বিখ্যাত আবিষ্কারক ভাস্কো দ্য গামার সমাধিস্থল এই লিসবনেই অবস্থিত। জেরোমাস মোনেস্ট্রার নামক এক গির্জায় এটির অবস্থান। ভাস্কো দ্য গামা এখান থেকেই যাত্রা শুরু করে ভারতবর্ষ আবিষ্কার করেন এবং একে স্মরণীয় করে রাখতেই এই স্থাপত্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বলা হয়ে থাকে , জেরোমাস মোনাস্ট্রার পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর এক গির্জা । অসংখ্য পর্যটক ষোড়শ শতকের এই সমাধিস্থল দেখতে ভিড় জমান।
এছাড়াও রাজপ্রাসাদ ক্যাসটোলো ডে সাও জর্জ পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। এটি লিসবন শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। এখান থেকেও পুরো শহরকে ৩৬০ ডিগ্রিতে দেখা যায়। এখানের জাদুঘর, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার যে কারো ভ্রমণ অভিজ্ঞতায় এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। টাগুশ নদীর সৌন্দর্যের পাশাপাশি আটলান্টিক অসীম নীল জলরাশি এখান থেকেই দেখা যায়।
টাগুশ নদীর মাঝে গড়ে ওঠা বেলেম টাওয়ার লিসবনের অন্যতম সেরা এক স্থাপত্যকর্ম। বেলেমে অবস্থিত এই টাওয়ারটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্বীকৃত-প্রাপ্ত। সমুদ্রগামী নৌযান পর্যবেক্ষণের জন্য এটি নির্মাণ করা হয়েছিলো ১৫শ’ শতাব্দীতে। পর্যটক আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে এটি অন্যতম সেরা এক নিদর্শন।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ একুরিয়াম হচ্ছে লিসবন ওশেনারিয়াম। ১৯৯৮ সালে নির্মিত এই একুরিয়ামটিতে রয়েছে অসংখ্য জীব বৈচিত্র। পাঁচ মহাসাগরে জীব বৈচিত্র্যের সমাহার এই কৃত্রিম অভয়ারণ্যে। ঠিক এর পাশেই রয়েছে ভাস্কো দ্য গামা ব্রিজ যা ইউরোপের সবচেয়ে বড় । এটি ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণের জায়গা এই ওশেনারিয়াম এবং ব্রিজটি। লিসবনের সবচেয়ে প্রাচীন এবং পুরনো এলাকাটি হচ্ছে আলফামা।
এটি অনেক ভূমিকম্প জলোচ্ছ্বাস এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও টিকে আছে। প্রাচীন সরু রাস্তা, পুরনো জনপদ এবং প্রাচীন সৌন্দর্য দেখার জন্য অনেক পর্যটক এখানে ভ্রমণ করেন। এছাড়াও ‘ট্রাম ২৮’ সার্ভিসের মাধ্যমে লিসবনের ৫টি পাহাড় এবং আলফামা ভ্রমণ করা যায়। সিটি সেন্টারে অবস্থিত এলিভেটর দি সান্টা জুস্টা। এর নকশাকারক হচ্ছেন প্রখ্যাত আইফেল টাওয়ারের নকশাকারক। এখান থেকেও ৩৬০ ডিগ্রিতে শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
এটিও টুরিস্টদের জন্য অন্যতম আকর্ষণের জায়গা। নান্দনিক সৌন্দর্যের এই লিসবন শহরটি ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য যেন তীর্থভূমি। শিল্পী এবং লেখকদের এক মিলনস্থল এটিই। শহরটিকে অনেকে রোমান্টিক শহর হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। হাজার হাজার বছরের পুরনো এই শহর আপনার ভ্রমণ জীবনের এক নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।