রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

নৌকাভ্রমণের সময় এখন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

চলছে শরৎ ঋতু। দেশের সব নদ-নদীতে বেড়েছে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ। দূষণ নেই বললেই চলে। পানি বেশি থাকলেও স্রোত খুব একটা নেই। নদীপথে ভ্রমণে অপরিচিত এক বাংলাদেশের দেখা পাওয়া যায়। দূরে যেতে না পারলেও বাড়ির পাশের নদীটিতে ঘুরতে যেতে পারেন।

বাংলাদেশ নদীমাতৃক হওয়ায় নৌকাভ্রমণ এ দেশে বেশ জনপ্রিয়। রাজধানী ঢাকার পাশের জেলা মানিকগঞ্জকে বলা চলে নদীবেষ্টিত এলাকা। শরতের এই সময়ে সেই সব নদী এখন শান্ত। যান্ত্রিক সময়কে পাশ কাটিয়ে কালীগঙ্গা আর ধলেশ্বরীতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর দারুণ সময় এখন।

ভ্রমণের জন্য নদী এক আশ্চর্য জায়গা। প্রায় দূষণমুক্ত নদীর বাতাস। স্রোতেরও এক সম্মোহনী শক্তি আছে। সব মানসিক জড়তা নিমেষে দূর করতে পারে নদী। তার ওপর এখন দেখা মিলবে কাশফুল, সাঁতরে বেড়ানো হাঁস-পানকৌড়ির দল আর ছুটে চলা মাছরাঙা। দুপাশের সবুজ আচ্ছাদিত ছবির মতো সাজানো গ্রাম। কর্মচঞ্চল গ্রামীণজীবন। স্থানীয় জেলেদের ধরা নদীর টাটকা মাছও কেনা যাবে চাইলে।

নৌকাভাড়া
ইঞ্জিনচালিত ছাদওয়ালা ট্রলার, ছাদ ছাড়া ট্রলার, ছোট নৌকায় ঘুরে বেড়ানো যাবে এখানে। মানিকগঞ্জ শহরের বেউথা অথবা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের তরা বাসস্ট্যান্ডে নেমে একটু এগোলেই দেখতে পাবেন নদীর ঘাটে সারি সারি নৌকা। দরদাম করে উঠতে হবে সেসব নৌকায়। সাধারণত একটি ট্রলার তিন ঘণ্টার জন্য দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা ভাড়া নেয়। আর লোকসংখ্যা বেশি হলে সারা দিন ঘুরতে নৌকাভাড়া পড়বে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভিড় বেশি থাকে।

কী দেখবেন
তরায় কালীগঙ্গা নদীতে নৌকায় চড়ার পর ঘিওরে পাবেন ধলেশ্বরী নদী। কালীগঙ্গা থেকে চলে যাবেন ধলেশ্বরীতে। কালীগঙ্গা ধরে এগোতেই চোখে পড়বে আকাশ-জলে এক মোহনীয় মায়াবী দৃশ্য। উদাসী বাতাসের সঙ্গে সন্ধি করে নদীতে চলছে পালতোলা নৌকা। দেখা যাবে শরতের কাশফুলের অপরূপ বিন্যাস। মোবাইল ফোনের গ্যালারি ভরে উঠবে সেসব ছবিতে। নদীতে নামলেই দেখতে পাবেন অসংখ্য ছোট চর। সেখানে বসেছে পিকনিক পার্টি। চলছে রান্নাবান্না আর খাওয়াদাওয়া। নিজেরা রান্নাবান্না করতে চাইলে তেমন কোনো চরে নেমে যেতে পারেন। নইলে নদীতীরের তরা, বেউথা, জাবরা, আশাপুর, ঘিওর এলাকার স্থানীয় রেস্তোরাঁয় খেতে হবে। এসব রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার পার্সেল করেও নেওয়া যায়। এ ছাড়া নৌকার মাঝিদের বললে তাঁরাই হালকা নাশতার ব্যবস্থা করে দেবেন।

আমাদের গ্রামগুলো এখন আর শরৎচন্দ্রের উপন্যাসের গ্রামের মতো নেই। গ্রামের কাঠামো কি খুব বেশি বদলেছে? কালীগঙ্গা নদীতীরের গ্রাম উত্তরপাড়া, বাটরাকান্দি, আশাপুর, নালি, বালিয়াখোড়া, পেঁচারকান্দা, জাবরা, তরা, মির্জাপুর, সিংজুরী, নকীববাড়ি এলাকায় চোখে পড়ে শরতের সাজে প্রকৃতির রূপ মায়া। নদীতীরের অপেক্ষাকৃত নিচু আবাদি জমির বিস্তীর্ণ চকে দেখা মিলবে কিশোর-কিশোরীদের ডিঙিতে বসে শাপলা তোলার দৃশ্য। ছোট ছোট পাখির বেপরোয়া দাপাদাপি ও কলতানে মুখর হয়ে থাকা বাঁশবনও চোখে পড়বে। আর কোথাও দেখা যাবে ধ্যানী মাছশিকারিদের। মেঘের আনাগোনা আর রোদের ঝিলিক দেখা যাবে প্রায় পুরোটা সময়। নদীতে গ্রাম্য বধূদের গোসল শেষে কলসভর্তি পানি নিয়ে ফিরে যাওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়বে কোথাও কোথাও। দেখা যাবে প্রায় প্রতিটি বাড়ির ঘাটে বাঁধা নৌকা।

যেভাবে যাবেন
গুলিস্তান বা গাবতলী থেকে সরাসরি মানিকগঞ্জের বেউথা কিংবা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের তরায় চলে যাওয়া যায়। বাসভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। তরায় নেমে সেখান থেকে নৌকা নিতে হবে ঘণ্টাচুক্তি হিসেবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com