শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন

পর্যটক টানতে কুয়াকাটায় হবে বিমানবন্দর

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩

দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার বিস্তৃত এই সৈকত। সমুদ্র্রের গর্জন, উথাল-পাতাল ঢেউ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত, দীর্ঘতম সৈকত প্রতিনিয়তই আকৃষ্ট করছে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসু দর্শনার্থীদের। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি অর্জন করেছে সাগরকন্যাখ্যাত কুয়াকাটা। কিন্তু এখানে আন্তর্জাতিক মানের কোনো বিমানবন্দর না থাকায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। এমন পরিস্থিতে বন্দর নগরী পায়রা ও কুয়াকাটায় যাতায়াত সুবিধা উন্নত করার জন্য এর আশপাশে বিমানবন্দর নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। বিমানবন্দরের স্থান নির্ধারণের জন্য তথ্য চেয়ে ইতোমধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) চিঠি দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

বেবিচককে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘পায়রা বন্দর নগরী ও কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশ পর্যটনভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প এলাকায় বিমানবন্দরের স্থান চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে তথ্য প্রেরণের জন্য নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত বছর ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার সিদ্ধান্তের আলোকে এ তথ্য চাওয়া হয়। প্রকল্পটি সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিমানবন্দর স্থাপনের লোকেশন চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে তথ্য প্রেরণ করতে বলা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পর অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পায়রা বন্দরে মানুষের যাতায়াত অনেক বেড়েছে। দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে কুয়াকাটা অন্যতম। এখানে সড়কপথের যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হলেও আকাশপথের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিমানবন্দর হলে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে।

জানা গেছে, কুয়াকাটাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ বহু আগে শুরু হলেও মূলত ১৯৯৮ সাল থেকে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের জন্য বিখ্যাত কুয়াকাটা সৈকত ধীরে ধীরে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে। পর্যটকদের কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আবাসিক হোটেল, খাবার হোটেল। এ কারণে বেড়েছে প্রশাসনিক নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। সৈকতের কোলঘেঁষে রয়েছে বিশাল বনাঞ্চল।

সুন্দরবনের পূর্বাংশ ফাতরার বন, লেম্বুর বন, নারকেলবাগান, ঝাউবাগান, গঙ্গামতী ও কাউয়ার চরের সংরক্ষিত বনাঞ্চল অন্যতম। পর্যটকরা কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে আশপাশের পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি সমুদ্রের কোলঘেঁষা বনাঞ্চল ঘুরে ছবি তোলেন। কিন্তু আকাশপথের সুযোগ না থাকায় দেশ ও বিদেশের পর্যটকরা আসছেন না। ফলে বিশ্বব্যাপী কুয়াকাটা ও পায়রা বন্দরকে পরিচিত করার জন্য বিমানবন্দরের বিকল্প নেই। বিমানবন্দর হলে খুব সহজেই বিদেশিরা এখানে আসবে। সময় বাঁচাতে কিংবা প্রথম বিমানভ্রমণের স্বাদ পেতে আসা পর্যটকদের সংখ্যাও বাড়বে। ফলে কক্সবাজারের মতো এই অঞ্চলেরও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে। এসব বিবেচনায় নিয়ে পায়রা-কুয়াকাটা এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, পটুয়াখালী এবং বরগুনা জেলার ৭টি উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘পায়রা বন্দর নগরী ও কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশ পর্যটনভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন’ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন, জলবায়ুর প্রভাব, পরিবহন, পর্যটনসহ এসব বিষয় কেমন হওয়া উচিত তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে। পরিকল্পনা প্রণয়নে উপকূলীয় এলাকার উপযোগী অবকাঠামো, আবাসন, পর্যটন, জীবিকা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়া হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘পায়রা বন্দর নগরী ও কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশ পর্যটনভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন’ বাস্তবায়ন হলে পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে। এই অঞ্চলে বিমানবন্দরের জন্য জায়গা খুঁজতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়া গেছে। জায়গা নির্ধারণের জন্য প্রকল্প প্রস্তুতের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com