বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

পিরামিডের অদ্ভুত রহস্য

  • আপডেট সময় সোমবার, ৩ মে, ২০২১
পৃথিবীতে মানব সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল প্রায় 10 হাজার বছর আগে। আর মানুষের বিজ্ঞানচেতনা জেগে ছিল আদিম যুগে আগুন আবিষ্কারের মাধ্যমে। সভ্যতার সাথে সাথেই মানুষের বিজ্ঞান ভাবনার বিকাশ ঘটে। পাহাড়ের গুহায় চিত্র অংকন, বড় বড় পাথর খন্ড কেটে মূর্তি বানানো এসব ছিল বিজ্ঞান চেতনার প্রমাণ। কিন্তু আজ থেকে 5000 বছর আগে মিসরে কিছু এমন স্থাপত্য নির্মাণ হয়েছিল যা তৎকালীন বিজ্ঞান ভাবনার ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব। কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া নিখুঁত এবং নির্ভুল পরিমাপ অকল্পনীয় স্থাপত্য নির্মাণ করেছিল তারা। আজ যেখানে 20 টনের একটি কংক্রিটের ভার তুলতে ক্রেনের দরকার হয়, সেখানে 5 হাজার বছর আগে কোন ক্রেন ছাড়া 70 টনের চেয়েও ভারী ভারী পাথর এরা বহন করেছিল। কিভাবে সম্ভব? এমনকি তারা আবিষ্কার করেছিল ন্যাচারাল এ.সি, যা পিরামিডের ভিতর সব সময় 20 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় থাকত।
প্রাচীনকালে মিশরীয় রাজাদের ফিরাউন বলা হতো। এই ফিরাউন রা যখন মারা যেতেন তখন একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তাদের মৃতদেহ সংরক্ষিত করে রাখা হতো, একে মমি বলা হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো বর্তমানকালে একটি মৃতজীব কে সংরক্ষণ করতে গেলে ফরমালিন ও কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেই সংরক্ষণ অল্প সময়ের জন্য সম্ভব। মিশরীয় রা এমনকি ব্যবহার করেছিল যা 4 হাজার বছর পরেও মমি গুলোকে অক্ষত রেখেছে? কোথা থেকে পেল তারা এই জ্ঞান? আমাদের প্রিয় জন বা কাছের মানুষ মারা গেলে আমরা তার স্মৃতিতে সমাধি বা কবর  নির্মাণ করি। মিশরীয় রা ফিরাউন দের মমি গুলো যে সমাধির মধ্যে রাখতেন তাই হলো পিরামিড। পিরামিড পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তমাশ্চর্যের একটি প্রাচীন মিশর শাসন করতেন প্রাচীন মিশরীয় রাজাদের বলা হতো। মিশরের ছোট-বড় 75 পিরামিড আছে।
কিন্তু এই পিরামিডের গঠন এতটাই আশ্চর্য যে বিজ্ঞানী দের বারে বারে ভাবিয়ে তুলছে একেকটি পিরামিড তৈরি করতে প্রায় 32 হাজার লাইম স্টোন ব্যবহার করা হয়েছিল। যার প্রত্যেকটি নিখুঁতভাবে কাটা। বিজ্ঞানীরা অনেক খোঁজ করেও পিরামিডের কাছাকাছি কোন  স্টোর ভান্ডার খুঁজে পায়নি। তো এতো ভারী ভারী স্টোন গুলি তারা কোথা থেকে নিয়ে আসত? আর কিভাবে তারা 50 থেকে 60 মিটার উচু পিরামিডগুলো তে এই ভারী ভারী পাথর গুলো তুলতো?
কোন প্রাণী না কোন এলিয়েন?
কাদের সাহায্য নিয়েছিল মিশরীয় রা?
মিশরীয় রা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করতো। তাই রাজার মমির সাথে  তারা সোনাদানা, অমূল্য রত্ন ও দাস দাসীদের জীবন্ত কবর দিত পিরামিডে।
মরুভূমির দেশ মিশরে তাপমাত্রা সবসময় বেশি থাকত। কিন্তু তারা পিরামিডের ভিতরে এমন কিছু কারুকার্য করেছিল যাতে পিরামিডের ভিতরে সব সময় 20 ডিগ্রি তাপমাত্রা বজায় থাকত। কোন জিনিস দিলে তা আয়তনে বাড়ে আবার রাত কামালে তা আয়তনে ছোট হয়ে যায়। এটাকে আটকানোর জন্য বর্তমান বিজ্ঞানিরা একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তাকে বলা হয় বল & সকেট প্রসেস।
আশ্চর্যের বিষয় হল চার হাজার বছর আগে মিশরীয়রা এই পদ্ধতি ব্যবহার করত পিরামিডে। যেখানে দিনের বেলায় 50 ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকত এবং রাতের বেলা 10 ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতো। অবাক হচ্ছেন তো! এখানেই শেষ নয় পিরামিডের অবস্থান আকাশের তারার সাথে সমান্তরাল। যা কোনোভাবেই কাকতালীয় হতে পারে না। আকাশে তারার সাথে সমান্তরালভাবে পিরামিড তৈরি করতে গেলে দরকার ছিল হাওয়াই জাহাজের। কিন্তু তখন কার  দিনে তারা হাওয়াই জাহাজে পাবে কি করে? আর হাওয়াই জাহাজ ছাড়া এই সমান্তরালভাবে পিরামিড নির্মাণ ছিল অসম্ভব। কিছু বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে এলিয়েন রা মিশরীয় দের সাহায্য করেছিল। এই পিরামিড গুলি তৈরি করতে তারা এই সমস্ত তারাগুলো থেকেই এসেছিল। এই যুক্তির পিছনে কারণ হলো মিশরের পিরামিডের ভিতরের দেয়ালে যে চিত্র অংকন হয়েছে সেখানে কিছু এলিয়েন যানের চিত্র দেখা গেছে। আর কিছু এলিয়েনের ছবি মিশরীয়রা একে ছিল এই পিরামিডে।
তবে কি প্রাচীনকালে পৃথিবীতে এসেছিল? আর,মিশরীয় দের সাহায্য করেছিল? কারণ আমরা জানি যে আমাদের চোখের সামনে চারপাশে যে জিনিস দেখি সেই জিনিস দিয়ে নতুন কোন জিনিসের ভাবনা আমরা পাই। মিশরীয় রা হয়তো এরকম কোন যান দেখেছিল, এরকম কোন এলিয়েনদের দেখেছিল। তাই জন্যই তারা পিরামিডের দেওয়ালে এমন ছবি অংকন করেছিল। পিরামিডের সামনে একটি বিরাট দেখা যায়। যা বহু বছর ধরে মাটির নিচে চাপা পড়েছিল। এই বিশাল মূর্তিটি কোন আলাদা আলাদা পাথর দিয়ে তৈরি নয়, বরং একটা বিশাল পাথর খন্ড কেটে এটা তৈরি।
প্রশ্ন হলো এই বিশাল মরুভূমিতে এই মূর্তি কিভাবে এলো? এটির মুখ মানুষের মতো কিন্তু শরীর পশু।
একুশে জুলাই পৃথিবীতে সবথেকে বড় দিন হয়। এই দিন সূর্যকে মূর্তির পেছনে ঠিক অর্ধচন্দ্রাকার দেখায়।
এই মূর্তির নিচেও রয়েছে কিছু সুরঙ্গ। যার শেষ প্রান্ত পিরামিডে পৌঁছে গেছে। কিন্তু পিরামিডের যে ঘরে এই সুরঙ্গ পৌঁছেছে সেখানে কিছুই পাওয়া যায় নি।
পিরামিডের ভিতরে আজ পর্যন্ত যে কটা ঘর খুঁজে পাওয়া গেছে সবকটাই রহস্যময়। প্রতিটা ঘরের সাথে রয়েছে কিছু সুরঙ্গ।
 আপনি যদি ভাবেন নিশ্চয় হাওয়া চলাচল করার জন্য এই সুরঙ্গ গুলি বানানো হয়েছিল তাহলে আপনি ভুল। কারণ এই সুরঙ্গ গুলির প্রতিটা মুখ বন্ধ রয়েছে। যেন কেউ চায় না যে পিরামিডের ভিতরে ঘর গুলোতে কেউ প্রবেশ করুক। মাত্র 2 /3  টি ঘর আবিষ্কার করার পরেই বিজ্ঞানীদের সাথে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটতে থাকে। কয়েকজন বিজ্ঞানীর আকস্মিক মৃত্যু হয়। তারপর মিশরের সরকার পিরামিডের ভেতরে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে ব্যান করে দিয়েছে।
এসবের ভিতরে বিজ্ঞানীরা আরেকটি জিনিস খুঁজে পেয়েছিল যা হলো মিশরের আবিষ্কার লাইট। একটা দেয়ালে এমন চিত্র দেখা গেছে যেটা দেখে বোঝা যাচ্ছে এটি একটি কৃত্রিম লাইটের ছবি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন রাতের অন্ধকারে অবিরাম কাজ চালিয়ে যেতে তারা এই লাইট ব্যবহার করত। কিন্তু কোথা থেকে এলো এই লাইট? এলিয়েন নাকি ভবিষ্যতের কোনো মানুষ এদেশে এদের এই লাইট দিয়েছে তা এখনো অজানা। মিশর প্রায় 5000 বছর ধরে তাঁর বুকে জমা রেখেছে এমন কিছু রহস্যের ভান্ডার।
মিশরের সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষনীয় পিরামিড হচ্ছে গিজার পিরামিড। যা খুফু’র পিরামিড হিসেবেও পরিচিত। এটি তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রায় 5000 বছর আগে। এর উচ্চতা প্রায় 481 ফুট।
এটি 755 বর্গফুট জমির উপর স্থাপিত এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় 20 বছর এবং শ্রমিক কাজ করে ছিল আনুমানিক 1 লাখ।
পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল বিশাল বিশাল পাথর খন্ড দিয়ে। পাথর খণ্ডের একেকটির ওজন ছিল প্রায় 60 টন। যার দৈর্ঘ্য ছিল 30 থেকে 40 ফুটের মতো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com