বাংলাদেশ থেকে নেপালে কোন প্রি-ভিসা নিয়ে যেতে হয়না, সার্ক ভুক্ত দেশ থেকে নেপালে অন এরাইভাল ( অর্থাৎ তাৎক্ষণিক ) ভিসা দেয়া হয়। তবে বাংলাদেশ থেকে নেপালের এমব্যাসিতে একটি ফর্ম পূরণ করে পাসপোর্ট জমা দিয়ে পরের দিন ভিসা সহ নেয়া যায় অথবা সরাসরি নেপালের ত্রিভুবন বিমান বন্দরে হাজির হয়ে একটি ফর্ম পূরণ করে ভিসা’র আবেদন করে ভিসা নেয়া যায় তাৎক্ষণিক ভাবে।
সড়ক পথে অর্থাৎ ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ভারতের কাকারভিটা পোর্ট দিয়ে নেপাল যেতে হলে নেপাল এমব্যাসি থেকে প্রি-ভিসা নেয়ে নেয়া নিবেন এবং ভারতের ট্রানজিট ভিসা থাকলেই তবে স্থলপথে নেপালে প্রবেশের প্রি ভিসা দেয়া হয়, অবশ্য অনেকেই ভারতের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দিয়েও কাকারভিটা দিয়ে পার হয়ে যান কিন্ত সেটি নিশ্চিত কিছু না এবং অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
সড়কপথে বাংলাদেশের বুড়িমাড়ি হয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা পোর্ট দিয়ে বের হয়ে শিলিগুড়ি হয়ে কাকারভিটা / রানীগঞ্জ পোর্টে দিয়ে নেপালে যেতে হয়। সুতরাং ভারতের ট্রানজিট ভিসা এপ্লাই করার সময় পোর্ট সঠিক ভাবে উল্লেখ করবেন। এখন ( অগাস্ট ২০১৫ ) ট্রানজিট ভিসার জন্য ভারতের এম্ব্যাসি থেকে কোন ই-টোকেন নিতে হয় না, সরাসরি ফর্ম পূরণ করে প্রিন্ট করে এম্ব্যাসিতে জমা দিলেই হয়, তবে ট্রানজিট ভিসার ক্ষেত্রে শ্যামলি বাস পরিবহনে রিটার্ন টিকিট দেখাতে হয়, অর্থাৎ ই-টোকেন না লাগলেও সেই ৩০০০/- টাকা লাগছেই শ্যামলির রিটার্ন টিকিটের জন্য, ভালো ব্যাপার হচ্ছে এটি আপনার বাস ভাড়া হিসেবে কাজে লাগছে।
অনেকে আবার নতুন সমস্যায় পরছেন। ভারতীয় হাই কমিশনে গেলে ওরা বলে আগে নেপালি ভিসা নিয়ে আসেন আর নেপালি এমব্যাসি তে গেলে তারা বলে আগে ভারতীয় ভিসা নিয়ে আসেন। ব্যাপারটা বেশ জটিল হয়ে যাচ্ছে।
বিমানে বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানে করে নেপালে গেলে বিমান উড্ডয়নের পর পরই বিমানের স্টুয়ার্ড সবাইকে নেপালের অন এরাইভাল ভিসা’র একটি ফর্ম আর ডিপারচার কার্ড ফ্রি দেয়, খাবার দেবার ঠিক পরেই এই দুটি কাগজ দেয়া হয় সবাই কে। তাই সাথে একটি কলম থাকা খুব জরুরি। ফর্ম টা অনেকটা হুবহু নিচের ফর্মের মত এবং একই জিনিস। যদি কেউ নিচের ফর্মটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে হাতে পূরণ করে সাথে নিয়ে যান তাহলেও হবে আর না হলে ত বিমান থেকে দিচ্ছেই। মনে রাখবেন ডিপারচার কার্ডের দুটো অংশ আছে, একটি অংশ যাবার সময় আর একটি অংশ নেপাল থেকে বাংলাদেশে আসার সময় লাগবে। তাই পরের অংশটিও পূরণ করে যত্ন করে সাথে রেখে দিন এবং ফেরার সময় ইমিগ্রেশানে জমা দিতে পারবেন ঝামেলা ছাড়া।
নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুর ত্রিভুবন বিমান বন্দরে আসার পরে অনেক অনেক ট্যুরিস্টের ভিসার লাইন দেখে ঘাবড়ে যাবেন না, ভিসা ডেস্কের একদম পশ্চিমে শেষের মাথায় গ্রেটিস ভিসা (Gratis Visa) এর একটি কাউন্টার আছে , যা যে কোন গার্ড বা অফিশিয়াল কে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে। গ্রেটিস ভিসার লাইনে গিয়ে যতদিন থাকবেন তার দিগুণ, অন্তত একমাসের কথা বলে তত দিনের ভিসা নিয়ে নিবেন।
সার্ক ভুক্ত দেশ তথা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রথম এক বছরে একবার নেপালে গেলে ( ভিসার আবেদন করলে ) তা বিনামূল্যে দেয়া হয় কিন্ত সেই একই বছরে যদি পুনরায় (একের অধিক বার) ভিসা নেবার ক্ষেত্রে
১। এক বছরের ভিতরে পুনরায় ১৫ দিন মাল্টিপল ভিসা – ২২০০ টাকা
২। এক বছরের ভিতরে পুনরায় ৩০ দিন মাল্টিপল ভিসা – ৩৫০০ টাকা
৩। এক বছরের ভিতরে পুনরায় ৯০ দিন মাল্টিপল ভিসা – ৯০০০ টাকা
প্রথমবার ফ্রি ভিসার ক্ষেতে নেপালের বিমান বন্দরে একটি আবেদন পত্র লিখে জমা দিতে হয় , আবেদন পত্র গুলো .doc / .docx / .pdf ফরম্যাটে নিচে লিঙ্ক দেয়া হল। এগুলো ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিয়ে একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগিয়ে ফর্ম পূরণ করে তারপরে নেপাল রওনা দেয়া উচিত, নাহলে নেপাল এয়ারপোর্টে বসে এগুলো যোগার এবং পূরণ করার ঝক্কি থেকেই যাচ্ছে ।