বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
Uncategorized

পরিবহন ছেড়ে পর্যটন এখন শিল্পে যুক্ত হলো

  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বাজেট প্রণয়নের সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কাজে সামঞ্জস্য আনতে খাত পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।

আনোয়ার উদ্দিন, যুগ্ম সচিব, পরিকল্পনা কমিশন

পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, পর্যটন খাতে প্রতিবছর কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে তুলনা করতে যেন সুবিধা হয়, সে জন্য পর্যটন খাতের বরাদ্দ শিল্প খাতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

একইভাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ও প্রকল্পগুলো এত বছর পরিবহন খাতে যোগ হয়েছে। এখানেও পরিবহনের সঙ্গে কর্মসংস্থানের কোনো সম্পর্ক না থাকায় বরাদ্দের ধরন সংশোধন করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ও প্রকল্প এ বছর থেকে শিল্প খাতে যোগ হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সূত্রে আরও জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ করা টাকা এত দিন যোগ হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা ও গৃহায়ণ খাতে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ও বরাদ্দ যোগ হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা খাতে। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ভৌত পরিকল্পনার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। সে কারণে এটি পরিবর্তন করে সামাজিক সুরক্ষা খাতে যোগ করা হয়েছে।

কিন্তু কেন এত পুনর্বিন্যাস? এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এত বছর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সরকারের উন্নয়ন বাজেট তথা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) টাকা বরাদ্দ দিত ১৭টি খাতের ভিত্তিতে। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট তৈরি করে আসছে ১৪টি খাতে। আর পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করে আসছে ১৩টি খাতের ভিত্তিতে। সরকারের তিন দপ্তর তিনভাবে বাজেট প্রণয়ন করার কারণে তথ্যের নানা গরমিল থেকে যায় প্রতিবছর। এতে সঠিক তথ্য উঠে আসে না। সরকারের অর্থ, পরিকল্পনা ও জিইডির মধ্যে বাজেট তৈরিতে সামঞ্জস্য আনতেই সরকার খাত পুনর্বিন্যাসের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করেছে।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সংশোধিত খাত পুনর্বিন্যাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের যুগ্ম সচিব আনোয়ার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বাজেট প্রণয়নের সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কাজে সামঞ্জস্য আনতে খাত পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এখন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সমানভাবে ১৫টি খাতের ওপর ভিত্তি করে উন্নয়ন বাজেট তৈরি করবে। আর জিইডিকেও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরির সময়ও ১৫ খাতের ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা করতে হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য বলছে, এত বছর উন্নয়ন বাজেটে বিদ্যুৎ আলাদা এবং তেল-গ্যাসের জন্যও প্রাকৃতিক সম্পদ নামে আলাদা খাতে বরাদ্দ রাখা হতো। অথচ দুটি খাতের কাজের ধরন একই। কিন্তু বাজেট তৈরি হতো আলাদা করে। এই দুটি খাতকে একীভূত করা হয়েছে।

অন্যদিকে বাজেটে এত বছর পরিবহন ও যোগাযোগকে আলাদা খাত হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ দুটি খাতের কাজের ধরন একই। সে জন্য চলতি বছর থেকে দুটি খাতকে একীভূত করা হয়েছে।

এখন থেকে ১৫ খাতে বরাদ্দ

সব মিলিয়ে উন্নয়ন বাজেটের অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে চলতি বছর থেকে উন্নয়ন বাজেট তথা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫টি খাত ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। খাতগুলো হচ্ছে কৃষি; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ; শিল্প ও সেবা; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি; পরিবহন ও যোগাযোগ; গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধা; প্রতিরক্ষা; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষা; শিক্ষা; ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদন; স্বাস্থ্য; সামাজিক সুরক্ষা; সাধারণ সরকারি সেবা এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য বলছে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপির আকার ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এই টাকা ১৫টি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com