বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন
Uncategorized

পহেলা জুলাই কানাডার ১৫৪তম বার্ষিকী

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ জুন, ২০২১

পহেলা জুলাই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র কানাডার জন্ম বার্ষিকী ‘কানাডা ডে’। জুলাই ১, ২০২১ কানাডিয়ান কনফেডারেশনের ১৫৪তম বার্ষিকী। ১৮৬৭ সালের ১লা জুলাই কানাডা ব্রিটিশ কলোনি হতে অধিরাজ্যের মর্যাদা লাভ করে। গত ১৮ জুন, ২০২১ ফেডারেল সরকারের মিনিস্টার অফ কানাডিয়ান হেরিটেজ স্টিভেন গিলবাউল্ট কানাডা দিবস ২০২১ এর প্রোগ্রাম উন্মোচন করেছেন।

কানাডাকে সুন্দর এবং শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে ১ জুলাই ‘কানাডা ডে’ উদযাপনের বিষয়ে, মন্ত্রী গিলবিউল্ট বলেছেন, “এ বছর, কানাডা দিবস কানাডিয়ানদেরকে সহানুভূতি, বোঝার এবং নমনীয়তা প্রদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এবারের কানাডা দিবস সিস্টেমিক বর্ণবাদ এবং বৈষম্য মোকাবেলার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করার, পুনরায় নিশ্চিত করার এবং একে অপরের কাছ থেকে মুক্ত হৃদয় ও মন দিয়ে শেখারও সুযোগ দেয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কানাডা দিবস আমাদের একত্রিত হওয়া বন্ধনগুলিকে আরও দৃঢ় করার পাশাপাশি আমাদের ইতিহাস স্বীকার করার সাথে সাথে আমাদের দেশের ভবিষ্যতের প্রত্যাশা ও আত্মবিশ্বাসের দিকে তাকিয়ে সত্যবাদী, পুনর্মিলনীয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আলোচনার অনুমতি দেয়।”

মন্ত্রী গিলবিউল্ট বলেন, “১ জুলাইতে, আপনি এই দেশের একটি অংশ হওয়ার জন্য যা বোঝায় তা প্রতিবিম্বিত করার সাথে সাথে আমরা আপনাকে ঘরে বসে স্মরণীয় মুহূর্তগুলি তৈরি করতে এবং কানাডার শৈল্পিক বৈচিত্র্য উদযাপন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।”
দিনটিতে কানাডার ইতিহাস, মূল্যবোধ, প্রতিভা এবং সৃজনশীলতা পুরো বিশ্বের জন্য প্রদর্শিত হবে। পহেলা জুলাই “কানাডা ডে” সংবিধিবদ্ধ ছুটির দিন। দিনটি তাই কানাডাবাসীদের দিন। শুভ কানাডা দিবস!

কানাডা (ইংরেজি: Canada) উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশে অবস্থিত একটি দেশ। এটার দশটি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চল আটলান্টিক থেকে প্যাসিফিক এবং উত্তরে আর্কটিক সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত, যা এটিকে মোট আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তর দেশে পরিণত করেছে। কানাডার অধিকৃত ভূমি প্রথম বসবাসের জন্য চেষ্টা চালায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীসমূহ। ষোড়শ শতাব্দীতে ইংরেজ এবং ফরাসি অভিযাত্রীরা আটলান্টিক উপক‚ল আবিষ্কার করে এবং পরে বসতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ফ্রান্স দীর্ঘ সাত বছরের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলস্বরূপ ১৭৬৩ সালে উত্তর আমেরিকায় তাদের সব উপনিবেশ ইংরেজদের কাছে ছেড়ে দেয়। ১৮৬৭ সালে, মৈত্রিতার মধ্য দিয়ে চারটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ নিয়ে দেশ হিসেবে কানাডা গঠন করা হয়। এর ফলে আরো প্রদেশ এবং অঞ্চল সংযোজনের পথ সুগম, এবং ইংল্যান্ড থেকে স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ১৯৮২ সালে জারীকৃত কানাডা অ্যাক্ট অনুসারে, দশটি প্রদেশ এবং তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত কানাডা সংসদীয় গণতন্ত্র এবং আইনগত রাজতন্ত্র উভয়ই মেনে চলে। রাষ্ট্রের প্রধান রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। কানাডা দ্বিভাষিক (ইংরেজি ও ফরাসি ভাষা দুটোই সরকারি ভাষা) এবং বহুকৃষ্টির দেশ।

কানাডার রাজধানী অটোয়া, বৃহত্তর শহর টরন্টো, সরকারি ভাষা ইংলিশ ও ফরাসি, জাতীয় সংগীত: “ও কানাডা” জাতিগোষ্ঠী: ৭৪.৩% ফরাসি ও অন্যান্য ইউরোপীয়, ১৪.৫% এশিয়ান, ৫.১% দেশীয়, ৩.৪% ক্যারিবিয়ান এবং ল্যাটিন আমেরিকান, ২.৯% আফ্রিকান ও ২% ওশেনিয়ান। ধর্ম: ৬৭.২% খ্রীষ্টান, ২৩.৯% কোন ধর্ম নেই, ৩.২% ইসলাম, ১.৫% হিন্দু, ১.৪% শিখ, ১.১% বৌদ্ধ, ১.০% ইহুদি, ০.৬% অন্যান্য। কানাডার রানী: দ্বিতীয় এলিজাবেথ। গভর্নর জেনারেল: জুলিপেয়েট, প্রধানমন্ত্রী: জাস্টিন ট্রুডো, আইন-সভা: সংসদ, উচ্চকক্ষ (সিনেট), নিম্নকক্ষ (হাউস অফ কমন্স), মোট আয়তন: ৯৯,৮৪,৬৭০ বর্গকিলোমিটার (৩৮,৫৫,১০০ বর্গমাইল), পানি: ৮.৯২%, মোট ভূপৃষ্টের আয়তন: ৯০,৯৩,৫০৭ কিমি (৩৫,১১,০২৩ মা), জনসংখ্যা: ২০১৮ সালে: ৩৭,০৬৭,০১১ এবং ২০১৬ আদমশুমারি অনুযায়ী ৩৫,১৫১,৭২৮ জন, জিডিপি (পিপিপি): ২০১৮ আনুমানিক মোট $১,৮৪,৭০০ কোটি ডলার, মাথাপিছু আয়: $৪৯,৭৭৫ ডলার।

প্রসঙ্গত: “কানাডা” নামটি সম্ভবত এসেছে সেন্ট লরেন্স ইরোকোয়াইয়ান (St. Lawrence Iroquoian) শব্দ “কানাটা” (kanata) থেকে, যার অর্থ “জেলেদের ক্ষুদ্র গ্রাম”, “গ্রাম”, অথবা “বসতি”। ১৫৩৫ সালের দিকে, বর্তমান ক্যুবেক শহরের বসবাসকারীরা অভিযাত্রী জ্যাক কার্তিয়ারকে (Jacques Cartier) স্টেইডাকোনা (Stadacona) গ্রামের দিকে পথনির্দশনের সুবিধার্থে শব্দটি ব্যবহার করেছিল। কার্তিয়ার ‘কানাডা’ শব্দটি ব্যবহার করেছিল শুধুমাত্র গ্রামটি চিহ্নিত করতেই নয়, বরং গ্রাম্য-প্রধান ডোন্নাকোনা (Donnacona) সম্পর্কিত সব কিছু নির্দেশ করতে। ১৫৪৫ সাল নাগাদ, ইউরোপের বই এবং মানচিত্রে এই অঞ্চলকে “কানাডা” হিসেবে নির্দেশিত করা শুরু হয়।

কানাডায় ফরাসি উপনিবেশকে “নব্য ফ্রান্স” (New France) বলা হত, যার বিস্তৃতি ছিল সেন্ট লরেন্স নদী থেকে গ্রেইট লেইকসের উত্তর উপক‚ল পর্যন্ত। পরবর্তীতে, ১৮৪১ সাল পর্যন্ত, এটি যথাক্রমে “উচ্চ কানাডা” এবং “নিম্ন কানাডা” নামক দুটি ইংরেজ উপনিবেশে বিভক্ত থাকে। কানাডা অ্যাক্ট ১৯৮২ অনুসারে, “কানাডা”ই একমাত্র আইনগত এবং দ্বিভাষিক নাম। ১৯৮২ সালে সরকারি ছুটি ‘ডোমিনিয়ান ডে’ কে পরিবর্তন করে ‘কানাডা ডে’ করা হয়। কানাডা একটি ফেডারেশন যাতে সংসদীয় গণতন্ত্রভিত্তিক সরকারব্যবস্থা এবং একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। কানাডার সরকার দুই ভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক সরকার। প্রশাসনিক অঞ্চলগুলির তুলনায় প্রদেশগুলিতে স্বায়ত্তশাসনের পরিমাণ বেশি। কানাডার বর্তমান সংবিধান ১৯৮২ সালে রচিত হয়। এই সংবিধানে পূর্বের সাংবিধানিক আদেশগুলি একটিমাত্র কাঠামোয় একত্রিত করা হয় এবং এতে অধিকার ও স্বাধীনতার উপর একটি চার্টার যোগ করা হয়। এই সংবিধানেই প্রথম কানাডার নিজস্ব স্থানীয় সরকারকে তাঁর সংবিধানের উপর পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়। পূর্বে কানাডা ১৮৬৭ সালে প্রণীত ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকা অধ্যাদেশবলে পরিচালিত হত এবং এতে ও এর পরে প্রণীত আইনসমূহে ব্রিটিশ সরকারকে কিছু সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল।

তথ্য সূত্র: কানাডা গভর্নমেন্ট ওয়েবসাইড, কানাডিয়ান হেরিটেজ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com