মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন
Uncategorized

পেশা হিসেবে চাইল্ডকেয়ার

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০২১

স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ এবং নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশায় প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ ছেড়ে বিদেশের পানে পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকেই। তবে অপরিচিত পরিবেশে এবং ভিন্ন ধরণের সমাজ ও সংস্কৃতিতে এসে অনেকেই একটা ধাক্কা অনুভব করেন। নতুন দেশে খাপ খাইয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে, এর ভেতরেই খুঁজে নিতে হয় বিভিন্ন ধরণের কাজ।

বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের দেশ অস্ট্রেলিয়া উদারভাবে সারা পৃথিবীর সব দেশ থেকে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে যোগ্য মানুষদেরকে নিজের আপন করে নেয়। প্রতিনিয়ত এদেশে পড়ালেখা করতে আসছেন অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। অভিবাসনের জন্যও আসছেন অনেকে। অনেকে কাজ নিয়ে আসেন, তবে বেশিরভাগ মানুষেই এখানে আসার পর কাজ খুঁজে নেন।

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশী কমিউনিটি একটি ক্রমবর্ধিষ্ণু এবং বিকাশমান কমিউনিটি। আমরা এখানে আসার পরেই স্বচক্ষে দেখে বুঝতে পারি একটি সমাজে যে কোন ধরণের কাজকেই কিভাবে সম্মান করা হয় এবং স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখা হয়। বাংলাদেশে যেখানে আমরা পরিবারের একজনের উপার্জনে পুরো পরিবারের খরচ নির্বাহ করে অভ্যস্থ, সেখানে দেখা যায় স্বাভাবিক কারণেই এখানে সবাইকে কমবেশি কাজ করতে হয়। কাজ করার, উপার্জন করার এবং আত্মসম্মানের সাথে সমাজে নিজের জায়গা করে নেয়ার সংস্কৃতি এদেশের মজ্জাগত একটি বৈশিষ্ট্য।

বাংলাদেশে যে ছেলেটিকে কিংবা মেয়েটিকে খাওয়ার পর নিজের প্লেটটি পর্যন্ত পরিস্কার করতে হতো না, তাকেই দেখা যায় এদেশের কোন প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে কৃতিত্বের সাথে পড়ালেখা করার পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ করতে। যে কোন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবারের সন্তানরাই এদেশে ছাত্রাবস্থায় কিছু না কিছু পার্টটাইম কাজ করে। হতে পারে তা কোন দোকান, সুপারমার্কেট কিংবা রেস্টুরেন্টের কাজ, অথবা পেট্রোল স্টেশনের কাজ, অথবা ক্লিনিং এর কাজ কিংবা টিউটরিং এর কাজ। কাজ করার এ অভিজ্ঞতা ও সংস্কৃতি একজন মানুষের ভেতর স্বতঃস্ফুর্তভাবেই অন্যের কাজের প্রতি সম্মান ও স্বীকৃতির একটি সহজাত অভ্যাস তৈরী করে।

দোকানপাট কিংবা বাইরের প্রতিষ্ঠানের কোন কাজে সাধারণত নিত্যনতুন মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, কথা বলতে হয়। অনেক সময় বাংলাদেশী নারীরা ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং অন্যান্য নানা কারণেই এ ধরণের কাজে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। কেউ যদি এধরণের সমস্যা বোধ করেন তবে তার জন্য চাইল্ডকেয়ারের কাজটি হলো সম্মানজনক ও নিয়মিত উপার্জনের অন্যতম উপযুক্ত একটি উপায়।

শিশুরা মানসিকভাবে এবং আচরণের দিক থেকে নিষ্পাপ এবং স্বর্গীয়। তাদের বিকাশের এ গুরুত্বপূর্ণ সময়টিকে একজন দায়িত্ববান মানুষের মমতাময় আচরণ এবং তত্ত্বাবধান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়টিতে তারা যাদের সংস্পর্শে থাকে, তাদের মাধ্যমেই তারা প্রচন্ড প্রভাবিত হয়। এদিক থেকে চাইল্ডকেয়ারের কাজটি একটি দায়িত্বপূর্ণ এবং সম্মানিত কাজ।

আবার অন্যদিকে অবুঝ শিশুদেরকে দেখাশোনা করার এবং তাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য নিঃসন্দেহে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ধৈর্য্য এবং মানসিক শক্তি প্রয়োজন। সে প্রেক্ষিতে প্রকৃতিগতভাবেই মায়ের জাতি নারীদের মাঝে এ কাজের বৈশিষ্ট্যগুলো বেশি থাকে। তবে তাই বলে ছেলেদের জন্য কাজটি করার সুযোগ নেই, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। বরং বর্তমানে অনেক পুরুষও চাইল্ডকেয়ারের কাজ বেশ যোগ্যতা এবং কৃতিত্বের সাথেই নিয়মিত করে যাচ্ছেন। তবে গড়পড়তায় নারীদের উপস্থিতিই এ কাজে বেশি দেখা যায়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বামী ছাত্র হিসেবে পড়ালেখা করছেন, তার স্ত্রী চাইল্ডকেয়ার করার মাধ্যমে বেশ ভালো অংকের টাকার উপার্জন করাতে তাদের পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে। নিয়মিত পেশাজীবিদের স্ত্রীরাও চাইল্ডকেয়ারে কাজ করতে করতে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করার পর সংশ্লিষ্ট শর্তগুলো পূরণ করে নিজ বাড়িতেই অনেকে চাইল্ডকেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে থাকেন। এ কাজে আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে তা পরিবারের জন্য আর্থিক সমৃদ্ধি নিয়ে আসার নিশ্চিত একটি উপায় হতে পারে।

তবে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য যে কোন স্বীকৃত এবং বিশেষায়িত পেশার মতোই চাইল্ডকেয়ারের কাজ করার জন্য একজন মানুষকে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। এদেশের চাইল্ডকেয়ার সেক্টরের মান নিয়ন্ত্রণ এবং মান বজায় রাখার জন্য সরকার এসব নীতিমালা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং নিয়মকানুনের বিষয়গুলো সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। প্রতিনিয়ত এ সংক্রান্ত নীতিমালার পরিবর্তন হচ্ছে, উন্নত এবং নতুন নিয়মকানুন আসছে কিন্তু একজন বুদ্ধিমান ও সচেতন মানুষের জন্য এতদসংক্রান্ত মান বজায় রাখা এবং কৃতিত্বের সাথে চাইল্ডকেয়ারের কাজ করার মাধ্যমে বেশ ভালো মানের অর্থ উপার্জন করা কঠিন কিছু নয়। কেবলমাত্র প্রয়োজন সচেতনতা, বিচক্ষণতা এবং আন্তরিক প্রচেষ্টার।

যারা চাইল্ডকেয়ারে কাজ করেন তারা সাধারণত চাইল্ড কেয়ারার বা চাইল্ডকেয়ার ওয়ার্কার, অথবা ফ্যামিলি ডে কেয়ার ওয়ার্কার, কিংবা আউট অফ স্কুল আওয়ার্স কেয়ার ওয়ার্কার হিসেবে পরিচিত হন। তার দায়িত্বে থাকা শিশুদের শিক্ষা এবং খেলাধুলার যথাযথ তত্ত্বাবধান করা, তাদের সামাজিক বিকাশ ও আচরণ শিক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা করা, তাদের অন্যান্য দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার তত্ত্বাবধান করাই হলো একজন চাইল্ডকেয়ার ওয়ার্কারের নিয়মিত কাজ।

কেউ যদি অস্ট্রেলিয়াতে চাইল্ডকেয়ারের কাজ করতে চায় তাহলে প্রথমেই দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া এ বিশেষায়িত সেক্টরে কাজ পাওয়া সম্ভব নয়। অস্ট্রেলিয়ার উচ্চশিক্ষার একটি ধারা হলো ভিইটি বা ভেট। এর অর্থ হলো ভকেশনাল এডুকেশন এন্ড ট্রেইনিং। বিভিন্ন ট্রেইনিং সেন্টার এবং কলেজগুলো এই ধারার অধীনে সরকারী কারিকুলামের মাধ্যমে শিক্ষাদান করে এবং সার্টিফিকেট প্রদান করে।

চাইল্ডকেয়ারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রথম শিক্ষাগত সনদটি হলো সার্টিফিকেট থ্রি ইন আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন এন্ড কেয়ার। এক বছর মেয়াদী এ কোর্সে আঠারোটি ইউনিট বা বিষয়ের মাধ্যমে শিশুদের যত্ন, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, মানসিক বিকাশ, ঝুঁকি, শিক্ষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে বুনিয়াদী শিক্ষা দেয়া হয়। একজন শিক্ষার্থী এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে অধ্যয়ন করলে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক উভয় পদ্ধতিতেই তার কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো শিখতে পারে। অনেক সময় শোনা যায় বিভিন্ন জায়গাতে কোর্স না করেই অবৈধভাবে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করা সম্ভব, কিন্তু এতে সমস্যা থাকেই। প্রথমত, এ ধরণের সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকলে একজন চাইল্ডকেয়ার ওয়ার্কার বিশ্বমানের বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করতে গিয়ে পদে পদে ব্যর্থ হবে এবং ভবিষ্যতে পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ থেকে নিশ্চিতভাবেই বঞ্চিত হবে।

যথাযথভাবে সার্টিফিকেট থ্রি কোর্সটি যখন এখন শিক্ষার্থী সম্পন্ন করে তখন পুরো কোর্সের সময়কালের ভেতরেই সর্বমোট ১২০ ঘন্টার ওয়ার্ক প্লেসমেন্ট সম্পন্ন করার মাধ্যমে সে হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ পায়। সার্টিফিকেট থ্রি অর্জন করার পর একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন চাইল্ডকেয়ার সেন্টারে এডুকেটর হিসেবে কাজ করার সুযোগ পায়। বাস্তবতা হলো এই সার্টিফিকেট থ্রি অর্জন করার পর কাউকে বসে থাকতে হয় না, বরং তাৎক্ষণিকভাবেই সে বিভিন্ন সেন্টারে ক্যাজুয়াল বেসিসে কাজ করতে শুরু করে এবং কয়েকমাসের মাঝেই দেখা যায় কোন একটি প্রতিষ্ঠানে সে শিক্ষার্থী পার্মানেন্ট বেসিকে কাজ শুরু করেছে।

সাধারণত চাইল্ডকেয়ার সেক্টরে এডুকেটর হিসেবে কাজ করতে থাকার পাশাপাশি এ সময় কেউ কেউ ডিপ্লোমা অফ আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন এন্ড কেয়ার কোর্সটি শুরু করে। দেড় বছর মেয়াদী এই ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর চাইল্ডকেয়ার সেন্টারগুলোতে উচ্চতর বেতনে সুপারভাইজার পদে কাজ করা যায়।

কোন শিক্ষার্থী যদি ভিইটি সেক্টরের কলেজে বা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা না করে অস্ট্রেলিয়ান কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন তাহলে তার বিষয়টি যদি চাইল্ডকেয়ারের সাথে সংশ্লিষ্ট হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কোর্সগুলো করা সাপেক্ষে সেও চাইল্ডকেয়ার সেক্টরে কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরুপ, ব্যাচেলর অফ এডুকেশন বা ব্যাচেলর অফ টিচিং এ ছাত্র-ছাত্রী হয় তখন চাইল্ডকেয়ারের কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় কোর্সগুলো করা সাপেক্ষে সে এ কাজের সুযোগ পায়। তবে এক্ষেত্রে তাকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিটি সংশ্লিষ্ট স্টেটে এই ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য সরকারীভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।

কর্মসংস্থানবিষয়ক অস্ট্রেলিয়ান সরকারী ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যানে দেখা যায় চাইল্ডকেয়ার কাজে নিয়োজিতদের মাঝে ৯৫ শতাংশের বেশি মানুষ হলেন নারী, মাত্র ৫ শতাংশের কাছাকাছি পুরুষ এই ক্ষেত্রটিতে কাজ করেন। এ কাজের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে পুরো অস্ট্রেলিয়ার যে কোন স্টেটে বা এলাকায় কাজের প্রচুর সুযোগ আছে। বিগত ৫ বছর সময়কালে চাইল্ড কেয়ারে কাজ করা কর্মীদের সংখ্যা নিয়মিতহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সেক্টরে যেহেতু কর্মীর চাহিদা ক্রমবর্ধমান সুতরাং পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগামী ৫ বছরেও এক্ষেত্রে কাজের সুযোগ নিয়মিত হারেই বৃদ্ধি পেতে থাকবে। বর্তমানে পুরো অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় সাড়ে পনেরো লক্ষ মানুষ চাইল্ডকেয়ার কর্মী হিসেবে কাজ করছে যাদের মাঝে প্রায় অর্ধেকেই এটি ফুল-টাইম কাজ হিসেবে করে থাকেন। অন্যরা তাদের আর্থিক প্রয়োজন এবং অন্যান্য বিবেচনায় পার্ট-টাইম কিংবা ক্যাজুয়াল বেসিসে চাইল্ডকেয়ারের কাজ করেন।

একজন চাইল্ডকেয়ার কর্মী সাধারণত সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘন্টা ফুল-টাইম কাজ করলে গড়পড়তায় ৮০০ ডলার উপার্জন করেন। তবে কাজে অভিজ্ঞতা অর্জনের সাথে সাথে পরবর্তীতে এ উপার্জন সাপ্তাহিক ১২৩০ ডলারে পর্যন্ত গিয়ে পৌছায়। অস্ট্রেলিয়ান বুর‍্যো অফ স্ট্যাটিসটিকসের পরিসংখ্যান তথ্য অনুযায়ী চাইল্ডকেয়ার কাজে কর্মরত মানুষরা গড়ে ৩৩ বছর বয়সী, তবে ১৫ বছর বয়সী স্কুল গ্র্যাজুয়েট থেকে শুরু করে ৬৫ বছরেরও বেশি বয়সী মানুষরাও এ কাজে নিয়োজিত আছেন বিপুল সংখ্যায়। চাইল্ডকেয়ার কর্মীদের বড় অংশই সার্টিফিকেট থ্রি অথবা ডিপ্লোমা পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন, তবে ব্যাচেলর এমনকি মাস্টার্স ডিগ্রিধারী চাইল্ডকেয়ার কর্মীদের সংখ্যাও প্রচুর।

দীর্ঘদিন সরাসরি চাইল্ডকেয়ার কর্মী হিসেবে কাজ করার পর বর্তমানে এ বিষয়ের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন ওয়াজিহা জাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমি ২০০৮ সালে মাইগ্রেশন করে অস্ট্রেলিয়া আসার পর সার্টিফিকেট থ্রি কোর্সটি করার সাথে সাথেই চাইল্ডকেয়ারের কাজ করে নিয়মিত উপার্জন করতে শুরু করি। পরবর্তীতে ডিপ্লোমা করে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেছি। দীর্ঘ কয়েক বছর এ কর্মক্ষেত্রটির আগপাশতলা বুঝার পর চিন্তা করলাম এই কর্মসংস্থানে অন্যদেরকেও সহায়তা করার সুযোগ রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে চাইল্ডকেয়ার কোর্সের ট্রেইনার হিসেবে কাজ করছি। সমাজে যেহেতু সন্তান জন্ম নেয়া বন্ধ হবে না, সুতরাং শিশুদের দেখাশোনার এ কাজটিরও কখনো অভাব হবে না বরং যত দিন যাচ্ছে ততই এ কাজের জন্য মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

ওয়াজিহা জানান, তার অধীনে যারা সার্টিফিকেট থ্রি কোর্সটি করছে তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে পড়ালেখার পাশাপাশি পার্টটাইম চাইল্ডকেয়ারের কাজ করে উপার্জন শুরু করেছে। তার মতে এটি সবচেয়ে সহজে শেখা যায় এমন একটি কাজ, আবার অন্যদিকে সবচেয়ে তৃপ্তিকর একটি কাজও বটে। শিশুরা হলো বেহেশতের ফুল। তাদেরকে দেখাশোনা করে, তাদের সাথে সারাদিন সময় কাটিয়ে একজন চাইল্ডকেয়ার কর্মীর মন আনন্দিত হয়। এর পাশাপাশি একজন চাইল্ডকেয়ার কর্মীর যদি সন্তান থাকে তাহলে তিনি সে সন্তানকে নিজের সাথে কর্মক্ষেত্রেই রাখার অনুমতি পান, এভাবে নিজ সন্তান প্রতিপালনের জন্যও এ কাজটি সবচেয়ে বেশি সহায়ক বলেই তিনি মন্তব্য করেন।

মোদ্দাকথা, চাইল্ডকেয়ারের কাজটি পরিবারের একজন সদস্যের পার্ট-টাইম কাজের মাধ্যমে যেমনি কিছুটা বাড়তি কিন্তু প্রয়োজনীয় উপার্জনের উৎস হতে পারে, তেমনি আবার কারো ফুল-টাইম কাজের মাধ্যমে এটি পরিবারের কর্তা কিংবা কত্রীর উপার্জনের মূল উৎসও হতে পারে। প্রাথমিকভাবে যে কেউ এ কাজটি শুরু করতে পারেন, তার জন্য প্রয়োজন সার্টিফিকেট থ্রি কোর্স সম্পন্ন করা। পরবর্তীতে ডিপ্লোমা এবং কাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অধিকতর উপার্জন এবং ভালো কাজের সুযোগ অবারিত। চাইল্ডকেয়ার এমন একটি কাজের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট সার্টিফিকেট থাকলে অস্ট্রেলিয়ায় যেখানে কখনোই কাজের অভাব হয় না। পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এটি অনেক অভিবাসী মানুষের জন্যই উপযুক্ত এবং সন্তুষ্টিজনক একটি কাজের সুযোগ এনে দিতে পারে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com