদের মা পরিশ্রম করে তাদেরকে সফল হতে এগিয়ে দিয়েছেন। সামিরা ও তার পরিবার এই আনন্দে খুশি।
আদিত্য করিম চান্স পেয়েছেন নিউইয়র্ক ইউনির্ভাসিটিতে। তিনি ফুল স্কলারশিপ নিয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়তে যাচ্ছেন।
আকিফ কে চৌধুরী ফুল স্কলারশিপ নিয়ে চান্স পেয়েছে রচেস্টার ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (আরআইটি)-তে।
রিজওয়ানুল হিমেল চান্স পেয়েছে বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে। পেয়েছেন ফুল স্কলারশিপ।
আরমিনা চৌধুরী চান্স পেয়েছেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ও বিংহামটন ইউনিভার্সিটিতে। তিনি বিংহামটনে ফুল স্কলারশিপ পাওয়াতে এখন সেখানে যাবেন।
নুহা কাউসার। তিনি ১৫২৫ নম্বর পেয়েছিলেন স্যাটে। এরপর তিনি এবার সুযোগ পেয়েছেন নিউজার্সির কার্নেগী মিলন ইউনিভার্সিটিতে। তিনি চার বছরের জন্য বার্ষিক ৭৫ হাজার ডলারের স্কলারশিপ পেয়েছেন।
সোহেনী আলিম চান্স পেয়েছেন হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটিতে। এছাড়াও তিনি সেন্ট জন্স ইউনিভাসির্টিতেও ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন।
সাফিয়া শ্রাবণী চান্স পেয়েছেন ফোর্ডহাম ইউনিভার্সিটিতে ফুল স্কলারশিপ নিয়ে।
অপ্সরা কবির চান্স পেয়েছেন মিশিগান অ্যান আরবার ইউনিভার্সিটিতে। তিনিও ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন।
মোসাম্মৎ নাঈমা চান্স পেয়েছেন বার্নাড কলেজ ইন কলাম্বিয়া ইউনির্ভাসিটি। তিনিও ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন। এই কলেজে মেয়েদের জন্য বছরে ৭৫ হাজার ডলার স্কলারশিপ দেয়া হয়।
আজান তালুকদার চান্স পেয়েছেন আরআইটিতে। তিনিও ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন।
তারিফ খান চান্স পেয়েছেন নর্থ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে। তিনি ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন।
ফারিহা মাবুদ চান্স পেয়েছেন বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে। সায়কা চান্স পেয়েছেন ফোর্ডহাম ইউনিভার্সিটিতে। তারা ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন।
এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্টুডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের আইভী লীগ ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন খ্যাতনামা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছেন। কেউ কেউ রয়েছেন আইভি লীগের ওয়েটিং লিস্টে। এছাড়াও বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে অনেকেই ফুল স্কলারশিপ পেয়েছেন।
মামুন টিউটোরিয়ালের কর্ণধার শেখ আল মামুন বলেন, করোনার কারণে এবার বেশিরভাগ ইউনিভার্সিতে কলেজ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য স্যাট ও এসিটি রিকোয়ারমেন্ট ছিল না। তারপরও স্টুডেন্টরা ফুল স্কলারশিপ নিয়ে পড়ার জন্য করোনার মধ্যে স্যাটে আমাদের অনলাইনে ক্লাসে অংশ নিয়েছে, পরীক্ষা দিয়েছে। তাই ভাল ফল করেছে। যারা চান্স পেয়েছে এরমধ্যে কেউ কেউ আগেই স্যাট দিয়েছিল। গত এক বছর ধরে স্টুডেন্টদের মানসিক অবস্থা কি এটা সবাই জানেন। কারণ তারা লেখাপড়ার স্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে নেই। স্কুলে যেতে পারেনি এক বছর। অনলাইনে ক্লাস করেছে। কেউ কেউ অনলাইনে এক্সটা কারিকুলার এক্টিভিটিজ করেছে। সব মিলিয়ে করোনার মধ্যেও তারা চেষ্টা করেছে ভাল করার।
তিনি বলেন, আমাদের ৫০ জনেরও বেশি স্টুডেন্ট বিভিন্ন ইউনিভারসিটিতে ফুল স্কলারশিপ নিয়ে চান্স পেয়েছে। আমরা তাদের আনন্দে খুশি। আমাদের স্টুডেন্টদের এই সাফল্য কমিউনিটর অন্যান্যদের জন্যও অনুপ্রেরণা যোগাবে।