পাহাড়জুড়ে প্রচণ্ড খরতাপে স্বস্তির সুবাতাস দিচ্ছে ক্যাশিয়া জাভানিকা। পাহাড়ে গ্রীষ্মে সোনালু, কৃষ্ণচূড়া আর জারুল মুগ্ধ করে ফুল প্রেমিদের। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ক্যাশিয়া জাভানিকা বা লাল সোনাইল।
বছর তিন আগে খাগড়াছড়ি উপবিভাগীয় প্রকৌশলীয় কার্যালয়ে ক্যাশিয়া জাভানিকার চারা রোপণ করেন সওজের প্রকৌশলী সবুজ চাকমা। বর্তমানে প্রতিটি গাছ প্রায় পাঁচ মিটার উঁচু হয়েছে। ছাতার মতো ছড়িয়েছে ডালাপালা। গাছজুড়ে ফুটেছে জাভানিকা বা লাল সোনাইল। অল্পবয়সি গাছগুলো এখন ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। নতুন ধরনের এ ফুল প্রকৃতি প্রেমীদের মুগ্ধ করছে।
প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, গাছটি পাহাড়ে বহু বছর ধরে দেখা যায়। ১৯৯৪ সালে আমাদের বাড়ির পাশে একটি গাছ ছিল। সেটি প্রাকৃতিকভাবে জন্মেছিল। আমি খাগড়াছড়ি থেকে এ গাছের চারা সংগ্রহ করেছি। চারাটি প্রায় ৩ বছর আগে লাগিয়েছিলাম।
খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে এ গাছটি দেখা যায়। ফুলের রঙ গোলাপি হওয়াতে দূর থেকে দর্শনার্থীদেরক মুগ্ধ করে। সাধারণত সারাদিন রোদ পাওয়া যায় এমন স্থানে লাগালে ভালো ফুল পাওয়া যায়।
ক্যাশিয়া জাভানিকার বৈজ্ঞানিক নাম Cassia javanica, গ্রীষ্মে এ ফুল ফোটে। বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ছাড়াও ইন্দোনেশিয়াসহ উষ্ণমণ্ডলীয় এলাকায় এ ফুল ফোটে। গাছ দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। মাথা ছড়ান, পত্রমোচী, যৌগপত্র ১-পক্ষল, ১৫ থেকে ৩০ সেমি লম্বা, পত্রিকা ১৬ থেকে ২৮টি, মসৃণ ও ৩ থেকে ৫ সেমি লম্বা।
নিসর্গ বিষয়ক লেখক মোকারম হোসেন ফুলটির বিষয়ে বলেন, লাল সোনাইলের ফুল, পাতা ও গাছের গড়ন বেশ নান্দনিক। অল্পবয়সি গাছগুলো দেখতে ছাতার মতো। লাল সোনাইলের পোষাকী নাম পিংক ক্যাশিয়া বা পিংক শাওয়ার। এতদিন কোনো বাংলা নাম ছিল না।লাল সোনাইল নাম রাখেন অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা। গড়নের দিক থেকে এরা সোনাইলের মতো, তবে রঙ আলাদা।
তিনি আরও বলেন, শীতকাল পাতা ঝরার মৌসুম। গ্রীষ্মের শুরুতে কচিপাতার সঙ্গে গোলাপি রঙের ফুলের ছোট ছোট খাড়াথোকায় ভরে ওঠে গাছ। ফুল প্রায় ৩ সেমি চওড়া, সুগন্ধি, পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। বাসি ও তাজা ফুল মিলে চমৎকার বর্ণ বৈচিত্র তৈরি করে। ফল গোলাকার, লম্বা, গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। বংশবৃদ্ধি বীজের মাধ্যমে।