ইলিশের পেটের ভেতর ইলিশ ভোজ। মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে চালু হওয়া রেস্টুরেন্ট ‘প্রজেক্ট হিলশা’ দেখে এমনই মনে হবে। মাওয়া ঘাটের দীর্ঘদিনের ইলিশ খাওয়ার রীতির সঙ্গে অত্যাধুনিক এ রেস্টুরেন্ট নতুন এক সংযোজনই বলা চলে। তাইতো, উদ্বোধনের ক’দিনের মাথায় এটি হয়ে ওঠেছে ভোজনরসকিদের আড্ডা খানা। কেউ খাচ্ছেন ইলিশ পাতুরি, কেউ সরষে ইলিশ। বাদ যাচ্ছে না ইলিশ ভাঁজাও। ইলিশের চৌদ্দ পদ নিয়ে এ এক এলাহি কাণ্ড।
বলা হচ্ছে প্রজেক্ট হিলশা পদ্মার পাড় তো বটেই, দেশের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্ট। যুগোপযোগী ইন্টেরিয়রের সঙ্গে বাঙালি ভোজ, এই রেস্টুরেন্টকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়। তবে দামে কিছু চড়া ভাব থাকলেও খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ নেই কারও।
এ রেস্টুরেন্টের আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে ওপেন কিচেন। আপনি চাইলেই মাছ বাছাই করে কিনে দিতে পারবেন। রান্নাবান্নাও হবে চোখের সামনে। ভরদুপুরে খেতে বসলে থাই গ্লাস ভেদ করে হালকা রোদের ঝিলিক পরবে ইলিশ ভর্তি প্লেটে। সন্ধ্যা নামলেই মিহি হলদে রংয়ে আলোয় ছেয়ে যাবে পুরো প্রজেক্ট। সঙ্গে ইলিশের হরেক রকম পদের স্বাদে হারিয়ে যাবেন কোন এক কল্প লোকে।
এতো বড় রেস্টুরেন্ট। শুধু কি ইলিশই পাওয়া যায়? হাসি মুখে উত্তর হবে ‘না’। ইলিশের হরেক পদের সঙ্গে থাকছে থাই আর ইন্ডিয়ান ফুড। মেনু দেখে পছন্দ সই যেকোনো পদই অর্ডার করা যাবে। আছে কোমল পানীয় ও বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস।
প্রজেক্ট হিলশা রেস্তোরাঁর ম্যানেজার প্রসেনজিৎ ঢাকা পোস্টকে জানান, এই রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে ৩৫০ জনেরও অধিক লোক একসঙ্গে বসে খাবার খেতে পারেন। আপাতত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁ খোলা রাখা হয়। প্রজেক্ট হিলশায় বাংলা, ইন্ডিয়ান, থাই, কন্টিনেন্টাল খাবার পাওয়া যায়। গ্রাহকরা এখানে এসে খাবার খেতেও পারবেন, আবার নিয়েও যেতে পারবেন।
ইলিশের যত পদ
কী নেই? রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ইলিশ দিয়ে যত রকমের পদ তৈরি করা সম্ভব, সবই রেখেছেন প্রজেক্ট হিলশায়। সামনে ইলিশের সব রকমের পদ দিয়ে বুফে করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কি আছে পদের তালিকায়, চলুন দেখে নেওয়া যাক-
১। হিলশা পাতুরি
২। সরষে ইলিশ
৩। ভাপা ইলিশ
৪। হিলশা ডু পিৎজা
৫। হিলশা মালাইকারি
৬। হিলশা ভুনা
৭। পদ্মা পাড়ের ইলিশ।
৮। হিলশা স্মোক
৯। হিলশা খিচুরি
১০। হিলশা ডিম ভাঁজা
১১। হিলশা ডিম কোরমা
১২। হিলশা ডিমকারী
১৩। হিলশা লেজ ভাঁজা
ইলিশ ছাড়া আর কী?
নাম প্রজেক্ট হিলশা হলেও এখানে বিফ ও চিকেনের আইটেম পাওয়া যায়। এমনকি ভাত খিচুরির পাশাপাশি রাখা হয়েছে রুটিও। অন্যান্য পদের মধ্যে আছে বাফেলো ইউংস (২০০ টাকা), গরুর টিক্কা কাবাব (৩০০ টাকা), নান (৯০ টাকা থেকে শুরু), বিফ ভুনা (৩০০ থেকে শুরু), সফট ড্রিংক (৪৫ টাকা শুরু), ফলের জুস (১৫০ টাকা শুরু)সহ আরও অনেক পদ।
শুধু খাবারের দাম হিসাব করলেই হবে না। এখানে গুণতে হবে ১৫% ভ্যাট ও ১০ % সার্ভিস চার্জ।