কাশ্মীরের অন্যতম সুন্দর উপত্যকা পহেলগাঁও। পরিচিত। জোজিনা পাস পেরিয়ে অমরনাথ দিয়ে কাশ্মীর আসার পথে প্রথম গ্রাম বলেই এর এমন নাম। শ্রীনগর থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই অপরূপ উপত্যকা ‘ভ্যালি অফ শেফার্ডস’ নামেও পরিচিত। চারদিকে হিমালয়ের উঁচু শৃঙ্গ, উপত্যকা দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা লিডার, সব মিলিয়ে এখানকার নৈসর্গিক শোভা তুলনাহীন। শুধু তাই নয়, এখানে শীতকালে স্নো ফেস্টিভাল হয়। তাছাড়া অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের কাছেও পহেলগাঁও স্বর্গরাজ্য। লিডার নদীতে ওয়াটার র্যাফটিং এবং ফিশিংয়ের সুযোগ রয়েছে। তাই সারাবথর এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। শ্রীনগর থেকে গাড়ি বা বাসে আসতে পারেন পহেলগাঁও। আসার রাস্তাটিও মনোরম। পথে যেতেই পড়বে পামপুর। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটি খুব সুন্দর। চাইলে এখানে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে পারেন। স্পেনের পর একমাত্র পামপুরেই জাফরানের চাষ হয়।
পহেলগাঁওয়ের অন্যতম আকর্ষণ তুলিকান লেক। চারদিকে পাইন, চিনার, দেবদারুতে ছাওয়া, ঘন সবুজ ঢেউখেলানো প্রান্তর, দূরে বরফে মোড়া পাহাড়, মাঝখানে তুললিকান লেক। ছবির মতো সুন্দর জায়গা। যাঁরা অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসেন তাঁরা পহেলগাঁও থেকে ট্রেক করে তুলিকান আসতে পারেন। অথবা ঘোড়ার পিছে সওয়ার হয়েও তুলিকান আসা যায়। পহেলগাঁওয়ের আর এক আকর্ষণ বেতাব ভ্যালি। হিন্দি ছায়াছবি ‘বেতাব’ এর শুচিং এখানে হয়েথিল। তারপর থেকই এই জায়গার নাম বেতাব ভ্যালি। যাঁরা ট্রেক করেন তাঁদের কাছেও বেতাব ভ্যালি খুব জনপ্রিয়। অনেকগুলো ট্রেকিং রুটের বেস ক্যাম্প এটাই। ঘুরে দেখুন মার্তন্ডের সূর্য মন্দির। স্থানীয়রা মনে করেন পান্ডবদের সময় এই মন্দিরটি নির্মিত হয়। বহু প্রাচীন এই মন্দিরের স্থাপত্যশৈলীও নজর কাড়ে। এখান থেকে পাহাড়ি উপত্যকার খুব সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়। এরপর আসুন অনন্তনাগ। পাহাড় থেকে ঝর্না স্বতঃসফূর্ত ভঙ্গিতে নামছে, দু’পাশে দুটি কুন্ড, মাঝে মন্দির। ভারী সুন্দর জায়গা। মন প্রশান্ত হয়ে যায়।
পহেলগাঁওয়ের আর এক আকর্ষণ চন্দওয়ারি। শীতকালে এই পুরো উপত্যাকা বরফের চাদরে ঢেকে যায়। শীতকালে ঘুরতে এলে স্নো ব্রিজ দেখতে ভুলবেন না। ভক্তদের কাছে চন্দনওয়ারি পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত। এখান থেকেই শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। হাতে সময় থাকলে ঘুরে দেখতে পারেন মামালেশ্বর মন্দির। লিডার নদীর ধারে এই মন্দিরের চারপাশের দৃস্য চমৎকার। পহেলগাঁও থেকে মাত্র ১ কিনি দূরে অবস্থিত। তাই পায়ে হেঁঠেই মন্দির দর্শনে আসতে পারেন। পহেলগাঁওয়ের অন্যতম আকর্ষণ আরু ভ্যালি। আরু ভ্যালিতে স্থানীয় মানুষ এবং তাঁদের সংস্তৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। পাইন ঘাছ আর ঝরনায় ঘেরা আরু ভ্যালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। এখানকার স্থানীয় দোকান থেকে ছোটখাটো হাতে তৈরি জিনিস, শাল, উপহারের জিলিস, স্যুভেনির ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারেন।
কীভাবে যাবেন
শ্রীনগর বা জম্মু থেকে গাড়ি ভাড়া করে পহেলগাঁও যাওয়াই ভাল। কলকাতা থেকে ইন্ডিগোয় শ্রীনগর পৌঁছে তারপর গাড়ি করে পহেলগাঁও যাওয়া যেতে পারে। কলকাতা থেকে ট্রেনে জম্মু পৌঁছে স্টেট ট্রান্সপোর্টের বাসেও যেতে পারেন।
ইমেল: [email protected]
ইমেল: [email protected]
ইমেল: [email protected]