বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহকে হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত টাইরেস হাসপিলকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি আদালত এ সাজা ঘোষণা করেছেন। ফাহিম সালেহর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন ২৫ বছর বয়সী হাসপিল।
২০২০ সালের ১৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নিজ অ্যাপার্টমেন্টে খুন হন ফাহিম সালেহ। তিনি রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ছিলেন।
গত মঙ্গলবার ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালে ৩৩ বছর বয়সী ফাহিম সালেহকে হত্যার ঘটনায় ২৫ বছর বয়সী টাইরেস হাসপিলের ৪০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তাঁকে নিউইয়র্কের কারাগারে রাখা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন এল ব্রাগ জুনিয়র বলেন, ফাহিম সালেহকে নৃশংসভাবে হত্যা করার জন্য আজ টাইরেস হাসপিল জবাবদিহির সম্মুখীন হচ্ছেন। দয়ালু, উদার ও সহানুভূতিশীল মানুষটি (ফাহিম সালেহ) বিশ্বের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলেন।
আলভিন এল ব্রাগ আরও বলেন, ‘বিলাসী জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে আসামি (হাসপিল) তাঁর (ফাহিম সালেহ) কাছ থেকে চুরি করার পরও তিনি তাঁকে দ্বিতীয়বারের মতো সুযোগ দিয়েছিলেন। আজ এ সাজা ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমরা যদিও সালেহকে ফিরে পাব না, তবে তাঁকে হারানোর কারণে তাঁর পরিবার যে অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্যে আছে, তা তারা কাটিয়ে উঠবে বলে আশা করি।’নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট জুরি হাসপিলকে দোষী সাব্যস্ত করার দুই মাসের কিছু সময় পর তাঁর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হলো।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ফাহিম সালেহ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ছিলেন। নাইজেরিয়াভিত্তিক স্কুটার স্টার্টআপ গোকাদা প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহী ছিলেন তিনি।
ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি আদালতে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর হাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।
কৌঁসুলিরা বলছেন, ফাহিম সালেহকে হত্যার পেছনে হাসপিলের উদ্দেশ্য ছিল আর্থিক। ফাহিম সালেহ জানতে পেরেছিলেন, ২০১৮ সালে নির্বাহী সহকারী হিসেবে কাজ শুরুর পর থেকে হাসপিল তাঁর (ফাহিমের) বিভিন্ন আর্থিক অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার হাজার ডলার চুরি করেছেন। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ফাহিম ওই অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপিল এরপরও অর্থ চুরি করছিলেন।
ফাহিম সালেহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন, এমন আশঙ্কায় তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হাসপিল।