করোনাভাইরাসের অব্যাহত ঝুঁকির মধ্যেই পর্যটকদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় এই দেশ পর্যটকদের সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছে এখন। অর্থনৈতিক মন্দা সামলাতে বিকল্পও ছিল না কোনো। সিএনএন অবলম্বনে লিখেছেন পরাগ মাঝি
মহামারীর কারণে বিদেশিদের জন্য সীমান্ত বন্ধ রেখেছে সব দেশ। পৃথিবীর অনিন্দ্য সুন্দর ও আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকাগুলো তাই জনশূন্য পড়ে আছে। এই অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে মালদ্বীপ। মহামারী শেষ হওয়ার আগেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ এই দেশটি বিদেশি অতিথিদের জন্য তাদের দুয়ার খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
১৫ জুলাই থেকে বিদেশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে মালদ্বীপ। ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রে বিদেশিরা এখন খুব সহজেই ভ্রমণ করতে পারবেন কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর যে কোনো দেশের নাগরিককে এই মহামারীর কালেও মালদ্বীপে পা রেখে কোনো ধরনের কোয়ারেন্টাইনের মুখোমুখি হতে হবে না। রাজধানী মালেতে অবস্থিত দেশটির একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে পর্যটকদের কাছে করোনা নেগেটিভ সনদপত্রও চাইবে না কেউ। নতুন করে ভিসা আবেদন করারও প্রয়োজন পড়বে না। দিতে হবে না অতিরিক্ত কোনো ফি।
এক দ্বীপ, এক রিসোর্ট
পর্যটন উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় বিদেশি অতিথিরা কেবল দেশটির রিসোর্ট দ্বীপগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য তাদের একটি প্রাতিষ্ঠানিক ফর্মে নিবন্ধন করতে হবে। এই নিবন্ধনেই উল্লেখ থাকবে তারা কোথায় কতদিন অবস্থান করবেন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিদেশি পর্যটকদের এক বিশেষ অফার দিচ্ছে মালদ্বীপ কর্র্তৃপক্ষ। আর তা হচ্ছে একটি দ্বীপে একটিমাত্র রিসোর্ট। কোয়ারেন্টাইন হয়ে থাকার জন্য এ ধরনের বিচ্ছিন্ন রিসোর্ট দারুণ ভূমিকা রাখবে। মালদ্বীপের ছোট ছোট দ্বীপগুলোর এটি একটি দারুণ বৈশিষ্ট্য। দেশটির বেশির ভাগ দ্বীপেই মাত্র একটি করে রিসোর্ট রয়েছে।
দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের বিভিন্ন উপকূলে অন্তত ২৬টি প্রবালপ্রাচীর রয়েছে। আ আছে হাজারেরও বেশি দ্বীপ। প্রায় ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে এই দ্বীপগুলো ছড়িয়ে আছে। এসব দ্বীপ ধীরে ধীরে পর্যটন উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে একটি দ্বীপ রিসোর্টে থাকা কোনো অতিথি কিংবা কর্মী যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তবে খুব সহজেই তাদের শনাক্ত করা যাবে। আর দ্বীপগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য কভিড-১৯ ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম।
দীর্ঘ বিরতিতে থাকা পর্যটকরা মালদ্বীপ ভ্রমণের এমন সুযোগ লুফে নিতে পারে। তবে, মালদ্বীপ ভ্রমণ করে নিজ নিজ দেশে ফিরে হয়তো তাদের কোয়ারেন্টাইনের মুখোমুখি হতে হবে। এমনকি মালদ্বীপ ভ্রমণেও নাগরিকদের বাধাও দিতে পারে কোনো কোনো দেশ।
পর্যটক প্রতিষ্ঠান সোনেভা’র দুটি রিসোর্ট রয়েছে মালদ্বীপে। সোনেভা ফুশি ও সোনেভা জানি নামে ওই রিসোর্ট দুটি বেশ জনপ্রিয়। সনু শিবদাসানি জানান, মালদ্বীপ ভ্রমণ করার জন্য পর্যটকরা এখন মুখিয়ে আছেন। আর এর প্রমাণও পেয়েছেন তারা। শিবদাসানির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার আগস্ট মাসে সোনেভা ফুশি রিসোর্টটি যে হারে অগ্রিম বুকিং দেওয়া হয়েছে তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। যদি সবকিছু ঠিকঠাক চলে এবং বিদেশি পর্যটকরা যদি নিরাপদে মালদ্বীপে পৌঁছাতে পারেন তবে শিবদাসানির প্রতিষ্ঠানের জন্য এবারের আগস্ট হবে সবচেয়ে সেরা।
মালদ্বীপে যাবে কোন বিমান
বিশ্বজুড়ে বিমান চলাচলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলেও নানা হিসাব-নিকাশ করে দেখা গেছে বর্তমান পরিস্থিতিতেও আকাশপথে মালদ্বীপে পা রাখতে পারবে বেশ কিছু দেশের পর্যটক। আর এটা সম্ভব মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি বড় বড় বিমান সংস্থার মাধ্যমে। এসব বিমান সংস্থার মধ্যে অ্যামিরেটস এয়ারলাইনস অন্যতম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে এই সংস্থার বেশ কিছু বিমান এখন লন্ডন, শিকাগো, টরেন্টো ও সিডনির মতো বড় বড় শহরগুলোতে যাতায়াত করছে। তাই ওইসব দেশের নাগরিকদের জন্য এখন দুবাই আসা সহজ হয়ে গেছে। আর ১৫ জুলাই থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাদ বিমান সংস্থা মালদ্বীপে যাত্রী পরিবহন শুরু করেছে। ফলে পশ্চিমা বিশ্বের পর্যটকরা অ্যামিরেটস এয়ারলাইনসের মাধ্যমে দুবাই পৌঁছে সেখান থেকে ইতিহাদ এয়ারলাইনসের বিমানে করে মালদ্বীপ পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়া টার্কিশ এয়ারলাইনসও আজ (১৭ জুলাই) থেকে সীমিত আকারে আকাশপথে মালদ্বীপের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
আরেকটি ব্যাপার হলো- মালদ্বীপ কর্র্তৃপক্ষ পর্যটকদের কাছে করোনামুক্ত সার্টিফিকেট না চাইলেও বিমান সংস্থাগুলো এ ধরনের সার্টিফিকেট যাত্রীদের কাছে দাবি করতে পারে। তাই স্বাভাবিকভাবেই ভ্রমণের আগে আগে যাত্রীরা স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে করোনামুক্ত সার্টিফিকেট সংগ্রহ করবেন। মালদ্বীপে পৌঁছে পর্যটকদের কেবল একটি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ফর্ম পূরণ করতে হবে। পরে কর্র্তৃপক্ষ প্রত্যেককে সর্বোচ্চ ৩০ দিন মেয়াদের একটি টুরিস্ট ভিসা প্রদান করবে। এ সময় কোনো পর্যটকের শরীরে যদি কভিড-১৯ ভাইরাসের উপসর্গ থাকে তবে তাকে নিজ খরচে একটি পিসিআর পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এই উপায়ে কারও শরীরে করোনার উপস্থিতি দেখা গেলে তার জন্য আইসোলেশন ব্যবস্থা রেখেছে কর্র্তৃপক্ষ।
সব রিসোর্ট কি খুলবে
মালদ্বীপের বিভিন্ন দ্বীপে অন্তত ১৫৬টি বিলাসবহুল রিসোর্ট রয়েছে। গত ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ৪৩টি রিসোর্ট খুলে দেওয়া হয়েছে। এই ৪৩টির মধ্যে কয়েকটি আবার লকডাউনের পুরোটা সময়জুড়েই খোলা ছিল। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে কিছু সংখ্যক বিদেশি পর্যটক ওই রিসোর্টগুলোতেই থেকে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, মহামারী চলার সময়ও কিছু পর্যটক ব্যক্তিগত বিমান ও প্রমোদতরীতে করে মালদ্বীপ পৌঁছে রিসোর্টগুলোতে নিরাপদে অবস্থান করছেন।
জানা গেছে, আগস্টের মধ্যেই আরও কয়েক ডজন রিসোর্ট খুলে দেবে মালদ্বীপ কর্র্তৃপক্ষ। এই প্রক্রিয়াটি সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ফরাসি আতিথেয়তা ও সেবা গ্রুপ ‘অ্যাকর’-এর পাঁচটি রিসোর্ট রয়েছে মালদ্বীপে। আসন্ন মাসগুলোতে তাদের সবগুলো রিসোর্টই খুলে দেওয়া হবে। অ্যাকর-এর মালদ্বীপ শাখার এরিয়া জেনারেল ম্যানেজার জন বেডসেন জানান, ১ আগস্টের মধ্যেই তাদের মার্কারি মালদ্বীভস কুড্ডো রিসোর্ট খুলে দেওয়া হবে। পরে সেপ্টেম্বরে খুলে দেওয়া হবে তাদের পুলম্যান মালদ্বীভস মামুতা রিসোর্ট। অক্টোবরের মধ্যে তাদের বাকি তিনটি রিসোর্টও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হবে।
বেডসেন বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতার মাঝেও পর্যটকরা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন। ভ্রমণ করার জন্য এখন তারা সত্যিকারের ক্ষুধার্ত। বছরের শেষ তিন মাসে ক্রিসমাস ও নববর্ষকে সামনে রেখে আগামী বছরের প্রথম তিন মাসে বিপুল সংখ্যক পর্যটক সমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরেকটি ব্যাপার হলো- যেসব পর্যটক ইতিপূর্বে মালদ্বীপ ভ্রমণ করেছেন তাদের একটি বড় সংখ্যা আবারও দেশটিতে সময় কাটানোর আগ্রহ দেখাচ্ছে। চলতি বছরের শেষ তিন মাসের বুকিং অনুযায়ী এ ধরনের পর্যটকের সংখ্যাই বেশি।
স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার দিক বিবেচনায় রেখে ‘নিরাপদ পর্যটন লাইসেন্স’ প্রদান করছে মালদ্বীপ সরকার। এর মধ্য দিয়ে আইনগতভাবে অতিথিদের নিরাপত্তা প্রদান, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে।
কিছু কিছু রিসোর্ট অতিথি ও কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাড়তি পদক্ষেপও নিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ সোনেভা নামের সংস্থাটির কথাই ধরা যাক। এ সংস্থাটির ব্যক্তিগত এয়ারপোর্টও রয়েছে। তাদের দুটি রিসোর্টে যেসব অতিথি অবস্থান করবেন প্রত্যেককেই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে কভিড-১৯-এর পরীক্ষা করা হবে। মালদ্বীপে পৌঁছার পর পরই নিজস্ব ব্যবস্থায় অতিথিদের রিসোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের রিসোর্টের ভেতরেই অবস্থান করতে বলা হবে। এক্ষেত্রে যদি কোনো অতিথির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি দেখা যায় তাহলে তাদের রিসোর্টের ভেতরেই আইসোলেশনে থাকতে বলা হবে। পরে প্রশিক্ষিত নার্সরা তাদের সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার প্রয়াস চালাবেন। আর যারা সুস্থ আছেন তারাও চাইলে কভিড-১৯-এর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
সোনেভা’র প্রধান নির্বাহী পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা সনু শিবদাসানি বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম দেখে কিছুটা বাড়তি সতর্কতা মনে হতে পারে। আমাদের প্রত্যেকটি রিসোর্ট পুরো দ্বীপজুড়ে। আমাদের এখানে আসা অতিথিরা যেন কভিড-১৯ মুক্ত পরিবেশে স্বচ্ছন্দে থাকতে পারেন এটাই আমাদের লক্ষ্য। অতিথিরা যেন সত্যি সত্যিই আরামদায়ক অবকাশ যাপন করতে পারেন এবং তারা যেন কোনোক্রমেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হন সেদিকে আমাদের নিিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।’
শিবদাসানি জানান, তাদের দুটি রিসোর্টই মহামারীর সময়ও খোলা ছিল এবং এই রিসোর্টগুলোতে মার্কিন কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিভাগের নির্দেশিত নিয়মাবলি অনুসরণ করা ছাড়াও অভিজ্ঞ ভাইরাস বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে রিসোর্টগুলোতে বাড়তি পরিচ্ছন্নতা অভিযানসহ নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি করা হয়েছে।
যে সুবিধা পাবে মালদ্বীপ
দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৩১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর এতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৪ জন। মহামারীর জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ফলে পর্যটন খাতে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মধ্যে মালদ্বীপ অন্যতম। যে সময়টিতে দেশটির পর্যটন খাত ফুলে-ফেঁপে ওঠার কথা সেই সময়টিতে এ ধরনের পরিস্থিতি দেশটিকে মারাত্মক বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটির জিডিপি’র দুই-তৃতীয়াংশই পর্যটন খাত থেকে আসে।
২০১৯ সালে মালদ্বীপের পর্যটন সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মতো। কারণ বিশেষ এই বছরটিতে সেখানে বিদেশি পর্যটক সমাগমের সংখ্যা ১৪.৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। সেবার প্রায় ১৭ লাখ পর্যটক দেশটিতে ভ্রমণ করেছে। কর্র্তৃপক্ষ আশা করেছিল, চলতি বছরে দেশটিতে বিদেশি পর্যটক সমাগমের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু করোনাভাইরাস সব ওলট-পালট করে দিয়েছে।
পর্যটন খাতে করোনাভাইরাসের প্রভাব বর্ণনা করে গত মে মাসে দেশটির পর্যটনমন্ত্রী আলি ওয়াহিদ বলেন, ‘২০০৪ সালের ভয়ংকর সুনামি ও ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দার চেয়েও এবার আমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
আলি ওয়াহিদ আরও বলেন, ‘পর্যটন খাতে মালদ্বীপের ৪৭ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম দেশে অতিথি সমাগমের সংখ্যা একেবারে শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছে। তাই আমরা আর বেশিদিন আমাদের সীমান্ত বন্ধ করে রাখতে পারব না।’
সিএনএন ট্র্যাভেলকে দেওয়া এক ইমেইল বার্তায় বিশ্বজুড়ে পর্যটন বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘হরওয়াত এইচটিএল’-এর সিঙ্গাপুর পরিচালক ইউনিস আও বলেন, মালদ্বীপের কর্র্তৃপক্ষ প্রমাণ করেছে যে, তাদের পর্যটন খাত এখনো প্রাণোচ্ছল। সাম্প্রতিক সংকট থেকে তারা শিগগিরই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে। তবে, সীমান্ত খুলে দেওয়ার ঝুঁকি দেশটিতে ভ্রমণকারী ব্যক্তিদেরও কিছুটা নিতে হবে।’
ইউনিস আও আরও বলেন, ‘সীমান্ত খুলে দিলেও নজিরবিহীন করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য দেশটিতে যে খুব বেশি বিদেশির সমাগম হবে না তা নিশ্চিত। বছর শেষে দেখা যাবে, দেশটিতে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার পর্যটকের সংখ্যা ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।’
এদিকে, মালদ্বীপে যে সংখ্যক বিদেশি পর্যটক সমাগম হয় তার ১৭ ভাগ আসে চীন থেকে, ১০ শতাংশ ভারত, ৪৯ শতাংশ ইউরোপ ও ৩ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এসব দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস মারাত্মক আঘাত হেনেছে। এমনকি এই দেশগুলো ভাইরাসটির দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার আশঙ্কায় রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়বে মালদ্বীপের অতিথি সমাগমে। এছাড়া প্রধান বাজার ইউরোপ থেকে কোনো পর্যটক মালদ্বীপ পৌঁছাতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা আকাশে উড়তে হয়। ফলে তাদের অধিকাংশই এই দুঃসময়ে বেশি দূরত্বের ভ্রমণের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বকেই বেছে নেবে।
তবে এটা ঠিক যে, সবার আগে পর্যটনের দুয়ার খুলে দেওয়ার কিছুটা সুবিধা মালদ্বীপ পাবে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এই মুহূর্তে যেহেতু মালদ্বীপ ছাড়া সহজ কোনো গন্তব্য নেই।
সুত্র দেশ রুপান্তুর